মাইক্রোসফটের প্রতিবেদন

নজরদারি, ভুয়া খবর আর গুজব ছড়ানোয় বিশ্বে ভারত শীর্ষে

প্রকাশ | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতে সাধারণ নির্বাচনের আগে উদ্বেগ বাড়াল 'ইন্টারনেটের বিপদ' সংক্রান্ত মাইক্রোসফটের একটি প্রতিবেদন। এ মাসেই প্রকাশিত মাইক্রোসফটের এই রিপোর্ট অনুযায়ী তিনটি বিষয়ে পৃথিবীতে সবার থেকে এগিয়ে ভারত। আর সেসব হলো, সাধারণ মানুষের ওপর নজরদারি, ভুয়া খবর এবং গুজব। পাশাপাশি নিজের বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকেই অনেক বেশি ক্ষতির মুখোমুখি হন ভারতীয়রা- এমনটাই বলা হয়েছে এই প্রতিবেদনে। সংবাদসূত্র : এনডিটিভি হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ এবং গুজব, এই জোড়া ফলায় গত এক বছরে বারবার রক্তাক্ত হয়েছে পুরো ভারত। কখনো ছেলেধরা, কখনো কিডনি পাচার, কখনো নিছক সন্দেহের বশে গুজব ছড়ানোকে কেন্দ্র করে হওয়া সহিংসতায় প্রাণ গেছে অন্তত ৪০ নিরপরাধ মানুষের। মাইক্রোসফটের প্রতিবেদন আরও বলছে, ভারতের ৫৪ শতাংশ মানুষই গুজবের শিকার। অথচ সারা পৃথিবীর ক্ষেত্রে এই সংখ্যা ৫০ শতাংশ। ভারতের পাশাপাশি গুজব এখন সারা পৃথিবীর কাছেই উদ্বেগজনক বলে দাবি করা হয়েছে মাইক্রোসফটের ওই প্রতিবেদনে। গুজবের পাশাপাশি ভুয়া খবর ছড়ানোতেও এখন শীর্ষে ভারত। দেশটিতে বেশ কিছুদিন ধরেই নিজেদের মতাদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে ভুল খবর, ছবি এবং ভিডিও তৈরি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিচ্ছে বিভিন্ন গোষ্ঠী। নির্বাচন এগিয়ে আসার সঙ্গে বাড়ছে সেই প্রবণতা। মাইক্রোসফটের প্রতিবেদন অনুয়ায়ী, সারা পৃথিবীর মধ্যে ভারতেই সব থেকে বেশি ভুয়া খবর ছড়ানো হয়। গোটা পৃথিবীতে ৫৭ শতাংশ মানুষ ভুয়া খবরের শিকার, সেখানে ভারতের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা ৬৪ শতাংশ। গুজব এবং ভুয়া খবরের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের তথ্য চুরি এবং তাদের ওপর নজরদারিতেও সারা পৃথিবীর থেকে অনেক এগিয়ে। ভারতে ৪২ শতাংশ মানুষের ওপর কোনো না কোনোভাবে নজরদারি চালানো হয়, সেখানে পৃথিবীর ক্ষেত্রে ২৯ শতাংশ মানুষ এই নজরদারির শিকার। পাশাপাশি কারও নামে ভুল খবর তৈরি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষেত্রেও পরিসংখ্যান খুবই উদ্বেগজনক। ভারতের ক্ষেত্রে এই বিপদের মুখোমুখি হন ৩১ শতাংশ মানুষ। পৃথিবীর অন্য দেশগুলোর ক্ষেত্রে এই সংখ্যা ২২ শতাংশ। আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে সারা ভারতে ভোট দেবেন প্রায় ৮০ কোটি ভোটদাতা। এই বিপুলসংখ্যক মানুষের জনমতকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়ার ভূমিকা হয়ে উঠেছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সব পক্ষই নিজের মতো করে ভোটদাতাকে দলে টানতে মরিয়া। সেই প্রক্রিয়ায় কোনো লাগাম না থাকায় গুজব এবং ভুয়া খবর নিয়ে আসছে ব্যাপক সহিংসতা। যেকোনো সময় যে কারও ওপর আছড়ে পড়া জনরোষ এবং সহিংসতায় লাগাম টানতে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থার সঙ্গে আলোচনাও চালাচ্ছে ভারতের পার্লামেন্ট। কিন্তু কোনো কিছুই যে যথেষ্ট নয়, তা স্পষ্ট পশ্চিমবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘটে চলা একের পর এক সহিংসতার ঘটনা। মাইক্রোসফটের প্রতিবেদনও সামনে আনল সেই উদ্বেগের কথাই।