কাশ্মিরিদের কঠোর বার্তা ভারতীয় সেনাবাহিনীর

অস্ত্র হাতে তুলে নিলেই গুলি খেতে হবে

প্রকাশ | ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
সামরিক পথে কাশ্মির সংকট সমাধানের প্রচেষ্টায় কোনো সাফল্য না এলেও বলপ্রয়োগের নীতি থেকে সরছে না ভারত। মঙ্গলবার সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে কঠোর বার্তা দেয়া হয়েছে কাশ্মিরবাসীকে। এদিন লেফটেন্যান্ট জেনারেল কে এস ঢিলোঁ এক সংবাদ সম্মেলনে হুমকি দিয়েছেন, কাশ্মিরে কেউ অস্ত্র হাতে তুলে নিলেই তাকে গুলি খেতে হবে। জঙ্গিবিরোধী অভিযান পরিচালনার সময় বেসামরিকদের হস্তক্ষেপ না করার হুমকিও দিয়েছেন তিনি। সংবাদসূত্র : এবিপি নিউজ, হিন্দুস্তান টাইমস জেনারেল ঢিলোঁ তার মন্তব্যের মধ্য দিয়ে মূলত কয়েকদিন আগে করা সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াতের মন্তব্যেরই প্রতিধ্বনি করেছেন। বিপিনও সেনা অভিযানে বাধা দিলে কঠোর পরিণতি বরণ করতে হবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছিলেন। অভিভাবকদের আহ্বান জানিয়েছিলেন, তরুণদের সঠিক পথে ফেরাতে। গত মঙ্গলবার সেনা কর্মকর্তা কেএস ঢিলোঁ সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, 'জম্মু-কাশ্মিরে যেই অস্ত্র হাতে তুলে নেবে, তাকেই শেষ করে দেয়া হবে। আমি প্রত্যেক পরিবারকে বলছি, সন্তানদের বন্দুক পরিত্যাগ করে আত্মসমর্পণের পথে আসতে বলুন। এটাই সঠিক পথ। যদি তা না হয়, অস্ত্র হাতে তুলে নেয়া যে কাউকে গুলি করা হবে।' তিনি আরও বলেন, 'বেসামরিক এলাকায় যখন বন্দুকযুদ্ধ হয়, তখন জনসাধারণকে আমরা নিরাপদে থাকতে বলি। অভিযান পরিচালনার আওতায় থাকা এলাকা ঘেরাও করে রাখি। মানুষকে বলি, তারা যেন বাড়িতেই থাকে এবং এ ব্যাপারে মাথা না ঘামায়। বেসামরিক নিহতের সংখ্যা সীমিত রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করি।' গত ১৪ ফেব্রম্নয়ারি পুলওয়ামাতে আরডিএক্স বিস্ফোরকভর্তি গাড়ি নিয়ে 'সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স'র গাড়িবহরে আত্মঘাতী হামলা চালানো হয়। ওই হামলায় রিজার্ভ পুলিশের ৪০ জনেরও বেশি সদস্য নিহত হওয়ার পর সেখানে কারফিউ জারি করা হয়। কারফিউ ও কঠোর সেনা-নজরদারি জারি থাকা সত্ত্বেও জঙ্গিদের পেতে রাখা ভয়াবহ বোমায় শনিবার (ইম্প্রোভাইসড এক্সপেস্নাসিভ ডিভাইস-আইইডি) নতুন করে একজন ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। রোববার রাতে শুরু হওয়া সেনা অভিযানের ধারাবাহিকতায় সোমবার সেনা-জঙ্গি বন্দুকযুদ্ধে দুইপক্ষের সাতজন প্রাণ হারায়। এরপরও সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলপ্রয়োগের নীতি আরও জোরালো করার আভাস দেয়া হলো। তবে বিশ্লেষকরা মনে করেন, ব্যাপক মাত্রায় সামরিকায়ন, নিরাপত্তা তলস্নাশির সূত্রে হওয়া নির্বিচার হয়রানি ও স্বশাসনের অধিকার ক্ষুব্ধ করার মতো বিষয়গুলো স্থানীয়দের মধ্যে বিচ্ছিন্নতাবোধ জাগিয়ে তুলছে। তাদের ঠেলে দিচ্ছে পাকিস্তান সমর্থিত জঙ্গি সংগঠনগুলোর দিকে। তা সত্ত্বেও ভারত ক্রমাগত তাদের সামরিক নীতি কঠোর করে যাচ্ছে।