ত্রিপোলি দখল নিয়ে তুমুল লড়াই, ২১ জন নিহত

প্রকাশ | ০৯ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
লিবিয়ার সশস্ত্রগোষ্ঠী লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মির (এলএনএ) নেতা খলিফা হাফতারের রাজধানী ত্রিপোলি দখলের অভিযানে এরই মধ্যে নিহত হয়েছেন অন্তত ২১ জন। যারা নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে রেড ক্রিসেন্টের এক চিকিৎসক রয়েছেন এবং তিনি শনিবার নিহত হয়েছেন। জেনারেল হাফতারের বাহিনী জানিয়েছে, তাদের ১৪ জন যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। সংবাদসূত্র : ডয়চে ভেলে, এএফপি, রয়টার্স, বিবিসি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে, জাতিসংঘ অস্ত্রবিরতির চেষ্টা চালালেও তা একেবারেই ব্যর্থ হয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের জন্য সাময়িক অস্ত্রবিরতিতে দুই পক্ষকে রাজি করানোর চেষ্টা করেছিল জাতিসংঘ। জাতিসংঘ চাইছে কিন্তু তা সত্ত্বেও এখনো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ত্রিপোলি সরকার ও দেশটির পূর্বাঞ্চলের দখলে থাকা হাফতারের যোদ্ধাদের মধ্যে চলছে তীব্র লড়াই। গত সপ্তাহ থেকে শুরু হয়েছে হাফতারের এই ত্রিপোলি দখল অভিযান। হাফতারের লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মি (এলএনএ) বাহিনী বৃহস্পতিবার থেকে ত্রিপোলির দক্ষিণ ও পশ্চিম দিক থেকে বহুমুখী হামলা শুরু করেছে। রোববার এলএনএ জানিয়েছে, তারা প্রথমবারের মতো বিমান হামলা চালিয়েছে। এর আগের দিন শনিবার তাদের ওপর বিমান হামলা চালিয়েছিল জাতিসংঘ সমর্থিত ত্রিপোলিভিত্তিক 'ন্যাশনাল অ্যাকর্ড গভর্নমেন্ট'র (জিএনএ) অনুগত বাহিনীগুলো। লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী ফায়েজ আল-সেরাজি অভু্যত্থান-প্রচেষ্টার অভিযোগে হাফতারকে অভিযুক্ত করেছেন এবং বিদ্রোহীদের শক্তি প্রয়োগ করে প্রতিরোধ করা হবে বলে শাসিয়েছেন। রাজধানী ত্রিপোলির দক্ষিণে পরিত্যাক্ত বিমানবন্দরের চারপাশে দুপক্ষের মধ্যে লড়াই চলছে। এর আগে এই বিমানবন্দরটি দখলে নেয়ার দাবি জানিয়েছিলেন জেনারেল হাফতার। জিএনএর এক মুখপাত্র রোববার জানিয়েছেন, তাদের অনুগত বাহিনীগুলো এলএনএর অগ্রগতি স্তিমিত করেছে এবং এখন জিএনএ পুরো দেশে 'শুদ্ধি' অভিযান চালানোর লক্ষ্য নিয়েছে। এদিকে, ত্রিপোলির বাসিন্দারা খাবার ও জ্বালানি মজুদ করতে শুরু করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ত্রিপোলি থেকে বিবিসির প্রতিনিধি জানিয়েছেন, যারা লড়াই এলাকার কাছাকাছি আছেন, তারা তাদের বাড়িতেই অবস্থান করছেন, বের হলে বাড়ি লুট হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। ১৯৬৯ সালে কর্নেল গাদ্দাফিকে ক্ষমতা দখলে সহায়তা করেছিলেন হাফতার। পরে গাদ্দাফির সঙ্গে বিরোধ শুরু হলে তিনি দেশ ছেড়ে নির্বাসনে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। ২০১১ সালে গাদ্দাফির বিরুদ্ধে অভু্যত্থান শুরু হলে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং বিদ্রোহী একটি গোষ্ঠীর কমান্ডার বনে যান। ক্ষমতা থেকে মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে উচ্ছেদ করার পর থেকেই লিবিয়ায় অস্থিরতা বিরাজ করছে। পশ্চিম দিকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ত্রিপোলিভিত্তিক সেরাজ সরকার ক্ষমতায় থাকলেও বেনগাজিভিত্তিক প্রশাসনের মাধ্যমে পূর্বাংশ নিয়ন্ত্রণ করছেন জেনারেল হাফতার। সম্প্রতি তার বাহিনী দক্ষিণাঞ্চলের তেলক্ষেত্রগুলোসহ ওই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এরপর তারা পশ্চিম দিকে রাজধানী ত্রিপোলির দিকে অগ্রসর হয়েছে। তাদের এই অভিযান দীর্ঘদিন ধরে চলবে বলে আশঙ্কা অনেকের। সরে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক বাহিনী লিবিয়া থেকে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। রাজধানী ত্রিপোলির দখলকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি ঘটার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।