ট্রাম্পের সঙ্গে ফের আলোচনায় বসতে আগ্রহী কিম

প্রকাশ | ১৪ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ওয়াশিংটন 'সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি' নিয়ে আলোচনার টেবিলে বসলে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন তৃতীয়বারের মতো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসতে আগ্রহী। শনিবার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে একথা বলা হয়। কিম বলেন, সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তিনি আরেকটি বৈঠকে বসতে এ বছরের শেষ নাগাদ পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। ভিয়েতনামে ট্রাম্পের সঙ্গে তার অতি সাম্প্রতিক সম্মেলন ভেস্তে যাওয়ার এবং উভয়পক্ষ কোনো চুক্তি ছাড়াই আলোচনা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর এই প্রথম তিনি এমন কথা বললেন। কিম ও ট্রাম্প গত বছর সিঙ্গাপুরে প্রথমবার একত্রিত হয়েছিলেন। সেখানে তারা কোরীয় উপদ্বীপের নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ে একটি অস্পষ্ট চুক্তি স্বাক্ষর করেন। সংবাদসূত্র: এএফপি, রয়টার্স, বিবিসি উত্তর কোরিয়ার পার্লামেন্টে শুক্রবার দেয়া এক ভাষণে কিম বলেন, পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে ওয়াশিংটন তাদের সম্পর্কোন্নয়নে 'প্রকৃতপক্ষে আগ্রহী' রয়েছে কি না, হ্যানয় বৈঠকে সে ব্যাপারে তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তারই পরিপ্রেক্ষিতে কিম বলেন, 'সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং পারস্পরিক গ্রহণযোগ্য শর্ত নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তৃতীয়বার সম্মেলনে বসার প্রস্তাব দিলে আমরা সেই আলোচনায় বসতে আগ্রহী।' উত্তর কোরিয়ার নেতা আরও বলেন, ট্রাম্পের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভালো। তিনি বলেন, তারা যখনই চান তখনই পরস্পরকে চিঠি লিখতে পারেন। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রকে সময় বেঁধে দিয়ে কিম বলেন, 'একটি সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য চলতি বছরের শেষ নাগাদ পর্যন্ত ধৈর্য নিয়ে অপেক্ষা করব।' যুক্তরাষ্ট্রের 'শত্রম্নতামূলক' মধ্যস্থতার ধরন বদলাতেও আহ্বান জানিয়েছেন কিম। ওয়াশিংটনে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইনের সঙ্গে বৈঠকে ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার নেতার সঙ্গে আরও বৈঠকের সম্ভাবনা আছে মন্তব্য করার একদিন পরই কিমের এ আগ্রহের কথা জানা গেল। গত জুনে সিঙ্গাপুরে ট্রাম্প ও কিমের মধ্যে প্রথম ঐতিহাসিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। হ্যানয়ে তাদের দ্বিতীয় সম্মেলনে কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রথম বৈঠকে করা চুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দেয়। যুক্তরাষ্ট্র স্বল্প পরিসরে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের বিনিময়ে নিষেধাজ্ঞা শিথিলে উত্তর কোরিয়ার বিভিন্ন দাবির বিষয়ে ফেব্রম্নয়ারির বৈঠকের অচলাবস্থাকে দায়ী করে। তবে পিয়ংইয়ং জানায়, তারা কেবলমাত্র কিছু পদক্ষেপ শিথিল করার দাবি জানিয়েছিল। ভিয়েতনামের হ্যানয়ে চলতি বছরের ফেব্রম্নয়ারিতে দু'জনের দ্বিতীয় বৈঠকটি কোরীয় উপদ্বীপে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের পদক্ষেপ নিয়ে মতবিরোধে ভেস্তে যায়। গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু স্থাপনাগুলো ভেঙে ফেলার বদলে উত্তর কোরিয়া তাদের ওপর আরোপিত সব নিষেধাজ্ঞার প্রত্যাহার দাবি করায় কিমের সঙ্গে বৈঠকটি ছেড়ে চলে এসেছিলেন বলে সে সময় ট্রাম্প দাবি করেছিলেন। গত মাসে উত্তরের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী চোয়ে সুন-হুই ভিয়েতনাম বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান 'গুন্ডাদের মতো ছিল' বলে অভিযোগ করেছিলেন। হ্যানয়ে ওয়াশিংটন 'সুবর্ণ সুযোগ' হারিয়েছে বলেও ধারণা তার। যুক্তরাষ্ট্র সত্যিই উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি চায় কি না, ভিয়েতনামের বৈঠক তা নিয়ে 'দৃঢ় সন্দেহ' সৃষ্টি করেছে বলে সম্প্রতি কিমও মন্তব্য করেছিলেন।