কাশ্মিরে জঙ্গি হামলা

যুদ্ধের জন্য তৈরি হচ্ছে পাকিস্তান!

ম ভারতের প্রতিশোধের আশঙ্কায় পাক মুলস্নুকে চলছে প্রস্তুতি ম পাকিস্তান প্রস্তুত থাকলে ভারতও তৈরি :রাজনাথ সিং

প্রকাশ | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মিরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার প্রতিক্রিয়ায় যেকোনো মুহূর্তে সেনা অভিযান চালিয়ে প্রতিশোধ নিতে পারে ভারত, এমন ধারণা থেকে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী যুদ্ধের জন্য তৈরি হচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় সীমান্তবর্তী হাসপাতালগুলোকে যথাযথ প্রস্তুত থাকতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। শুক্রবার ভারতীয় গণমাধ্যমে এ খবর জানানো হয়। এদিকে, এই খবর প্রকাশের পর ভারত জানিয়েছে, পাকিস্তান প্রস্তুত থাকলে ভারতও উপযুক্ত জবাব দিতে তৈরি। সংবাদসূত্র : টাইমস অব ইনডিয়, এবিপি নিউজ গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার সামরিক প্রধানের বৈঠকে বসেছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এরপর এনএসসির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে ইমরান খান নেতৃত্বাধীন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ জানায়, পাকিস্তান জানান দিতে চায় যে, তারা তাদের জনগণকে রক্ষা করতে সক্ষম। ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, 'এটি নতুন পাকিস্তান। জনগণকে দেখাতে চাই, আমরা তাদের রক্ষা করতে সক্ষম। ভারত আঘাত করলে প্রত্যাঘাতের ক্ষমতা আমাদের রয়েছে।' এদিকে পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে, তার প্রমাণ পেয়েছে বলে দাবি ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর। এ সংক্রান্ত দুটি সরকারি নথি তাদের হাতে এসেছে। নথি দুটির মধ্যে একটি বেলুচিস্তানের পাকিস্তানি সেনাঘাঁটির এবং অপরটি পাক অধিকৃত কাশ্মিরের স্থানীয় প্রশাসনকে (পিওকে) দেয়া একটি নোটিস। এ ছাড়া ভারতীয় চাপের মুখে পাকিস্তান যাতে কোনো ভাবেই নতি স্বীকার না করে, ইমরান খানের সরকারকে সেই কথাই বলেছেন জইশ-ই-মোহাম্মদের প্রধান মাসুদ আজহার। সূত্র বলছে, গত ২০ ফেব্রম্নয়ারি পাক অধিকৃত জিলানি হাসপাতালকে চিঠি দিয়ে জরুরি অবস্থার জন্য তৈরি থাকার নির্দেশ দিয়েছে কোয়েটার সেনাঘাঁটি। হেডকোয়ার্টার্স কোয়েটা লজিস্টিকস এরিয়ার ফোর্স কমান্ডার জিলানি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষকে বলেন, ভারতের সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে যুদ্ধ লাগলে সিন্ধু ও পাঞ্জাব থেকে আহত সেনা ও সাধারণ মানুষ হাসপাতালে আসতে পারে। প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়ার পর সেই হাসপাতাল থেকে তাদের বেলুস্তানের সিভিল হাসপাতালে পাঠানোর পরিকল্পনা হবে। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, প্রদেশের সব সেনা ও সাধারণ হাসপাতালে সবরকম মেডিকেল সহযোগিতার জন্য পরিকল্পনা করা হয়েছে। প্রয়োজন হলে সেনা হাসপাতালের পাশাপাশি সাধারণ হাসপাতালেও ২৫ শতাংশ আসন আহত সেনা সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত করে রাখার নির্দেশ দেয়া হবে। গত ১৪ ফেব্রম্নয়ারি কাশ্মিরের পুলওয়ামার অবন্তীপুরায় ভারতের কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনীর (সিআরপিএফ) কনভয়ে জঙ্গি হামলায় ৪৯ জন নিহত হয়। আহত হয় ৪০ জনের বেশি। এরপর থেকে এ ইসু্য নিয়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে। এর জবাব হিসেবে হামলার ঠিক পরের দিন দু'দশক আগে দেয়া 'মোস্ট ফেভার্ড নেশনে'র তকমা পাকিস্তানের থেকে ফিরিয়ে নিয়েছে ভারত। এছাড়া দেশটি পাকিস্তান থেকে আসা যেকোনো পণ্যের ওপর ২০০ শতাংশ শুল্কারোপ করেছে। ভারতীয় গণমাধ্যমের তথ্য মতে, পাকিস্তানের ভিমবের, নীলম, রাওয়ালকোট, কোটলি, ঝিলম, হাওয়েলি এই গ্রামগুলোতে নেয়া হচ্ছে বিশেষ সতর্কতা। বাসিন্দাদের দল বেঁধে কোথাও না বেরোতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মাটিতে গর্ত বানিয়ে বাঙ্কার তৈরি করতেও বলা হচ্ছে বাসিন্দাদের। একই সঙ্গে রাতে খুব প্রয়োজন না পড়লে আলো জ্বালাতেও নিষেধ করা হচ্ছে। পশুপালকদের বাইরে বেরোতে নিষেধ করার পাশাপাশি কোনো সন্দেহজনক গতিবিধি দেখলেই স্থানীয় প্রশাসনকে জানানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাকিস্তান প্রস্তুত থাকলে ভারতও তৈরি : রাজনাথ সিং এদিকে শুক্রবার গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং পাকিস্তানের হুশিয়ারির পাল্টা জবাব দিয়ে বলেন, তারা যদি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকে, তাহলে ভারতও তৈরি। এর আগে পুলওয়ামা হামলা নিয়ে পাকিস্তানকে দায়ী করার প্রতিবাদে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান হুশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন ভারত আঘাত করলে পাকিস্তান প্রত্যাঘাত করবে। রাজনাথ বলেন, পুলওয়ামা হামলায় দায় স্বীকার করেছে জইশ-ই-মোহাম্মদ। অথচ পাকিস্তানেই বহাল তবিয়তে রয়েছেন এই জঙ্গি সংগঠনটির প্রধান মাসুদ আজহার। পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে পর্যন্ত দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। তারপরও পাকিস্তান কী করে সন্ত্রাসে মদদ দেয়ার কথা অস্বীকার করতে পারে, এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, পুলওয়ামা হামলার জবাব ভারত কীভাবে দেবে তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি, তার আগেই পাকিস্তান যুদ্ধের ভয়ে কাঁপছে।