পুতিনের ঘোষণা

বেলারুশে যাচ্ছে রুশ পরমাণু অস্ত্র

ম মোতায়েনকৃত অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ মিনস্কের হাতে দেবে না মস্কো ম আমেরিকার বিশ্বাস- রাশিয়া পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের প্রস্তুতি নিচ্ছে না

প্রকাশ | ২৭ মার্চ ২০২৩, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ইসকান্দার ক্ষেপণাস্ত্র -ফাইল ছবি
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিন বেলারুশে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করার ঘোষণা দিয়েছেন। এই পদক্ষেপের কারণে পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার ঠেকাতে যে চুক্তি, তা লঙ্ঘিত হবে না বলেও জানিয়েছেন পুতিন। রুশ রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ইউরোপে, আমেরিকার অস্ত্র স্থাপনের বিষয়টি উলেস্নখ করে পুতিন বলেছেন, মস্কো তার অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ মিনস্কের হাতে দেবে না। বেলারুশ সরকার ক্রেমলিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং ইউক্রেনে রুশ আক্রমণকে সমর্থন করে। সংবাদসূত্র : বিবিসি আমেরিকা বলছে, তারা বিশ্বাস করে না যে, এই ঘোষণার পর রাশিয়া পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের প্রস্তুতি নিচ্ছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর এক বিবৃতিতে বলেছে, 'আমরা আমাদের নিজস্ব কৌশলগত পারমাণবিক অবস্থান সমন্বয় করার কোনো কারণ দেখিনি। আমরা ন্যাটো জোটের সম্মিলিত প্রতিরক্ষায় প্রতিশ্রম্নতিবদ্ধ।' রুশ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে শনিবার প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, বেলারুশের নেতা আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো দীর্ঘদিন ধরে দেশটিতে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপনের বিষয়টি উত্থাপন করেছেন। তিনি বলেন, 'এখানে অস্বাভাবিক কিছু নেই। আমেরিকা দশকের পর দশক ধরে এটি করে আসছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে তাদের মিত্র দেশগুলোর ভূখন্ডে তাদের কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপন করেছে।' প্রেসিডেন্ট পুতিন জানান, রাশিয়া ১ জুলাইয়ের মধ্যে বেলারুশে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র সংরক্ষণের জন্য স্থাপনা নির্মাণের কাজ শেষ করবে। তিনি আরও জানান, অল্পসংখ্যক ইস্কান্দার ট্যাক্টিক্যাল মিসাইল সিস্টেম, যা পারমাণবিক অস্ত্র নিক্ষেপের সময় ব্যবহার করা যায়, এরই মধ্যেই বেলারুশে স্থানান্তর করা হয়েছে। নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময়ের পর এই প্রথম দেশের বাইরে পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপন করতে যাচ্ছে মস্কো। সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৯১ সালে ভেঙে যাওয়ার পর অস্ত্রগুলো চারটি নতুন স্বাধীন রাষ্ট্র রাশিয়া, ইউক্রেন, বেলারুশ ও কাজাখস্তানের কাছে চলে যায় এবং সব ওয়ারহেড রাশিয়ার কাছে স্থানান্তর শেষ হয় ১৯৯৬ সালে। উলেস্নখ্য, প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কো ইউরোপের দীর্ঘতম শাসক। গত ২৮ বছর ধরে তিনি বেলারুশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বেলারুশিয়ান এই প্রেসিডেন্ট রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিনের সমর্থন তাকে ২০২০ সালে গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভের পরও টিকে থাকতে সাহায্য করেছিল। এ ছাড়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধে সমর্থনের জন্য সাবেক এই সোভিয়েত রাষ্ট্রের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আমেরিকা ও অন্যান্য দেশ বিলিয়ন ডলার মূল্যের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। রাশিয়ার পাশাপাশি ইউক্রেনের সঙ্গেও বেলারুশের সীমান্ত রয়েছে। ফেব্রম্নয়ারি মাঝামাঝি বেলারুশের নেতা অ্যালেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো বলেন, ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার নতুন আক্রমণের জন্য ঘাঁটি হিসেবে নিজ দেশের ভূখন্ড ব্যবহার করতে দিতে তিনি প্রস্তুত। এ সময় দুই দেশের মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধের ব্যাপারে সহযোগিতা বৃদ্ধির ঘোষণা আসে। ঘাঁটি হিসেবে নিজ দেশের ভূখন্ড ব্যবহারের বিনিময় বেলারুশ রাশিয়ার কাছ থেকে একটি এস-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং ইস্কান্দার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা উপহার পেয়েছে। এই মুহূর্তে বেলারুশে কয়েক হাজার রুশ সেনা রয়েছে এবং সেখানে দুই দেশের সামরিক বাহিনীর যৌথ মহড়া হয়েছে বলে জানা গেছে।