জিন পরিবর্তনের মাধ্যমে জন্ম

চীনের সেই যমজ শিশু মানসিকভাবেও 'অতি শক্তিধর'

প্রকাশ | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
জিনগত পরিবর্তনের মাধ্যমে এইডস প্রতিরোধী করে তোলা চীনা দুই যমজ শিশু মানসিকভাবেও 'অতি শক্তিধর' বলে দাবি করা হয়েছে। লুলু এবং নানা নামের এই দুই শিশুর অতিমাত্রার মানসিক সক্ষমতা বিশ্বে জিনগত পরিবর্তনের মাধ্যমে মানবসন্তান লাভের ক্ষেত্রে 'অস্ত্র প্রতিযোগিতার' মতো পরিস্থিতি ডেকে আনতে পারে বলে আশঙ্কা ব্যক্ত করা হয়েছে। 'সিসিআর-ফাইভ' নামে ক্ষতিকর একটি জিনকে লুলু ও নানার জিনগত পরিবর্তন বা সম্পাদনার মধ্য দিয়ে জিন থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। এতে দুই যমজ শিশু এইচআইভি প্রতিরোধক ক্ষমতা লাভের পাশাপাশি মানসিকভাবেও অতি শক্তিধর হয়ে উঠেছে। মায়ের পেটে থাকাকালে তাদের জিনে সম্পাদনার নজিরবিহীন কাজটি করেছিলেন অধ্যাপক হি জিয়ানকুই। অবশ্য, এই ধরনের বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই নিষিদ্ধ। কারণ এমন জিন পরিবর্তন প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে প্রবাহিত হয়। অজানা কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে মানবজাতি। বিজ্ঞানীর দাবি, এই একই জিনে পরিবর্তনের মাধ্যমে মানব ও ইঁদুরের মধ্যে প্রজ্ঞার ক্ষেত্রে উন্নয়ন ঘটে। পাশাপাশি প্রশিক্ষণ এবং স্মৃতি ক্ষেত্রেও উলেস্নখযোগ্য বিকাশ ঘটে। 'এমআইটি টেকনোলজি রিভিউ' নামের সাময়িকীকে লস অ্যাঞ্জেলসের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নায়ুজীববিজ্ঞানী আলিকো সিলভা বলেন, 'হঁ্যা জিনে এ ধরনের পরিবর্তন মস্তিষ্কের ওপর প্রভাব ফেলে।' অবশ্য, এই প্রভাবের মাত্রা কী হবে, সে ধরনের কোনো নজির বিজ্ঞান জগতে নেই বলেও জানান তিনি। চীনের শেনজেনের সাদার্ন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির গবেষক অধ্যাপক হি জিয়ানকুই গত নভেম্বরে বিশ্বের সংবাদমাধ্যমে শিরোনামে উঠে এসেছিলেন। মায়ের পেটের সন্তানের জিন সম্পাদনার দাবি করে এভাবে তিনি সংবাদ শিরোনাম হয়ে ওঠেন। অবশ্য, এ জাতীয় বিজ্ঞান তৎপরতার মাধ্যমে চীনের বিজ্ঞান নীতি লঙ্ঘন করেছেন তিনি। চীনা কর্তৃপক্ষ সে সময় এমন দাবি করেছিল। চীনা কর্তৃপক্ষের অগোচরে সম্পন্ন এ তৎপরতার জন্য অধ্যাপককে শাস্তি পেতে হবে বলেও জানানো হয়েছিল। বিজ্ঞানী হি জিয়ানকুই জানিয়েছেন, সাতজন গর্ভবতীর ভ্রূণের জিন তিনি সম্পাদনা করেছেন। এদের মধ্যে যমজ শিশুর জন্ম হয়েছে। সম্পাদনার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট শিশুটিকে তিনি বংশগত কোনো রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা দেননি। বরং একটি সক্ষমতা দিয়েছেন, যার মাধ্যমে শিশুটি এইচআইভি ভাইরাসের আক্রমণের বিরুদ্ধে সুরক্ষা পাবে। কোন্‌ কৌশলে শিশুদের এইচআইভি ভাইরাস থেকে মুক্ত রাখার ব্যবস্থা করেছেন, তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেছেন, এসব ভ্রূণের মধ্য থেকে 'সিসিআর-ফাইভ' নামের জিনটিকে তিনি নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছেন। এই জিনটি এমন একটি প্রোটিন তৈরি করে, যা এইআইভি ভাইরাসকে কোষের ভেতরে ঢুকতে দেয়, যার পরিপ্রেক্ষিতে মানুষ এইডসে আক্রান্ত হয়। সংবাদসূত্র : রয়টার্স, পার্স টুডে