পোলিশ আকাশসীমা 'লঙ্ঘন'

ইউক্রেনে রাশিয়ার বিমান হামলা বিভিন্ন স্থানে বিস্ফোরণ

ক্রিমিয়ায় দুটি রুশ যুদ্ধজাহাজে ইউক্রেনের হামলা

প্রকাশ | ২৫ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
হামলা থেকে বাঁচতে কিয়েভে মেট্রো স্টেশনে আশ্রয়
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে আবারও সিরিজ বিমান হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে একাধিক বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। রাশিয়া বিমান হামলা চালানোয় সতর্কতা জারি করেছে ইউক্রেন। এদিকে, পোল্যান্ড জানিয়েছে, ইউক্রেনের পশ্চিমে সীমান্তবর্তী অঞ্চল লভিভকে লক্ষ্য করে রাশিয়া হামলা চালানোর পর পোল্যান্ডের আকাশসীমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তারাও তাদের বিমান বাহিনীকে সক্রিয় করেছে। এ সময় একটি পোল্যান্ডের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র। তথ্যসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম জানায়, রাশিয়া রোববার ৫৭টি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে এই হামলা চালায় রাশিয়া। আর পোল্যান্ডের সশস্ত্র বাহিনী বলেছে, রাশিয়ার একটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র সংক্ষিপ্তভাবে পোলিশ আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে। ইউক্রেনের বিমান বাহিনী 'টেলিগ্রাম' মেসেজিং অ্যাপে জানিয়েছে, রাশিয়ার ২৯টি ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে ১৮টি এবং ২৮টি আক্রমণকারী ড্রোনের মধ্যে ২৫টি ধ্বংস করেছে ইউক্রেনীয় বিমান বাহিনী। রোববার ভোরের দিকে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ কেঁপে ওঠে। কিয়েভের সামরিক প্রশাসনের প্রধান সের্হি পপকো 'টেলিগ্রামে' বলেন, ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনী রাজধানী এবং এর আশপাশে রাশিয়ার উৎক্ষেপণ করা প্রায় এক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করেছে। তিনি আরও জানান, হামলায় সামান্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মার্কিন রাষ্ট্রদূত ব্রিজেট ব্রিঙ্ক রোববার ভোরে সোশ্যাল মিডিয়া পস্ন্যাটফর্ম 'এক্সে' বলেছেন, 'চলতি সপ্তাহে তৃতীয়বার ভোরের আগে পুরো ইউক্রেন বিমান হামলার সতর্কতার অধীনে নেওয়া হয় এবং জনগণকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।' তিনি আরও বলেন, 'আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে, লাখ লাখ বেসামরিক নাগরিকের কথা বিবেচনা না করেই রাশিয়া নির্বিচারে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে চলেছে।' রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় অবশ্য তাৎক্ষণিকভাবে এই হামলার বিষয়ে মন্তব্য করেনি। এদিকে, পশ্চিম ইউক্রেনের লভিভ অঞ্চলে হামলার আগে রাশিয়ার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর একটি পোল্যান্ডের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে বলে পোল্যান্ডের সশস্ত্র বাহিনী জানিয়েছে। 'এক্সে' দেশটির সশস্ত্র বাহিনী বলেছে, 'ক্ষেপণাস্ত্রটি ওসারডো (লুবলিন ভয়োডশিপ) শহরের কাছে পোলিশ আকাশসীমায় প্রবেশ করেছিল এবং সেখানে ৩৯ সেকেন্ড অবস্থান করেছিল। পুরো উড্ডয়নের সময় ক্ষেপণাস্ত্রটিকে সামরিক রেডার সিস্টেমের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হয়।' পোলিশ সশস্ত্র বাহিনী এর আগে বলেছিল, পোল্যান্ডের আকাশসীমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আক্রমণের সময় পোল্যান্ড এবং সহযোগী বিমানগুলোকে সক্রিয় করা হয়েছিল। লভিভের মেয়র আন্দ্রি সাদোভি 'টেলিগ্রামে' বলেছেন, শহরে কোনো হামলা হয়নি। তবে বিস্তৃত লভিভ অঞ্চলের 'গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো' লক্ষ্য করে প্রায় ২০টি ক্ষেপণাস্ত্র এবং সাতটি আক্রমণকারী ড্রোন নিক্ষেপ করা হয়েছে। এর আগে, গত শুক্রবার রাশিয়া কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। এতে ইউক্রেনের একটি বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ১০ লাখ ইউক্রেনীয় বিদু্যৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। তার আগে রাশিয়ার সামারা অঞ্চলের একটি তেল শোধনাগারে ড্রোন হামলা চালানো হয়। এতে সেখানে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। গভর্নর দিমিত্রি আজারভ 'টেলিগ্রামে' এক বিবৃতিতে বলেন, আঞ্চলিক তেল শোধনাগারে বেশ কয়েকটি ড্রোন হামলা হয়েছে। তিনি বলেন, হামলার ঘটনায় কুইভিশেভ তেল শোধনাগারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। তবে এতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। রাশিয়ার সামারা অঞ্চলের বড় তেল শোধনাগার এটি। যেটি পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে রোসনেফট। বছরে সাত মিলিয়ন টন তেল উৎপাদন করতে পারে এটি। তবে রাশিয়ার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, অধিকাংশ ড্রোন হামলা প্রতিহত করা হয়েছে। সম্প্রতি রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা জোরদার করেছে ইউক্রেন। এতে রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধের তীব্রতা বেড়েছে।