পাকিস্তানবিরোধী পদক্ষেপে সমথর্ন পেতে রাজনাথের সবর্দলীয় বৈঠক

বৈঠকের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মমতা

প্রকাশ | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে জঙ্গি হামলায় আধা সামরিক বাহিনীর সদস্য হতাহতের ঘটনায় পাকিস্তানবিরোধী পদক্ষেপে সমথর্ন পেতে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের আহŸানে সবর্দলীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় সময় শনিবার সকাল ১১টায় দিল্লিতে পালাের্মন্টের লাইব্রেরি ভবনে এই বৈঠক হয়। বৈঠকে কাশ্মির হামলার ঘটনাস্থল পরিদশর্ন করে আসা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং পরিস্থিতি সম্পকের্ সবর্দলীয় নেতাদের অবহিত করেন। বৈঠক শেষে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন। সবর্দলীয় বৈঠকে গৃহীত প্রস্তাবে সব ধরনের সন্ত্রাসী কমর্কাÐ ও পাকিস্তানের সহযোগিতার নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়েছে। বৈঠকে মোদির নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন বিজেপি ছাড়াও প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস এবং ভারতের বিভিন্ন দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদসূত্র : , হিন্দুস্তান টাইমস, এনডিটিভি গত বৃহস্পতিবার কাশ্মিরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার পর শুক্রবার সকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাসভবনে জরুরি বৈঠকে বসে ভারতের মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা কমিটি। ওই বৈঠকের পর অথর্মন্ত্রী অরুণ জেটলি জানান, পাকিস্তানকে দেয়া ‘মোস্ট ফেভারড নেশন’-এর তকমা প্রত্যাহার করে নিয়েছে ভারত। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে সবর্দলীয় বৈঠক আহŸানের কথাও জানান তিনি। সবর্দলীয় বৈঠকের প্রস্তাবে পাকিস্তানের নাম উল্লেখ না করে বলা হয়েছে, গত তিন দশকে সীমান্ত অতিক্রম করা সন্ত্রাসের শিকার ভারত। ভারতে সন্ত্রাসবাদকে সীমান্তের ওপার থেকে উৎসাহিত করা হয়েছে। এসব মোকাবিলায় ভারত ধৈযর্ ও সহিষ্ণুতার পরিচয় দিয়েছে। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস মোকাবিলায় দৃঢ় অঙ্গীকারের কথা পুরো জাতি এক কণ্ঠে উচ্চারণ করে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই ও ভারতের অখÐতা রক্ষায় নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি সমথের্ন আজ সবাই ঐক্যবদ্ধ।’ বৈঠকে বিভিন্ন দলের নেতারা রাজনাথ সিংকে অনুরোধ করেছেন, প্রধানমন্ত্রী যেন ব্যক্তিগতভাবে সবগুলো জাতীয় ও আঞ্চলিক দলের প্রধানের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। বৈঠকের আগে ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস কাশ্মির হামলার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার এবং নিরাপত্তা বাহিনীর পদক্ষেপে পূণর্ সমথর্ন দেয়ার কথা জানিয়েছে। দলের সভাপতি রাহুল গান্ধী বলেন, নিরাপত্তা বাহিনী ও সরকারের সঙ্গে আছে কংগ্রেস। দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমরা এই ইস্যুতে বিভক্ত হবো না।’ তবে এই বৈঠক আয়োজনের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার তিনি বলেন, ‘আমি বুঝতে পারছি না কেন ওরা এখন সংসদীয় দলের নেতাদের বৈঠকে ডেকেছেন। কারণ, লোকসভা শেষ হয়ে গেছে। স্পিকারের উদ্দেশে ধন্যবাদ প্রস্তাবও হয়ে গেছে। এরপর রাজনৈতিক দলের নেতাদের না ডেকে লোকসভায় সংসদীয় দলের নেতাদের বৈঠকে ডাকার অথর্ কী? আমার সন্দেহ, নিশ্চয়ই ওদের কোনো গেম প্ল্যান রয়েছে।’ উল্লেখ্য, ভারতের লোকসভায় তৃণমূল সংসদীয় দলের নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার বক্তব্য অনুযায়ী সুদীপকে সবর্দলীয় বৈঠকে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তৃণমূলের সবোর্চ্চ নেতাকে ডাকা হলে মমতাকে আমন্ত্রণ জানাতে হতো। কিন্তু তা হয়নি। সবর্দলীয় বৈঠকে যোগ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং, পালাের্মন্ট বিষয়ক মন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার, কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ, আনন্দ শমার্ এ জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, ন্যাশনাল কনফারেন্স প্রধান ফারুক আবদুল্লাহ, লোকজনশক্তি পাটির্ প্রধান এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামবিলাস পাসওয়ান, তৃণমূল কংগ্রেস নেতা সুদীপ বন্দোপাধ্যায় এবং ডেরেকে ও’ব্রায়ান, কমিউনিস্ট পাটির্ অব ইনডিয়ার নেতা ডি রাজা, ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পাটির্র নেতা শারদ পাওয়ারসহ অন্যরা। ২০১৬ সালে কাশ্মিরের উরি সেনাঘঁাটিতে হামলার পর ডাকা হয়েছিল সবর্ভারতীয় বৈঠক। ওই বৈঠকের পর ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী কাশ্মিরে আন্তঃসীমান্ত অভিযান চালায়। অপারেশন সাজির্ক্যাল স্ট্রাইক নামের ওই অভিযানে সন্ত্রাসী ঘঁাটি গুঁড়িয়ে দেয়া হয় বলে দাবি ভারতের।