ট্রাম্পের রুশ সংযোগ

প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন মুলার

ম নতুন কোনো অভিযোগ গঠনের সুপারিশ করা হয়নি ম প্রতিবেদনের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো রোববারের মধ্যে জানা যেতে পারে

প্রকাশ | ২৪ মার্চ ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ডোনাল্ড ট্রাম্প রবার্ট মুলার
২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারে ট্রাম্পের শিবির ও রাশিয়ার মধ্যে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ খতিয়ে দেখতে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান রবার্ট মুলার শুক্রবার তার প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। মুলার তার প্রতিবেদনে নতুন কোনো অভিযোগ গঠনের সুপারিশ করেননি বলে জানিয়েছেন বিচার বিভাগের এক কর্মকর্তা। মুলার এর আগে ট্রাম্পের ছয় সহযোগী ও একাধিক রুশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করেছিলেন। সংবাদসূত্র : বিবিসি দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার এখন এই প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ তৈরি করবেন এবং কংগ্রেস সদস্যদের প্রতিবেদনের কতটুকু অংশ দেখানো হবে, তাও নির্ধারণ করবেন তিনি। কংগ্রেসের নেতাদের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে উইলিয়াম বার জানিয়েছেন, তিনি আশা করছেন প্রতিবেদনের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো তিনি রোববারের মধ্যেই জানাতে পারবেন। মুলার তার প্রতিবেদনে অভিশংসনের কোনো সুপারিশ করে থাকলে তার ব্যাখ্যাও তিনি দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। কমিটির কাছে দেয়া আগের এক সাক্ষ্যে তিনি প্রতিবেদনের সর্বোচ্চ যে পরিমাণ অংশ কংগ্রেস সদস্যদের জানানো সম্ভব, তা জানাবেন বলে কথা দিয়েছিলেন। অ্যাটর্নি জেনারেলের জানানো অংশটি কংগ্রেস সদস্যদের কেউ চাইলে নিজ দায়িত্বেই প্রকাশ করতে পারবেন। মুলারের তদন্ত প্রতিবেদনটির সম্পূর্ণ অংশ জনসম্মুখে প্রকাশের দাবিও করেছেন অনেকে। ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিতে চাওয়া ডেমোক্রেট পার্টির অনেক মনোনয়নপ্রত্যাশীই ক্ষমতায় গেলে ট্রাম্প-রাশিয়া সংযোগ নিয়ে স্পেশাল কাউন্সেলের প্রতিবেদনের পুরোটাই প্রকাশ করা হবে বলে প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছেন। তবে প্রতিবেদনে নতুন কোনো অভিযোগ হাজির করা হয়নি বলে জানিয়েছেন বিচার বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারে ট্রাম্পের প্রচার শিবিরের সঙ্গে মস্কোর আঁতাত হয়েছিল বলে অনেকেই সন্দেহ করে আসছেন। ট্রাম্প প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রড রজেনস্টাইন রিপাবলিকান প্রচার শিবিরের সঙ্গে মস্কোর সংযোগ ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখতে মুলারকে নিয়োগ দেন। এ সংক্রান্ত মার্কিন কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার (এফবিআই) তদন্তে ট্রাম্প হস্তক্ষেপ করেছিলেন কিনা, কিংবা এফবিআই পরিচালক জেমস কোমিকে ওই তদন্তের কারণেই বরখাস্ত করা হয়েছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখার দায়িত্বও স্পেশাল কাউন্সেলকে দেয়া হয়। শুরু থেকেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও শীর্ষ রিপাবলিকান নেতারা এই তদন্তের বিরোধী ছিলেন। তাকে একে 'উইচ হান্ট' হিসেবেও অ্যাখ্যা দিয়েছিলেন। তথ্য প্রকাশে আপত্তি না থাকার দাবি করলেও মুলারকে অনির্বাচিত একজন ব্যক্তি আখ্যা দিয়ে তদন্তের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে দফায় দফায় প্রশ্ন তুলেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, 'আমাদের দেশের ইতিহাসে আমার জয় ছিল সবচেয়ে বড় নির্বাচন সাফল্যগুলোর একটি। অসামান্য সাফল্য। কোটি কোটি ভোটার সমর্থন দিয়েছেন। কিন্তু এখন এমন একজন ব্যক্তি একটি প্রতিবেদন লিখে দিতে যাচ্ছেন যিনি কোনো দিন একটি ভোটও পাননি।' তবে তদন্ত প্রতিবেদন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের বলেছেন, 'এটা বাইরে আসতে দিন। মানুষকে দেখতে দিন। প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে দেয়া হবে কি না, সেটা নির্ভর করছে আইনমন্ত্রীর ওপর। আমরা দেখব কী ঘটে। আমরা দেখব এটা ন্যায়সঙ্গত কি না।' উলেস্নখ্য, ২০১৬ সালের নভেম্বরে মার্কিন নির্বাচনে রুশ সংযোগের বিষয়টি অনেক দিন ধরেই আলোচনার কেন্দ্রে। নির্বাচনকে প্রভাবিত করে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জেতাতে মস্কো 'প্রোপাগান্ডা' ছড়িয়েছিল এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সাবেক এফবিআই পরিচালক জেমস কোমিকে বরখাস্তের পর এই তদন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্টের দিকে মোড় নেয়। তবে ট্রাম্পের পাশাপাশি রাশিয়াও বরাবরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। চলতি মাসেই যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে তদন্তকারী রবার্ট মুলারের প্রতিবেদন নিয়ে ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ৪২০ জন আইনপ্রণেতা কংগ্রেস ও জনগণের কাছে তদন্ত প্রতিবেদনটি উন্মুক্ত করার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। ওই প্রস্তাবের বিপক্ষে কোনো ভোট পড়েনি। প্রতিবেদন উন্মুক্ত করার প্রশ্নে আনা প্রস্তাবটি এখন সিনেটে উত্থাপিত হবে। সেখানে কী ফল আসবে, তা নিশ্চিত না।