মুক্তি পেলেন পেরুর সাবেক প্রেসিডেন্ট ফুজিমোরি

প্রকাশ | ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
মুক্তির পর আলবার্তো ফুজিমোরি
দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুর সাবেক প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফুজিমোরি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। ১৬ বছর বন্দি জীবন কাটানোর পর বুধবার কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন তিনি। শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করেই ৮৫ বছর বয়সি ফুজিমোরিকে মূলত মুক্তি দেওয়া হয়েছে। আদালতে ক্ষমা পাওয়ার পর বুধবার সন্ধ্যায় কারাগার থেকে মুক্তি পান আলবার্তো ফুজিমোরি। ১৯৯০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত পেরুর প্রেসিডেন্টে ছিলেন তিনি। তার এক দশকের শাসনামলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ২৫ বছরের কারাদন্ড ভোগ করছিলেন তিনি। আন্তঃআমেরিকান মানবাধিকার আদালত এবং ভুক্তভোগীদের পরিবারের সমালোচনা সত্ত্বেও দেশটির সর্বোচ্চ আদালত মঙ্গলবার মানবিক কারণে ৮৫ বছর বয়সি ফুজিমোরিকে ক্ষমা ঘোষণার একটি আপিলের পক্ষে রায় দেয়। ২০০৭ সালে চিলি থেকে ফিরে আসার পর ফুজিমোরি প্রায় ১৬ বছর ধরে কারাগারেই ছিলেন। পেরুর রাষ্ট্র-চালিত 'ন্যাশনাল পেনটেনশিয়ারি ইন্সটিটিউট' ফুজিমোরিকে 'অবিলম্বে মুক্তি' দেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পরপরই বুধবার তাকে কারাগার থেকে বের হয়ে একটি গাড়িতে উঠতে দেখা যায়। তার মুক্তির এই ঘটনাটি স্থানীয় টিভিতে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়। পরে সাবেক এই প্রেসিডেন্টের মুক্তির সময় তার বিপুলসংখ্যক সমর্থক ও সাংবাদিকদের ফুজিমোরিকে বহনকারী গাড়ির পেছনে পেছনে যেতে দেখা যায়। কারাগারের বাইরে অপেক্ষারত ফুজিমোরির সমর্থক ক্যাটালিনা পন্স বলেন, 'ফুজিমোরির বিরুদ্ধে এই অবিচারের অবসানের সময় এসেছে।' ফুজিমোরির সমর্থকরা বিশ্বাস করেন, তিনি সন্ত্রাসবাদ ও অর্থনৈতিক পতন থেকে পেরুকে রক্ষা করেছিলেন। তবে সমালোচকরা বলছেন, 'শাইনিং পাথ' গেরিলাদের বিরুদ্ধে তার সরকারের যুদ্ধের সময় তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন ও নৃশংসতা চালিয়েছেন। ১৯৯১ ও ১৯৯২ সালে শাইনিং পাথ গেরিলাদের সঙ্গে যুদ্ধের সময় ২৫ জনকে হত্যার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগে ২০০৯ সালে ফুজিমোরিকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। একই সঙ্গে তাকে সে সময় ২৫ বছরের কারাদন্ড দেওয়া হয়। তবে ২০১৭ সালে পেরুর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট পেদ্রো পাবলো কুজিনস্কি তাকে ক্ষমা করেন। অবশ্য পরে আন্তঃআমেরিকান আদালত ও ভুক্তভোগীদের পরিবারের চাপের মুখে দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটির নিম্ন আদালত সেই ক্ষমার আদেশ বারবার বাতিল বা স্থগিত করার মতো সিদ্ধান্ত নেয়। তবে এবার দেশটির সর্বোচ্চ আদালত মানবিক কারণে ক্ষমার আদেশ পুনর্বহাল রেখে রায় দেওয়ায় মুক্তি পেলেন আলবার্তো ফুজিমোরি। সংবাদসূত্র : রয়টার্স, আল-জাজিরা