পদত্যাগী নির্বাচন কমিশনার অরুণ গোয়েল
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনার অরুণ গোয়েলের পদত্যাগে চাপের মুখে পড়েছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। ইসির পদত্যাগের কারণ দর্শাতে সরকারকে চাপ দিচ্ছে বিরোধী দলগুলো। প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস সভাপতি মলিস্নকার্জুন খাড়্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম 'এক্সে' দেওয়া এক পোস্টে জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশন নাকি নির্বাচন বর্জন তিনি বলেছেন, 'আমরা যদি আমাদের স্বাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়মতান্ত্রিক পতন রোধ না করি, তাহলে আমাদের গণতন্ত্র একদিন একনায়কতন্ত্রে পরিণত হবে।' তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা, এনডিটিভি
মলিস্নকার্জুন বলেন, যেহেতু নির্বাচন কমিশনার বাছাইয়ের নতুন প্রক্রিয়ায় সব ক্ষমতা কার্যকরভাবে ক্ষমতাসীন দল এবং প্রধানমন্ত্রীর হাতে কুক্ষিগত, তাহলে পরবর্তী মেয়াদ শেষ হওয়ার ২৩ দিন পরও কেন নতুন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করা হয়নি মোদি সরকারকে এই প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে এবং যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা দিতে হবে।
দেশটির নির্বাচন কমিশনার অরুণ গোয়েল হঠাৎ করেই কেন পদত্যাগ করলেন, সেটা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। শনিবার নির্বাচন কমিশনার অরুণ গোয়েল পদত্যাগ করেন। তার পদত্যাগপত্র প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মু গ্রহণ করেছেন। ফলে তাৎক্ষণিকভাবেই অরুণ গোয়েলের পদত্যাগ কার্যকর হয়েছে।
অরুণ গোয়েল 'ব্যক্তিগত কারণ' দেখিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তার পদত্যাগের পর অনেকে তার স্বাস্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তুললেও পরে শীর্ষ কর্মকর্তারা জানান, তার শরীর পুরোপুরি ঠিক আছে। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নির্বাচন কমিশনের একাধিক কর্মকর্তার দাবি, অনেকদিন থেকেই অরুণ গোয়েলের সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাজিব কুমারের কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য চলছিল। এ কারণেই পদত্যাগ করেছেন তিনি।
ভারতে নির্বাচন কমিশনার বেঞ্চের সদস্য সংখ্যা তিন। এর মধ্যে নির্বাচন কমিশনার অনুপ পান্ডে গত মাসে অবসরে গেছেন। আর এবার অরুণ গোয়েল পদত্যাগ করায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাজিবই একমাত্র প্যানেল সদস্য।
নির্বাচন কমিশনার হিসেবে ২০২৭ সালের নভেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাকি ছিল অরুণ গোয়েলের। আগামী বছরের ফেব্রম্নয়ারিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদে রাজিব কুমারের মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে। এরপর কমিশনের শীর্ষ পদে বসার কথা ছিল অরুণ গোয়েলের। তবে এর আগেই তিনি সরে দাঁড়ালেন।
অরুণ গোয়েল পাঞ্জাব ক্যাডারের ১৯৮৫ ব্যাচের আইএএস অফিসার ছিলেন। ২০২২ সালের নভেম্বরে নির্বাচন কমিশনে যোগ দেওয়ার আগে তিনি শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন। সে সময় নির্বাচন কমিশনার হিসেবে তার নিয়োগ নিয়েও বিতর্ক হয়েছিল। সচিব পদে অরুণ গোয়েলের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর। কিন্তু এর আগেই ওই বছরের ১৮ নভেম্বর স্বেচ্ছায় অবসর নেন তিনি। অবসর নেওয়ার পরই তাকে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ করা হয়। 'অ্যাসোসিয়েশন অব ডেমোক্রেটিক রিফর্মস' (এডিআর) নামের একটি সংগঠন এই নিয়োগকে অবৈধ বলে দাবি করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। পরে নির্বাচন কমিশনার পদে সাবেক আমলা অরুণ গোয়েলকেই বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।