জনতার জাগরণ

বেসামরিক সরকারের দাবিতে ফের উত্তাল সুদান

প্রকাশ | ২০ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
বেসামরিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবিতে সুদানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সামনে ফের বিক্ষোভ শুরু করেছে কয়েক লাখ লোক। গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরের পদত্যাগ দাবিতে যে বিক্ষোভ হয়েছিল বৃহস্পতিবারের বিক্ষোভে তার চেয়ে অনেক বেশি লোক অংশ নিয়েছে। এদিন বিক্ষোভে জনসমাগমের একাংশ -এপি
বেসামরিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবিতে সুদানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সামনে ফের বিক্ষোভ শুরু করেছে কয়েক লাখ লোক। গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরের পদত্যাগ দাবিতে যে বিক্ষোভ হয়েছিল বৃহস্পতিবারের বিক্ষোভে তার চেয়ে অনেক বেশি লোক অংশ নিয়েছে। সংবাদসূত্র : রয়টার্স, বিবিসি নিউজ গত সপ্তাহে বশিরকে উৎখাতের পর ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। পরে সেনাবাহিনী জানায়, বেসামরিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আগে দুই বছর ক্ষমতায় থাকবে সেনাবাহিনী। একইসঙ্গে তারা দুর্নীতিবিরোধী অভিযানসহ বিক্ষোভকারীদের কিছু দাবি মেনে নেয়ার প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছে। তবে বিক্ষোভকারীরা সেনাবাহিনীর এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তারা সরাসরি বেসামরিক প্রশাসনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে কয়েক লাখ বিক্ষোভকারী প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। এসময় তারা 'স্বাধীনতা ও বিপস্নব জনগণের পছন্দ', 'বেসামরিক সরকার, বেসামরিক সরকার' ইত্যাদি স্স্নোগান দেয়। এসময় সেখানে স্থাপিত বিশাল টেলিভিশন স্ক্রিনে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিপীড়নের শিকারের ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়। ২৪ বছরের বিক্ষোভকারী সাবিয়া আব্দালস্নাহ বলেন, 'বেসামরিক কর্তৃপক্ষের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আগ পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকব। আমরা সামরিক শাসনের পতন ঘটাব।' এর আগে গত বৃহস্পতিবার ৭৫ বছর বয়সী বশিরকে গ্রেপ্তারের খবরে সড়কজুড়ে উলস্নাস শুরু হলেও তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। সামরিক পরিষদের ক্ষমতা গ্রহণের ঘোষণায় ওই আনন্দ মিইয়ে যায়। আন্দোলনকারীরা পরে সামরিক বাহিনীর সদর দপ্তরের বাইরে অবস্থানের কর্মসূচি দেয়। সুদানের প্রফেশনাল অ্যাসোসিয়েশনের সারা আবদেলআজিজ বলেন, 'এটা আগের শাসনেরই ধারাবাহিকতা। তাই আমাদের প্রয়োজন লড়াইয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখা এবং শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ জানানো।' রাষ্ট্র পরিচালিত গণমাধ্যম পরে এক ঘোষণায় সুদানজুড়ে স্থানীয় সময় রাত ১০টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত কারফিউ জারির কথা জানায়। এরপরও খার্তুমের রাস্তা ছাড়েনি আন্দোলনকারীরা। তাদের সুদানের পতাকা নেড়ে 'পতন আবারও' স্স্নোগান দিতে দেখা গেছে। বশিরের পতন দাবি করে এর আগে তারা 'পতন, এটাই সব' স্স্নেস্নাগান দিত। উলেস্নখ্য, সুদানে যে গণবিক্ষোভে বৃহস্পতিবার ৩০ বছরের একনায়ক শাসনের অবসান হয়েছে তার নেতৃত্ব কোনো রাজনৈতিক দলের হাতে নেই। বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছে সুদানিজ প্রফেশনাল অ্যাসোসিয়েশন (এসপিএ) নামে একটি পেশাজীবী সংগঠন। প্রধানত চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী এবং আইনজীবীরা মিলে এই সংগঠনটি গড়ে তুলেছেন। গণবিক্ষোভে নারীদের যে রকম ব্যাপক অংশগ্রহণ দেখা গেছে, তা দেশটির ইতিহাসে বিরল ঘটনা। বলা হচ্ছে, বিক্ষোভকারীদের ৭০ শতাংশই নারী। সমাজের সব অংশ থেকেই নারীরা প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিয়েছেন। রাস্তায় যেমন তারা সোচ্চার, সোশ্যাল মিডিয়াতেও একইভাবে তৎপর। এই নারীদের বিরাট একটি অংশ যে শুধু রাজনৈতিক পরিবর্তন চাইছেন তা নয়, সুদানে শরিয়াহ আইনের বদলও দাবি করছেন তারা।