মাকির্ন সিনেটে অচলাবস্থা নিরসনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত

ম প্রস্তাবিত বিল দুটি খারিজ হয়ে যাওয়ায় সংকট নিরসনের সম্ভাবনা ¤øান হয়ে গেল ম ৫০-৪৭ ভোটে প্রত্যাখ্যাত হয় রিপাবলিকান বিল আর ডেমোক্র্যাট বিলটি ৫২-৪৪ ভোটে

প্রকাশ | ২৬ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা আংশিক অচলাবস্থা নিরসনে বৃহস্পতিবার মাকির্ন সিনেটে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের উত্থাপিত দুটি প্রস্তাবই খারিজ হয়ে যাওয়ায় শিগগিরই সংকট কাটছে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে Ñরয়টাসর্
যুক্তরাষ্ট্রে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা আংশিক অচলাবস্থা (শাটডাউন) নিরসনে বৃহস্পতিবার মাকির্ন সিনেটে উত্থাপিত দুটি প্রস্তাবই খারিজ হয়ে গেছে। এদিন ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের পক্ষ থেকে আলাদা করে প্রস্তাব দুটি উত্থাপিত হয়েছিল। ৫০-৪৭ ভোটে প্রত্যাখ্যাত হয় রিপাবলিকান বিল। আর ডেমোক্র্যাট দলীয় বিলটি প্রত্যাখ্যাত হয়েছে ৫২-৪৪ ভোটে। পাস করানোর জন্য প্রত্যেকটি প্রস্তাবের পক্ষে অন্তত ৬০টি করে ভোট থাকতে হতো। বিল দুটি খারিজ হয়ে যাওয়ায় সহসা অচলাবস্থা নিরসনের সম্ভাবনাও ¤øান হয়ে গেল। সংবাদসূত্র : রয়টাসর্ মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নিমাের্ণ বরাদ্দ অনুমোদনের প্রশ্নে ট্রাম্পের সঙ্গে ডেমোক্র্যাটদের সমঝোতা না হওয়ায় এক মাসেরও বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্র সরকারে চলছে আংশিক শাটডাউন। দেশটির ৮ লাখ সরকারি কমীের্ক ঘরে থাকতে কিংবা বেতন ছাড়া কাজ করতে বলা হয়েছে। তারপরও দেয়াল নিমাের্ণর প্রশ্নে অনড় অবস্থানে রয়েছেন ট্রাম্প। এ অবস্থায় পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার সিনেটে দুইটি বিল উত্থাপন করতে সম্মত হয়েছিল ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানরা। রিপাবলিকানদের উত্থাপিত বিলে সেপ্টেম্বর পযর্ন্ত যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সব শাখায় অথর্ বরাদ্দ দেয়ার প্রস্তাব করা হয়। সীমান্ত দেয়াল নিমার্ণ ও অভিবাসন নীতি সংক্রান্ত ট্রাম্পের প্রস্তাব বাস্তবায়নে অথর্ বরাদ্দের কথাও বলা হয় ওই প্রস্তাবে। আর ডেমোক্র্যাটদের বিলে সরকারকে ৮ ফেব্রæয়ারি পযর্ন্ত অস্থায়ী বরাদ্দের প্রস্তাব দেয়া হয়। সীমান্ত নিরাপত্তা ও অভিবাসন নিয়ে পালাের্মন্টে বিতকের্র সুযোগ তৈরি করতে এ অস্থায়ী বরাদ্দ দেয়া হবে বলে জানানো হয়। ছয় রিপাবলিকান নিজেদের দলের অবস্থানের বাইরে এসে ডেমোক্র্যাট বিলকে সমথর্ন দিয়েছেন। আবার এক ডেমোক্র্যাট দলীয় সিনেটর রিপাবলিকান বিলকে সমথর্ন দিয়েছেন। এদিকে সীমান্ত দেয়াল নিমাের্ণর ব্যাপারে অনড় অবস্থানে রয়েছেন ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, সীমান্ত দেয়াল নিমাের্ণ বরাদ্দ না রাখা হলে তিনি কোনো বিলে স্বাক্ষর করবেন না। