বিবিসিকে ইমরান খান

দমন-পীড়ন অসহনীয় হয়ে উঠেছে

প্রকাশ | ৩১ মে ২০২৩, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
পিটিআই নেতা ইমরান খান
গত কয়েক সপ্তাহ কঠিন সময় পার করছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর চেয়ারম্যান ইমরান খান। তার হাজার হাজার সমর্থক কারাগারে। দলের নেতৃত্ব থেকে ডজনখানেক কর্মী এরই মধ্যে পদত্যাগ করেছেন। তার দল নিষিদ্ধও হতে পারে। শুধু তাই নয়, গত ৯ মে সমর্থকরা সামরিক বাহিনীর স্থাপনায় তান্ডব চালানোয় ইমরানের বিরুদ্ধে উসকানিরও অভিযোগ আনা হয়েছে। ফলে যে কোনো মুহূর্তে তাকে ডাকা হতে পারে সামরিক আদালতে। এমন পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে বলেছেন, এই দমন-পীড়ন অসহনীয় হয়ে উঠেছে। সংবাদসূত্র : বিবিসি, ডন তবে তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান এখনো অবিচল। তিনি বলেছেন, 'আপনারা মনে করতে পারেন, এটা আমার জন্য বড় সংকট। কিন্তু আমি তা মনে করছি না।' লাহোরের জামান পার্কের বাড়ির উঠানে সহজে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় এমন একটি কক্ষকে ইমরান এখন 'মিডিয়া রুম' হিসেবে ব্যবহার করছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি সরাসরি যত ভাষণ দেন, তার প্রায় সবই এখান থেকে হয়। বিবিসিকে সাক্ষাৎকারও তিনি একই স্থানেই দিয়েছেন। তার চোখেমুখে দৃঢ়তার ছাপ ছিল; নির্বাচন হলে তাতে যে তিনি বিজয়ী হবেন, সেই আত্মবিশ্বাস দেখানোর চেষ্টায় কার্পণ্য করেননি পিটিআই চেয়ারম্যান। কিন্তু দলের নেতাকর্মীরা তাতে আস্থা রাখছেন বলে মনে হচ্ছে না। অল্প কয়েকদিনের মধ্যে ইমরান পিটিআইয়ের সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফাওয়াদ চৌধুরি এবং একসময় তার মানবাধিকার বিষয়ক মন্ত্রী শিরিন মাজারিসহ দুই ডজনের বেশি সহকর্মী হারিয়েছেন। ইমরান বলেন, 'প্রথমত, যারা চলে গেছে, তাদের জায়গাগুলো ভরাট করতে হবে। তরুণরা আসবে। হয়তো তারাও গ্রেপ্তার হবে।' এভাবে কোনো দল চলতে পারে- বিবিসির এমন প্রশ্নের জবাবে পিটিআই চেয়ারম্যান বলেন, 'আপনি এই ধরনের সন্ত্রাসী কৌশল অল্প সময়ের জন্যই ব্যবহার করতে পারেন। তবে পুরো পরিস্থিতিই অসহনীয় হয়ে উঠেছে।' সরকারের এই দমন-পীড়ন কমে আসবে, এমন কোনো লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না। পরিস্থিতি যে জটিল তা ইমরানের সমর্থকরাও স্বীকার করছেন। তবে অনেকে বলছেন, এমন সংকটময় মুহূর্তেই ইমরানের সেরাটা বেরিয়ে আসে, লড়াই তিনি উপভোগ করেন। তবে এখন তাকে আগের তুলনায় খানিকটা জনবিচ্ছিন্নই মনে হচ্ছে। আগে তার বাড়ির সামনে ভক্ত-সমর্থকদের বিপুল ভিড় থাকত। এখন ফটকের ভেতর থাকাদের বেশিরভাগই দলীয় আইনজীবী। ইমরানের কণ্ঠেও আগের সেই তেজ নেই। অনেকেরই ধারণা, সেনাবাহিনীর সঙ্গে ঝামেলা পাকানোর কারণেই তাকে ক্ষমতা হারাতে হয়েছে, আর এখন ইমরান সেই সেনাবাহিনীর সঙ্গেই কথা বলতে আগ্রহী। পাকিস্তানের রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর কোনো ভূমিকাই থাকবে না, এমনটা বোকার স্বর্গেই ভাবা সম্ভব, বলেছেন তিনি। ইমরান বলেন, 'তারা কী ভাবছে, তা জানতে আগ্রহী আমি। তারা মানে, ক্ষমতা কাঠামোয় যারা আছে, তারা। এই ক্ষমতার দৌড় থেকে আমাকে হটিয়ে দিলে পাকিস্তানের কী লাভ হবে?' সেনাবাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করা কিছুদিন আগেও খুব একটা সহজ ছিল না ইমরানের জন্য, কিন্তু এখন তার রাজনৈতিক অবস্থান তো আরও দুর্বল; এই অবস্থায় সেনাবাহিনী কেনইবা তার সঙ্গে কথা বলতে রাজি হবে? পিটিআই চেয়ারম্যানের ঝোলায় কী এমন আছে, যা সেনাবাহিনীকে আকৃষ্ট করবে? ইমরান এসব নিয়ে কিছু বলতে আগ্রহী হননি। বলেছেন, তিনি কেবল আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন, অন্য কিছু নয়।