কাশ্মিরে জঙ্গি হামলা

পাকিস্তানকে 'ভাতে মারার' কৌশল ভারতের

Avg`vwbK…Z me wRwb‡mi Ici 200 kZvsk ïé Pvwc‡q w`‡q‡Q w`wjø Pv ißvwb e‡Üi D‡`¨vMI wb‡”Q

প্রকাশ | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
fvi‡Zi mgy`ª e›`‡i †bvOi Kiv cY¨evnx RvnvR
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে গত বৃহস্পতিবারের জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তানকে 'ভাতে মারা'র কৌশল হাতে নিয়েছে ভারত। পুলওয়ামায় হামলার পরের দিনই পাকিস্তানের 'মোস্ট ফেভারড নেশন (এমএফএন)' বা সবচেয়ে সুবিধাপ্রাপ্ত দেশের তকমা কেড়ে নেয় ভারত। এবার সে দেশ থেকে আমদানিকৃত সব জিনিসের ওপর ২০০ শতাংশ আবগারি শুল্ক চাপিয়ে দিয়েছে দিলিস্ন। এছাড়াও পাকিস্তানের কাছে চা রপ্তানি বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে ভারতের চা রপ্তানি সংগঠন। সে দেশের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে লেখা চিঠিতে রপ্তানি বন্ধের প্রস্তাব পাঠিয়েছে তারা। ফলে বাণিজ্যিকভাবে ইমরান খানের দেশ আরও বেকায়দায় পড়ল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সংবাদসূত্র : এবিপি নিউজ, এনডিটিভি, হিন্দুস্তান টাইমস শনিবার সন্ধ্যায় এক টুইটে ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেন, 'পুলওয়ামা ঘটনার পর পাকিস্তানকে দেয়া 'সবচেয়ে সুবিধাপ্রাপ্ত দেশ'র (এমএফএন) মর্যাদা প্রত্যাহার করেছে ভারত। প্রত্যাহারের পর পাকিস্তান থেকে ভারতে আমদানি করা সব ধরনের পণ্যের শুল্ক ২০০ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে।' দুই দেশের মধ্যে বৈষম্যহীন বাণিজ্যের জন্য বাণিজ্য অংশীদারদের এমএফএন সুবিধা দেয়া হয়। ১৯৯৬ সালে পাকিস্তানকে এই মর্যাদা দিয়েছিল ভারত। পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সংকট চলার সময় এই সুবিধা প্রত্যাহার করে নেয়ায় দেশটি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে দাবি করেছে ভারত সরকার। কিন্তু দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় বার্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ মাত্র ২০০ কোটি ডলারের কাছাকাছি হওয়ায় এই পদক্ষেপ অনেকটা প্রতীকী। ভারত পাকিস্তান থেকে প্রধানত ফল, সিমেন্ট, চামড়া, রাসায়নিক ও মসলা আমদানি করে এবং দেশটিতে সুতিবস্ত্র, রঙ, রাসায়নিক, সবজি, লোহা ও ইস্পাত রপ্তানি করে থাকে। গত বৃহস্পতিবার জম্মু-শ্রীনগর মহাসড়কে ভারতীয় আধাসামরিক বাহিনীর গাড়িবহরে আত্মঘাতী হামলা চালায় জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মোহাম্মদ। ওই হামলার ভারতের কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনীর (সিআরপিএফ) ৪৯ জন সদস্য নিহত হয়। হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায় দিয়ে দেশটিকে দেয়া এমএফএন সুবিধা প্রত্যাহার করে নেয় ভারত। পাশাপাশি আন্তর্জাতিকভাবে দেশটিকে 'একঘরে' করতে কূটনৈতিক উদ্যোগ নেয়ার কথাও ঘোষণা করে তারা। এরপর পাকিস্তানি পণ্যে ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার ঘোষণা দিল ভারত। চা রপ্তানি বন্ধের উদ্যোগ নিচ্ছে ভারত এদিকে, ভারতের চা রপ্তানি সংগঠনের শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দেশের স্বার্থ বিবেচনা করে বাণিজ্যিক ক্ষতি মেনে নিয়েও তারা পাকিস্তানে চা রপ্তানি বন্ধের উদ্যোগ নিচ্ছে। ভারতের চা রপ্তানি কমিটি জানিয়েছে, কাশ্মিরে জঙ্গি হামলার পর তাদের ক্ষতি মেনে নিয়ে পাকিস্তানে চা রপ্তানি বন্ধ করার ব্যাপারে কোনো আপত্তি নেই। তারা বলছে, তাদের কাছে দেশের স্বার্থ আগে এবং পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়াশীল পদক্ষেপ মোকাবেলায় তারা প্রস্তুত। কমিটির চেয়ারম্যান অংশুমান কানোরিয়া বলেন, 'অবশ্যই আমরা প্রস্তুত আছি। কেন্দ্রীয় সরকার বললেই আমরা পাকিস্তানে চা রপ্তানি করা বন্ধ করে দেব। আগে দেশ আর দেশের নিরাপত্তারক্ষীদের সুরক্ষা, তারপর বাণিজ্য।' তিনি বলেন, 'ভয়াবহ এই হামলার পর আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে আর কোনো বাণিজ্যিক লেনদেনের কথা ভাবতেও পারি না। বিশেষ করে যখন এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটে, তখন দেশের নির্দেশের জন্যই আমরা অপেক্ষা করে থাকি। তাতে যদি আমাদের সংগঠনকে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়, কোনো ব্যাপার নয়।' ভারতের দাবি, পাকিস্তান প্রত্যক্ষভাবে এই হামলায় ইন্ধন দিয়েছে। এ নিয়ে বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা চলছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতের এসব পদক্ষেপের ফলে বাণিজ্যিকভাবে পাকিস্তান আরও বেকায়দায় পড়বে। দেশটি এরই মধ্যে 'ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স'র (এফএটিএফ) ধূসর তালিকায় রয়েছে। এফএটিএফ হলো একটি 'ইন্টার গভর্নমেন্টাল বডি'। যারা জঙ্গিদের অর্থ সরবরাহ আটকানোর কাজ করে থাকে। কিন্তু পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বারবারই অভিযোগ উঠেছে, তারা জঙ্গিদের অর্থ দিয়ে সাহায্য করে। যদি এফএটিএফের কালো তালিকায় নাম উঠে যায় পাকিস্তানের, তা হলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল, বিশ্ব ব্যাংক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো সংস্থাগুলোর কাছ থেকে সহযোগিতাও বন্ধ হওয়ার উপক্রম হবে। সে জন্যই ধূসর তালিকা নয়, এফএটিএফের কালো তালিকায় পাকিস্তানকে ফেলা হোক, এমনটা এখন চাইছে ভারত।