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান মোতাবেক, কোনো বিলকে আইনে পরিণত করতে হলে সেটিতে অবশ্যই প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষর লাগবে। আর সীমান্ত দেয়াল নিমাের্ণ ট্রাম্পকে বরাদ্দ দিতে কোনো অবস্থাতেই রাজি নয় ডেমোক্র্যাটরা। এমন অবস্থায় আংশিক অচলাবস্থা নিরসনের বিষয়টি অনিশ্চয়তার মুখে রয়েছে। উল্লেখ্য, মাকির্ন অথর্বছর শুরু হয় ১ অক্টোবর। তার আগেই বাজেট অনুমোদন করিয়ে নেয়ার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকলেও সমঝোতার অভাবে কখনও কখনও মাকির্ন কংগ্রেস তা পাস করাতে ব্যথর্ হয়। এমন অবস্থায় অস্থায়ী বাজেট বরাদ্দের মধ্য দিয়ে সরকার পরিচালনার তহবিল জোগান দেয়া হয়। অস্থায়ী এই বাজেট বরাদ্দের ক্ষেত্রে দুই কক্ষের অনুমোদনসহ প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষরের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর পযর্ন্ত যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের তিন চতুথার্ংশ কাযর্ক্রম পরিচালনার অথর্ বরাদ্দ করা আছে। বাকি এক চতুথার্ংশের বাজেট ফুরিয়ে যাওয়ায় অচলাবস্থা ঠেকাতে গত ২১ ডিসেম্বর নতুন অস্থায়ী বাজেট বরাদ্দ ছিল অপরিহাযর্। তবে মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নিমাের্ণর বরাদ্দ প্রশ্নে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় সৃষ্টি হয় ‘অচলাবস্থা’। বরাদ্দ কম পড়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ১৫টি কেন্দ্রীয় দপ্তরের মধ্যে ৯টিতে তখন থেকে আংশিক শাটডাউন চলছে। সীমান্তে দেয়াল নিমাের্ণ মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাহিদা অনুযায়ী ৫৭০ কোটি ডলার বরাদ্দ না দেয়াকে কেন্দ্র করে ৩২ দিন ধরে চলা অচলাবস্থার কারণে ওয়াশিংটনের ১৭টি স্মিথসনিয়ান জাদুঘর বন্ধ রয়েছে; পযর্টকদের জন্য বন্ধ হোয়াইট হাউসের দরজাও। ন্যাশনাল মলের আউটডোর মন্যুমেন্টে প্রবেশাধিকার থাকলেও ন্যাশনাল পাকর্ সাভিের্সর কমীর্ সংকটের কারণে সেখানকার উপচে পড়া ময়লার জঞ্জাল সরাতে না পারায় সেটিও আকষর্ণ হারিয়েছে। ভ্যানে চড়িয়ে ও হেঁটে শহর দেখানো ওয়াশিংটন ডিসি লিজেন্ড ট্যুর কোম্পানির মালিক ইয়োহানেস জেকেলে জানিয়েছেন, কয়েকদিন হয়ে গেল তিনি পযর্টকদের কাছ থেকে ট্যুর বুকিংয়ের ফোন পাচ্ছেন না। রাজধানীতে বিভিন্ন সম্মেলনে আসা পেশাদার ব্যক্তি ও লবিস্টদেরও প্রায়ই শহর ঘুরিয়ে দেখাতেন জেকেলে; অচলাবস্থায় অনেক সরকারি সংস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সে ধরনের ট্যুরিস্টরাও আর এ পথ মাড়াচ্ছেন না। এর বড় ধরনের প্রভাব পড়বে, বলেন এ ট্যুর কোম্পানির মালিক। চার সপ্তাহ ধরে চলা এ অচলাবস্থা সব পযর্টককেই রাজধানী থেকে দূরে রেখেছে এমনটা বলা যাবে না; তবে যারা এসেছে তাদের অনেকেই বেশ হতাশ। এদেরই একজন শারমেন হুইটার। ইংল্যান্ডের বামির্ংহাম থেকে আসা ৩৮ বছর বয়সী এ শিক্ষক তীব্র শীতেও এক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে হোয়াইট হাউসের বাইরে দঁাড়িয়ে ছবি তুলেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইস্ট কোস্টের বিভিন্ন শহরে ঘুরে বেড়ানো এ নারীর শেষ স্টপেজই ছিল ওয়াশিংটন; তার চার সপ্তাহের এ সফরের পরিকল্পনা হয়েছিল অচলাবস্থা নিয়ে আলোচনা শুরুরও বেশ আগে। ব্রিটিশ এ নারী তার ভ্রমণপবের্ বিভিন্ন দশর্নীয় স্থান দেখার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হওয়ার দায় দিয়েছেন মাকির্ন প্রেসিডেন্টকে। সারাজীবনে এ ধরনের সুযোগ একবারই আসে। তিনি আমাদের আমেরিকা থেকে অভিজ্ঞতা নেয়ার সুযোগ কমিয়ে দিয়েছেন। তার নিজের পছন্দের কারণে তিনি বাকি বিশ্বের অন্যদের পছন্দকে অনেকটাই গুড়িয়ে দিয়েছেন, বলেছেন শারমেন।