কাশ্মিরে আত্মঘাতী হামলা জোরালো করার হুমকি

প্রকাশ | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরজুড়ে আত্মঘাতী হামলা জোরালো করার হুমকি দিয়েছে সেখানকার সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল মুজাহিদিন। সংগঠনের শীর্ষ নেতা ও অপারেশনাল কমান্ডার রিয়াজ নাইকু এক অডিও বার্তায় বলেছেন, স্বাধীনতার উন্মাতাল আকাঙ্ক্ষায় মৃতু্যভয় তুচ্ছ করে কাশ্মিরের তরুণরা রাষ্ট্রীয় বাহিনীর ওপর হামলা অব্যাহত রাখবে। কাশ্মিরের বাস্তবতাকে 'দাসত্ব'র সঙ্গে তুলনা করে তিনি তার বার্তায় বলেছেন, আত্মসমর্পণের বদলে মৃতু্যকেই বেছে নেবেন তারা। সংবাদসূত্র : রয়টার্স, আল-জাজিরা গত ১৪ ফেব্রম্নয়ারি পুলওয়ামাতে আরডিএক্স বিস্ফোরক-ভর্তি গাড়ি নিয়ে 'সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের গাড়িবহরে আত্মঘাতী হামলা চালানো হয়। এতে বহরের ৭০টি গাড়ির মধ্যে একটি বাস সম্পূর্ণভাবে ভস্মীভূত হয়ে যায়। প্রাণ হারায় বাহিনীর অন্তত ৪৯ সদস্য। হামলার দায় স্বীকার করে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মোহাম্মদ জানায়, আদিল আহমেদ দার নামের এক কাশ্মিরি তরুণ ওই হামলার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে। পুলওয়ামা হামলার প্রতিক্রিয়ায় স্থানীয় হিজবুল মুজাহিদিনের অপারেশনাল কমান্ডার রিয়াজ নাইকু বলেছেন, ওই আত্মঘাতী হামলাকারী একজন কাশ্মিরি, তার ওপর সেনা নিপীড়নই তার মনের ভেতরে এমন হামলার উসকানি সৃষ্টি করেছে। উলেস্নখ্য, ইসলামের সুফিবাদী ধারা হিসেবে পরিচিত 'বেরেলভি' মতবাদে বিশ্বাসী ছিলেন আদিল। তার বন্ধু-স্বজন-আত্মীয়রা ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফকে জানিয়েছেন, বুরহান ওয়ানির হত্যাকান্ড আর নিরাপত্তা বাহিনীর ছররা গুলির আঘাতে বহু মানুষের অন্ধ হওয়ার ঘটনাই তাকে ভিন্নপথে তাড়িত করেছিল। এদিকে, বার্তা সংস্থা 'রয়টার্স'কে দেয়া সাক্ষাৎকারে আদিলের বাবা গুলাম হোসেন দাবি করেছেন, ২০১৬ সালের বিক্ষোভের সময় নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ভয়াবহ নিপীড়নের শিকার হয়েছিল আদিল। তারপর থেকেই সে বদলে যেতে থাকে। অডিও বার্তায় রিয়াজ নাইকু বলেন, 'বিশ্বের কোনো শক্তিই আত্মঘাতী হামলা থামাতে পারে না।' তার দাবি, 'স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষায় উন্মাতাল কাশ্মিরের তরুণরা। আমরা আত্মাহুতি দেয়া থামাব না। আমরা বরং মরব, তবু আত্মসপর্মণ করব না। সেই দিন বেশি দূরে নয়, যেদিন আমাদের ১৫ বছর বয়সি শিশু তার শরীরে বিস্ফোরক বহন করবে, আর সেটা তোমাদের গাড়িতে ছুড়বে। আমাদের কাছে দাসত্বের চেয়ে মৃতু্য ভালো।' কাশ্মিরের সোশ্যাল অ্যাকটিভিস্ট হামিদা নাইম 'আল-জাজিরা'কে বলেছেন, 'ভারতের সরকার কাশ্মিরের তরুণদের কণ্ঠস্বর শুনছে না। ফলে বিপুল সংখ্যায় এসব তরুণ অস্ত্র হাতে তুলে নিচ্ছে।' কাশ্মিরের আরেক বিদ্রোহী সংগঠন 'আওয়ামী অ্যাকশন কমিটি'র নেতা মিরওয়াইজ ওমর ফারুক বলেন, 'আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দেখছে কাশ্মিরের পুরো একটি প্রজন্মকে কীভাবে ভারত রাষ্ট্র চরমপন্থার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।'