গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসন

মার্কিন সতর্কতাকে থোড়াই কেয়ার

গত ২৪ ঘণ্টায় তুমুল বোমা হামলা হয়েছে। এমন বোমা হামলা গত দুই সপ্তাহেও দেখা যায়নি

প্রকাশ | ১০ মে ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ইসরাইলি বিমান হামলায় ধ্বংসস্তূপ রাফাহ
গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরে ইসরাইলকে বড় কোনো অভিযান না চালানোর জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সতর্ক করার পরও সেখানে ভারী গোলাবর্ষণ শুরু করেছে ইসরাইল। রাফাহর একজন ত্রাণকর্মী বলেন, শহরটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় তুমুল বোমা হামলা হয়েছে। এমন বোমা হামলা গত দুই সপ্তাহেও দেখা যায়নি। তথ্যসূত্র : বিবিসি, আল-জাজিরা ফিলিস্তিনি শরণার্থী-বিষয়ক জাতিসংঘ ত্রাণ সংস্থার (ইউএনআরডাবিস্নউএ) এই কর্মী বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে কয়েক মাইল দূরে রাফাহর পূর্বাঞ্চলে ঘন ঘন বোমা হামলা হয়েছে। আর সেই বোমার আঘাতে কেঁপে কেঁপে উঠছে পশ্চিম রাফাহর ভবন- যেখানে তিনি রয়েছেন। ওদিকে, রাফাহ থেকে জাতিসংঘ ত্রাণ সংস্থা থেকে স্কট মরিসন বলেছেন, লড়াই নগরীর কেন্দ্রস্থলের দিকে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। বুধবার রাতেও রাফাহতে অবিরাম গোলাবর্ষণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, 'তারা আমাদের ওপর (শিশু, নারী, বৃদ্ধ) গোলাবর্ষণ শুরু করেছে।' প্রতি ১০ সেকেন্ড পরপর বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সেখানকার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী। এমন হামলার মুখে বাস্তুচু্যত মানুষদের নিয়ে এলাকা ছেড়ে যাচ্ছে বেশকিছু গাড়ি। জানালা দিয়ে তা দেখতে পাওয়ার কথা জানিয়েছেন লুইস নামের এই ত্রাণকর্মী। তিনি বলেন, রাফাহতে এমন কিছু মানুষ আছেন, যারা বেশিদূর যেতে অপারগ। কারণ, তাদের অনেকেই বৃদ্ধ, আবার অনেকেই শিশু। আর নিরাপদ বলতে জায়গা খুব কম। গাজায় অল্পকিছু অবকাঠামোই দাঁড়িয়ে আছে। এ ছাড়া গাজার আর কোথাও নিরাপত্তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। রাফাহ শহরে ইসরাইলের সামরিক অভিযান ঠেকাতে বাইডেন প্রশাসন এরই মধ্যে প্রতিশ্রম্নত বোমার চালান ইসরাইলে পাঠানো স্থগিত করে তাদের বড় সতর্কবার্তা দিয়েছে। ইসরাইলের সেনারা স্থল অভিযানে গাজার ঘনবসতিপূর্ণ রাফা শহরে ঢুকলে আমেরিকা তাদের অস্ত্র ও গোলা সরবরাহ করবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাইডেন। আমেরিকার অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের হুঁশিয়ারিকে 'খুবই হতাশাজনক বক্তব্য' বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘে ইসরাইলের রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান। এরপরও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের কয়েকটি ব্যাটালিয়ন রাফাহতে সক্রিয় থাকার দাবি করে ইসরাইল সব হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে সেখানে ট্যাংক বহর পাঠিয়েছে। রাফাহতে গাজার অন্যান্য অংশ থেকে এসে আশ্রয় নিয়েছেন কয়েক লাখ বাস্তুচু্যত ফিলিস্তিনি। এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার সকালে রাফাহ শহরে ভারী গোলাবর্ষণ করেছে ইসরাইলি বাহিনী। হামাসের টর্গেটে এসব হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে তারা। চিকিৎসার অভাবে যন্ত্রণাদায়ক মৃতু্য হচ্ছে গাজাবাসীর এদিকে, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চিকিৎসার অভাবে সাধারণ মানুষের ধীর ও যন্ত্রণাদায়ক মৃতু্য হচ্ছে বলে জানিয়েছে হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। দখলদার ইসরাইলের সেনারা সীমান্তগুলো বন্ধ করে দেওয়ায় আহতরা উন্নত চিকিৎসার জন্য বাইরে যেতে পারছেন না। পর্যাপ্ত সরঞ্জাম না থাকায় গাজার ভেতরও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাচ্ছেন না তারা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, আহত এবং অসুস্থরা ধীরে ধীরে মৃতু্যবরণ করছেন। কারণ, এখানে চিকিৎসা সরঞ্জাম নেই এবং তাদের বাইরে গিয়ে চিকিৎসা করার সুযোগও নেই। গাজার একমাত্র ডায়ালাইসিস কেন্দ্রটিও বন্ধ হয়ে গেছে।