মিয়ানমারের গুরুত্বপূর্ণ শহরের দখল নিল বিদ্রোহীরা

প্রকাশ | ১২ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী তা'আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ শানের গুরুত্বপূর্ণ শহর নাউংছো'র নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। শুক্রবার সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সম্পূর্ণভাবে হটিয়ে দিয়ে শহরটি টিএনএলএ দখল করে। গোষ্ঠীটির অন্যতম শীর্ষ নেতা ও যোদ্ধা বাহিনীর প্রধান জেনারেল তার ভোনে কিয়াও এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, 'নাউংছো শহর এখন সম্পূর্ণ আমাদের।' তথ্যসূত্র : এএফপি শান মিয়ানমার ও চীনের সীমান্তবর্তী প্রদেশ। নাউংছো এই প্রদেশের অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র। দুই দেশের মধ্যকার অধিকাংশ বাণিজ্য হয় এই শহরের মাধ্যমে। এছাড়া শহরটিতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের জন্য একটি অভিজাত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রও রয়েছে। তাছাড়া এই শহরটি থেকে শান প্রদেশের রাজধানী তাউঙ্গি'র দূরত্ব বেশি নয়, মাত্র ৫০ কিলোমিটার। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে ক্ষমতাসীন জান্তার মুখপাত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কেউ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। ১৯৪৮ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সংঘাত শুরু হয় তৎকালীন বিভিন্ন সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর। চলমান এই সংঘাতের এক পর্যায়ে ১৯৬২ সালে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। তবে তাতে সংঘাতের মাত্রা কমেনি। ২০২০ সালের জাতীয় নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ১ ফেব্রম্নয়ারি অভু্যত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। দেশটির গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি এবং তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার ও বন্দি করা হয়। সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং এই অভু্যত্থানে নেতৃত্ব দেন। অভু্যত্থানের পরপরই সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি জনগণ। প্রথমদিকে সেই বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ উপায়ে দমন করলেও এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করতে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশ দেয় ক্ষমতাসীন সামরিক সরকার। এই পরিস্থিতে ২০২২ সালের শুরু থেকে গণতন্ত্রপন্থি জনগণের একটি অংশ জান্তাবিরোধী বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীতে যোগ দেওয়া শুরু করে। গত বছরের অক্টোবর থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন প্রদেশে জান্তা বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হয়েছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর। সেই যুদ্ধে সাফল্যও পাচ্ছে বিদ্রোহীরা। গত ৭ মাসে বিদ্রোহীদের কাছে দেশের এক পঞ্চমাংশের ভূখন্ডের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে জান্তা।