আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন
নিজ দলের ভেতর থেকে বড় একটি ধাক্কা খেলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বুধবার দলের হেভিওয়েট নেতা ন্যান্সি পেলোসি এবং জর্জ ক্লুনি বাইডেনের পুনর্র্নির্বাচনের সম্ভাবনা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। এই দুই নেতা দলের অন্যান্য আইন প্রণেতা, দাতা এবং সিনেট ডেমোক্রেটদের প্রভাবিত করতে পারেন। তথ্যসূত্র : বিবিসি
সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিভিশন বিতর্কে ধরাশায়ী হন বাইডেন। বিতর্ক চলাকালে বাইডেন একাধিকবার কথার মাঝখানে থেমে গিয়েছিলেন। তিনি অনেক সময় বাক্যও সম্পূর্ণ করতে পারেননি। ৮১ বছরের বাইডেনকে অনেকেই শারীরিক ও আইকিউ পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিয়েছেন। দলের ভেতর থেকে অনেকেই বাইডেনকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন। তবে বাইডেন সাফ জানিয়েছেন, তিনি সরছেন না, নির্বাচনে থাকছেন।
কিন্তু মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের সাবেক স্পিকার এবং বাইডেনের দীর্ঘদিনের সহযোগী ন্যান্সি পেলোসি বলেছেন, ২০২৪ সালের হোয়াইট হাউসের নির্বাচনে থাকবেন কিনা তা দ্রম্নত সিদ্ধান্ত নিতে হবে বাইডেনকে। অবশ্য তার সমালোচনাকারীদের ন্যান্সি পেলোসি বলেন, 'ন্যাটোর শীর্ষ সম্মেলন শেষ না হওয়া পর্যন্ত আপনারা মুখ বন্ধ রাখুন।' একই সঙ্গে দ্রম্নত সিদ্ধান্ত নেওয়ার গুরুত্বের কথা বাইডেনকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তিনি।
এদিকে, হলিউড তারকা ক্লুনি 'নিউইয়র্ক টাইমসে' লেখা মতামতে বাইডেনের প্রতি তার সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন এবং বলেছেন, ২০২০ সালের বাইডেন আর ২০২৪ সালের বাইডেন এক ব্যক্তি নন। তিনি লিখেছেন, 'আমরা এই প্রেসিডেন্টকে নিয়ে নভেম্বরে জিততে যাচ্ছি না। তার ওপরে আমরা হাউস জিতব না এবং আমরা সিনেট হারাতে যাচ্ছি।'
উলেস্নখ্য, ক্লুনি শুধু একজন হলিউড তারকাই নন, বছরের পর বছর ধরে তিনি ডেমোক্রেটিক পার্টির শীর্ষ তহবিল সংগ্রাহকদের একজন। বিশেষ করে হলিউডসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে দলের জন্য তহবিল সংগ্রহ করেন তিনি। আর দলীয় তহবিলের বেশ বড় একটি অংশ আসে হলিউড থেকে। তাই এখন ক্লুনির এমন অবস্থান বাইডেনের জন্য বড় হুমকি।
সিনেটর পিটার ওয়েলচ বুধবার রাতে এক লেখায় বাইডেনকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনিই প্রথম ডেমোক্রেটিক সিনেটর, যিনি স্পষ্টভাবে প্রেসিডেন্টকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। আর সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা চাক শুমার ব্যক্তিগতভাবে ইঙ্গিত দিয়েছেন, বাইডেন ছাড়া দলের অন্য কোনো প্রার্থীর প্রতি তার সমর্থন থাকবে। দলের একজন প্রধান দাতা জানিয়েছেন, ডেমোক্রেটিক নেতারা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, তারা ন্যাটো সম্মেলনের পর বাইডেনের বিষয়ে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করবেন।
উলেস্নখ্য, প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রথম নির্বাচনী বিতর্কে 'নিষ্প্রভ' জো বাইডেনের বয়স এবং শারীরিকভাবে তার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের সক্ষমতা নিয়ে খোদ ডেমোক্রেটদের মধ্যে বেশ উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। দলটির একটি অংশ এখন প্রকাশ্যেই বাইডেনকে আগামী নভেম্বরের নির্বাচনী দৌড় থেকে সরে যেতে বলছে।
৮১ বছর বয়সি বাইডেন নিজেও তার বয়সের বিষয়টি স্বীকার করেন। কিন্তু তিনি দল, অর্থদাতা, সমর্থক ও ভোটারদের বোঝাতে চাইছেন, আরও চার বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের পথে বয়স কোনো বাধা সৃষ্টি করতে পারবে না। নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে তাই সরে দাঁড়ানোর কোনো ইচ্ছা তার নেই।
এ বিষয়ে উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যে 'এবিসি নিউজ'কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাইডেন বলেন, 'একমাত্র 'সর্বশক্তিমান ঈশ্বর' আমাকে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়াতে রাজি করাতে পারেন।'
