ইউরোপীয় ইউনিয়নের কালো তালিকায় সৌদি আরব

প্রকাশ | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
মুদ্রা পাচার ও সন্ত্রাসবাদে অথার্য়নরোধে শিথিলতার মাধ্যমে ঝুঁকি তৈরি করায় সৌদি আরব, পানামা, নাইজেরিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে ইউরোপিয়ান কমিশন। বুধবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) এক নিবার্হী এ তথা জানিয়েছেন। এর আগে থেকেই তালিকায় ১৬টি দেশের নাম ছিল। সব মিলে ‘কালো টাকা’র তালিকায় থাকা দেশের সংখ্যা দঁাড়িয়েছে ২৩টিতে। এদিকে, ইউরোপীয় তালিকায় অন্তভুির্ক্ত নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছে সৌদি আরব। সংবাদসূত্র : রয়টাসর্, আল-জাজিরা ইউরোপের ব্যাংকগুলোতে ঘটা বিভিন্ন কেলেঙ্কারির পর মুদ্রাপাচারবিরোধী কঠোর অভিযানের অংশ হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু এ পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে ইইউ-র বেশ কয়েকটি সদস্য রাষ্ট্র। কালো তালিকাভুক্ত দেশ; বিশেষ করে সৌদি আরবের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অথৈর্নতিক সম্পকর্ থাকায় যুক্তরাজ্য ইউরোপিয়ান কমিশনের এ সিদ্ধান্তে উদ্বেগ জানিয়েছে। প্রস্তাবিত এ তালিকাকে স্বীকৃতি দিতে জোটভুক্ত ২৮টি দেশ সবোর্চ্চ দুই মাস সময় পাবে। সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে চাইলে তারা তালিকাটিকে প্রত্যাখ্যানও করতে পারে। ইইউ-র বিচার বিষয়ক কমিশনার ভেরা জোরুভা নতুন এ তালিকাটি প্রস্তাব করেছেন। সদস্য দেশগুলো একে খারিজ করবে না বলেও আত্মবিশ্বাসী তিনি। জোরুভা বলেন, ব্যাংকিং সেক্টরে ঝুঁকি দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ায় পদক্ষেপ নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। ‘কালো টাকা’র তালিকায় থাকা দেশগুলোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে না। এসব দেশের গ্রাহক ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে লেনদেনের ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ব্যাংকগুলো কঠোরতা অবলম্বন করতে বাধ্য থাকবে। সংশ্লিষ্ট দেশগুলো থেকে আসা অথের্র বিষয়ে কড়া যাচাই-বাছাইয়ের বাধ্যবাধকতা তৈরি হবে। ভুয়া লেনদেনের মাধ্যমে অথর্ পাচার করা হচ্ছে, এমন সন্দেহ হলেই আটকে দেয়া হবে লেনদেন। ইইউর এ সংক্রান্ত আগের কালো তালিকায় ১৬টি দেশ ছিল। নতুন তালিকাটিতে দেশের সংখ্যা ২৩টি। সৌদি আরব, পানামা, নাইজেরিয়া ছাড়াও নতুন যুক্ত হওয়া দেশগুলোর মধ্যে আছে লিবিয়া, বতসোয়ানা, ঘানা, সামোয়া, বাহামা এবং যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে থাকা চার রাজ্য আমেরিকান সামোয়া, ইউএস ভাজির্ন আইল্যান্ডস, পুয়েতোর্ রিকো ও গুয়াম। কালো তালিকায় থাকার ফলে দেশগুলোর কেবল সম্মানহানিই হবে না, তাদের সঙ্গে ইইউয়ের আথির্ক সম্পকর্ও আগের তুলনায় জটিল হয়ে উঠবে। ইইউর ব্যাংকগুলোকে এখন থেকে তালিকায় থাকা দেশগুলোর সঙ্গে লেনদেনের ক্ষেত্রে বাড়তি যাচাই-বাছাই করতে হবে, থাকতে হবে অতিরিক্ত সতকর্। আফগানিস্তান, উত্তর কোরিয়া, ইথিওপিয়া, ইরান, ইরাক, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, সিরিয়া, ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো, তিউনিসিয়া ও ইয়েমেনের নাম ইইউর এ নতুন তালিকায় আছে। আগের তালিকা থেকে বাদ পড়েছে কেবল বসনিয়া, গায়ানা, লাওস, উগান্ডা ও ভানুয়াতু। তালিকায় নাম না থাকলেও কমিশন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশের ওপর কড়া নজর রাখছে বলেও জানিয়েছেন জোরুভা। এদিকে, ইউরোপিয়ান কমিশনের নতুন এ সিদ্ধান্তে ‘মনঃক্ষুণœ’ হওয়ার কথা জানিয়েছে সৌদি সরকার। নিজেদের নাম তালিকার বাইরে রাখতে রিয়াদ প্রবল চাপ দিয়ে গেলেও ইইউ কমিশন তাদেরকে রাখতে বদ্ধপরিকর ছিল। এক বিবৃতিতে সৌদি সরকার জানিয়েছে, ‘মুদ্রা পাচার ও সন্ত্রাসবাদে অথার্য়নের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রতিশ্রæতি সৌদি আরবের কৌশলগত অগ্রাধিকার।’ মুদ্রা পাচার রোধে সম্প্রতি কঠোর আইন প্রণয়ন করা হয়েছে দাবি করে পানামাও তাদের নাম কাল তালিকা থেকে সরিয়ে নিতে বলেছে।