পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করতে ট্রেনে চেপে রাশিয়ায় কিম

প্রকাশ | ২৫ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ভস্নাদিমির পুতিন কিম জং-উন
যাযাদি ডেস্ক উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং-উন প্রথমবারের মতো ভস্নাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের জন্য বুধবার রাশিয়ায় পৌঁছেছেন। এদিন সকালে ব্যক্তিগত সাঁজোয়া ট্রেনে চেপে তিনি রাশিয়া পৌঁছান। পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা স্থবির হয়ে পড়ায় পিয়ংইয়ং ঐতিহ্যগতভাবে তাদের মিত্র মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করতে চাইছে। এই বৈঠক উপলক্ষে রুশ উপকূলবর্তী শহর ভস্নাদিভস্তকের রুসকি দ্বীপে মঙ্গলবার থেকেই রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার পতাকা ওড়ানো হচ্ছে। সেখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বৃহস্পতিবার তাদের মধ্যে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এতে মূল আলোচ্য বিষয় থাকবে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু ইসু্য। সংবাদসূত্র : এএফপি, বিবিসি রুশ প্রেসিডেন্টের দপ্তর ক্রেমলিনের মুখপাত্র ইউরি উশাখোভ বলেন, বিগত মাসগুলোতে কোরীয় উপদ্বীপ স্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। এজন্য উত্তর কোরিয়াকে ধন্যবাদ দিতে হয়। কারণ তারা পরমাণু পরীক্ষা বন্ধ করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কিমের দুটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার পরও উত্তর কোরিয়ার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় পরিবর্তন না আসায় পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করতে যাচ্ছেন কিম। এতে করে নিজের প্রতি বিদেশি সমর্থন আরও শক্তিশালী হওয়ার আশা করছেন তিনি। ক্রেমলিনের কর্মকর্তা ইউরি উশাকভ বলেন, পিয়ংইয়ংয়ের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে গত বছর উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে রাশিয়ার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ৫৬ শতাংশ কমেছে। তবে দুই দেশই পারস্পরিক যোগাযোগ রক্ষায় আগ্রহী। মস্কো মনে করে, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। উলেস্নখ্য, ভৌগোলিক দিক থেকে রাশিয়া আর উত্তর কোরিয়ার মধ্যে এ রকম বৈঠকের গুরুত্ব আছে। দুই দেশের আছে অভিন্ন সীমান্ত, যদিও তা খুব বেশি দীর্ঘ নয়। অন্যদিকে, প্রায় আট হাজারের মতো উত্তর কোরীয় অভিবাসী কাজ করে রাশিয়ায়। তবে অনেকের অনুমান, এদের সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে। উত্তর কোরিয়ার ওপর যেহেতু জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা আছে, তাই এই অভিবাসী কর্মীদের সবাইকে এ বছরের মধ্যেই উত্তর কোরিয়ায় ফেরত পাঠাতে হবে। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন একসময় উত্তর কোরিয়ার গুরুত্বপূর্ণ মিত্র ছিল। উত্তর কোরিয়া তাদের প্রাথমিক পরমাণু প্রযুক্তি পেয়েছিল রাশিয়ার কাছ থেকেই। তবে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর এই সম্পর্কে ভাটা পড়ে। কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে যখন রাশিয়ার সম্পর্ক আবার খারাপ হতে শুরু করে, তখন আবার উত্তর কোরিয়া-রাশিয়া সম্পর্কে বরফ গলতে শুরু করে। 'শত্রুর শত্রম্ন আমার বন্ধু' এমন এক নীতি নেয় মস্কো। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠক যে ভেস্তে যাবে, সেটা উত্তর কোরিয়া আশা করেনি। তারা আশা করেছিল, সেখানে কোনো একটা আপসরফা হবে, যার ফলে উত্তর কোরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিল হবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা উত্তর কোরিয়াকে বেশ কাবু করে ফেলেছে। যুক্তরাষ্ট্র যদি তাদের অবস্থান না বদলায়, তাহলে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা শিথিল হওয়ার সম্ভাবনা কম। সেক্ষেত্রে তাদের বাইরের বিশ্বের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ খুঁজতে হবে। এজন্য পিয়ংইয়ং যে দেশের সঙ্গেই সুযোগ আছে, সে দেশের সঙ্গেই সম্পর্ক ভালো করতে চাইবে। তারা যুক্তরাষ্ট্রকে দেখাতে চাইবে, আমরা একঘরে নই।