সুর পাল্টে এবার পাকিস্তানকে আলোচনার প্রস্তাব মোদির

কূটনৈতিক পথে দিলিস্ন, উদ্দেশ্য রিয়াদকে পাশে রাখা

প্রকাশ | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি
যাযাদি ডেস্ক ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের পুলওয়ামায় সিআরপিএফ কনভয়ে গত ১৪ ফেব্রম্নয়ারি জঙ্গি হামলার জেরে পাকিস্তানকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দ্ব্যর্থকণ্ঠে ঘোষণা করেছিলেন, 'আলোচনার পাট শেষ। এবার সমুচিত জবাব দেয়া হবে।' কিন্তু সৌদি যুবরাজ সালমানের ভারত সফরের পরপরই সুর পাল্টে গেছে মোদির। কিছুটা নমনীয় হয়ে ইসলামাবাদকে ফের আলোচনার বার্তাই দিয়েছেন তিনি। সংবাদসূত্র : এনডিটিভি 'এমবিএস' খ্যাত যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বুধবার মোদির বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, সামগ্রিক আলোচনা যেখানে শুরু হতে পারে, ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সে রকম পরিবেশ তৈরির প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে একমত হয়েছে দুই দেশ। পুলওয়ামায় হামলার পর পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ নেতা মাসুদ আজহারকে জাতিসংঘের জঙ্গি তালিকায় আনার দাবি জোরদার হয়ে ওঠার আবহে পাকিস্তান সফরে গিয়েছিলেন যুবরাজ সালমান। সেখানে পাক-সৌদি যৌথ ঘোষণাপত্রে ছিল জাতিসংঘের জঙ্গি তালিকা নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে নোংরা রাজনীতির অভিযোগ। কিন্তু এবার সেই ঘোষণাপত্রের উল্টো পথেই হাঁটলেন যুবরাজ সালমান। সৌদি-ভারত যৌথ বিবৃতি বলছে, জঙ্গির পাশাপাশি জঙ্গি সংগঠনকেও জাতিসংঘের নিষিদ্ধ তালিকায় আনার বিষয়টিতে জোর দেয়া হয়েছে বৈঠকে। সীমান্ত পারের সন্ত্রাস দমন, জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর আর্থিক সাহায্য বন্ধ করা, এর সবই রয়েছে ওই বিবৃতিতে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, এই বৈঠকের পরে এ কথা স্পষ্ট যে, পুলওয়ামা-পরবর্তী পরিস্থিতি সামলাতে কূটনৈতিক পথেই জোর দিচ্ছে দিলিস্ন। সৌদি আরব পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তাই সে দেশের নেতৃত্বকে পাশে রেখে বার্তা দেয়া হয়েছে ইসলামাবাদকে। এ ছাড়া আরও বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের মে থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনে মোদি যে ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগী হয়েছিলেন, তার প্রশংসা করেছেন যুবরাজ সালমান। পাক-ভারত দ্বিপক্ষীয় বিষয়ে তৃতীয় রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করা হবে না, এটাই ছিল এতদিন দিলিস্নর অবস্থান। সৌদি আরবের সঙ্গে যৌথ বিবৃতিতে পাকিস্তান প্রসঙ্গ রেখে সেই অবস্থান থেকে এবার সরে দাঁড়াল নরেন্দ্র মোদির সরকার। এদিকে, মোদির সঙ্গে বৈঠকে একবারও পাকিস্তানের নাম করেননি সৌদি যুবরাজ সালমান। কিন্তু সূত্রের খবর, বৈঠকে পুলওয়ামায় হামলা এবং পাকিস্তানের মাটিতে জঙ্গিদের স্বর্গোদ্যান গড়ে ওঠা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য ও প্রমাণ তার সামনে হাজির করেছে দিলিস্ন। সৌদি যুবরাজের কথায়, 'আমাদের দুই দেশের একটি সাধারণ উদ্বেগ হলো সন্ত্রাসবাদ এবং মৌলবাদ। ভারত এবং প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে আমরা সহযোগিতা করব, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নিরাপদ থাকে।' একটি শান্তি পুরস্কার নিতে দক্ষিণ কোরিয়ায় যাওয়ার কথা রয়েছে মোদির। তার আগে পাকিস্তানকে ঘুরপথে আলোচনার বার্তা দেয়াটা তাৎপর্যপূর্ণ মনে হচ্ছে কূটনীতিকদের। গত কয়েক দিন ধরেই দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তাপ প্রশমনের জন্য চাপ দিচ্ছিল যুক্তরাষ্ট্র। আফগানিস্তান ছেড়ে বেরোনোর সময় পাক-ভারত যুদ্ধ পরিস্থিতি যথেষ্ট অসুবিধাজনক ওয়াশিংটনের পক্ষে। এ ছাড়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও আলোচনার মাধ্যমে পাক-ভারত সমস্যা মেটানোর কথা বলছেন।