ব্রেক্সিট সংকটে যুক্তরাজ্যে সন্ত্রাসবাদ বাড়ার আশঙ্কা

প্রকাশ | ২৬ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ব্রেক্সিট নিয়ে টানাপোড়েন ও অস্থিরতা চলছে ব্রিটেনের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে দেশটির সম্পকর্ ছিন্ন করার ইস্যুতে যে সংকট চলমান রয়েছে, তার কারণে দেশটিতে উগ্র ডানপন্থার উত্থানের আশঙ্কা করা হচ্ছে Ñএপি
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পকর্ ছিন্ন করার ইস্যুতে (ব্রেক্সিট) যে সংকট চলমান রয়েছে, তার কারণে দেশটিতে উগ্র ডানপন্থার উত্থানের আশঙ্কা করা হচ্ছে। ২৯ মাচর্ ব্রেক্সিটের তারিখ নিধাির্রত থাকলেও পরবতীর্ সম্পকের্র রূপরেখা নিয়ে টানাপোড়েন ও অস্থিরতা চলছে ব্রিটেনের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে। মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম প্রধান নিল বসু জানিয়েছেন, এমন পরিস্থিতিতে সেখানে উগ্র ডানপন্থার উত্থান ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। বিশেষ অভিযান বিষয়ক এই প্রধান সহকারী কমিশনার বলেছেন, এ সংক্রান্ত সুনিদির্ষ্ট গোয়েন্দা তথ্য না থাকলেও তাদের আশঙ্কা, ব্রেক্সিট সংকটে সেখানে সম্প্রদায়গত বিভেদ বাড়বে। ২০১৯ সালের ২৯ মাচের্র মধ্যে যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বের হয়ে যাওয়ার কথা। বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পকর্ কেমন হবে তা নিয়ে জোটটির সঙ্গে একটি চুক্তিতে পেঁৗছেছেন থেরেসা। তবে ব্রেক্সিট চুক্তি চ‚ড়ান্ত করা নিয়ে বারবারই হেঁাচট খেয়ে যাচ্ছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। দলের অভ্যন্তরে এবং বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে কোনমতেই এ নিয়ে সমঝোতা হচ্ছে না। ব্রেক্সিট চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়ে দ্বিমতকে কেন্দ্র করে পদত্যাগ করেছেন দুই দুইজন ব্রেক্সিটবিষয়ক মন্ত্রী। অন্য মন্ত্রণালয়েরও কয়েকজন সরে দঁাড়িয়েছেন। পদত্যাগ করেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসনও। লেবার পাটির্র নেতা জেরেমি করবিনসহ বিরোধীরা চাইছেন গণভোট। গত ১৫ জানুয়ারি মে’র সেই ব্রেক্সিট খসড়া পরিকল্পনা পালাের্মন্টে প্রত্যাখ্যাত হয়। এরপর ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত আস্থা ভোটে কোন রকমে (মাত্র ১৯ ভোটে) টিকে যান থেরেসা। এতে সম্পূণর্ নতুন একটি ব্রেক্সিট পরিকল্পনা নিয়ে ইউরোপকে আলোচনার প্রস্তাব দেয়ার সুযোগ আসে তার হাতে। গত সোমবার প্ল্যান বি নামের সংশোধিত সে প্রস্তাব উত্থাপন করেন থেরেসা মে। সংশোধিত এ প্রস্তাব নিয়ে পালাের্মন্টে ভোটাভুটি হবে ২৯ জানুয়ারি। মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম প্রধান নিল বসু বলেন, আমরা গণভোটের পর ঘৃণাবাদী অপরাধ বাড়তে দেখেছি যা কমানো যায়নি। তাই এখন এমন একটা পরিবেশে সাধারণ মানুষকে উগ্রপন্থার দিকে ঠেলে দিচ্ছে (র?্যাডিকালাইজড)। তিনি বলেন, তারা জনগণকে যে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কাযর্ক্রমের ব্যাপারে অভিযোগের আহŸান জানাচ্ছেন। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানগুলো বলছে যুক্তরাজ্যে ইসলামবিদ্বেষী হামলার ঘটনা বেড়েছে। ২০১৮ সালের জুনে সংশ্লিষ্ট পুলিশ ও ইসলামবিদ্বেষী ঘটনা পযের্বক্ষণকারী সংস্থা টেল মামা’র বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, ম্যানচেস্টার ও লন্ডন ব্রিজে হামলার পর থেকে যুক্তরাজ্যের এ দুটি শহরে মুসলিমবিদ্বেষী অপরাধের হার বেড়েছে। মেট্রোপলিটন পুলিশ বলছে, ইসলামবিদ্বেষী হামলার সংখ্যা গত চার বছরে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ২০১৩ সালের মাচর্ পযর্ন্ত ১২ মাসে ৩৪৩টি ঘটনা, ২০১৬ সালের মাচর্ পযর্ন্ত ১২ মাসে ১,১০৯টি ঘটনা এবং এ বছরের মাচর্ পযর্ন্ত ১২ মাসে ১,২৬০টি ইসলামবিদ্বেষী ঘটনা রেকডর্ করা হয়েছে। মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম প্রধান ও বিশেষ অভিযান বিষয়ক প্রধান সহকারী কমিশনার নিল বসু জানিয়েছেন এই বিষয়ে এখনও সুনিদির্ষ্ট গোয়েন্দা তথ্য নেই। তবে সম্প্রদায়গত বিভেদ বাড়তে পারে। তিনি বলেন, আমার কাছে সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, এর পরে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভক্তি বাড়তে পারে এবং তারা পরস্পরের বিরুদ্ধে দঁাড়িয়ে যেতে পারে।