ছড়িয়ে পড়ছে এমপক্স

বৈশ্বিক জরুরি স্বাস্থ্য অবস্থা ঘোষণা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার

স্পর্শ, চুম্বন বা যৌনতার পাশাপাশি চাদর, পোশাক এবং সূঁচের মতো দূষিত পদার্থের মাধ্যমে এই রোগ ছড়াতে পারে

প্রকাশ | ১৬ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
আফ্রিকার কয়েকটি অংশে এমপক্সের প্রাদুর্ভাবকে বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ তৈরি করার মতো জরুরি স্বাস্থ্য অবস্থা ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাবিস্নউএইচও)। ভাইরাসজনিত এই সংক্রমণ ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর (ডিআরসি) পর প্রতিবেশী দেশগুলোতেও ছড়িয়েছে। আগে 'মাঙ্কিপক্স' হিসেবে পরিচিত অত্যন্ত সংক্রামক এই রোগের প্রাথমিক প্রাদুর্ভাব চলাকালে ডিআরসিতে অন্তত ৪৫০ জনের মৃতু্য হয়। তথ্যসূত্র : রয়টার্স এএফপি ডাবিস্নউএইচও জানায়, পূর্বে মাঙ্কিপক্স নামে পরিচিত এমপক্স একটি ভাইরাল রোগ, যা মানুষ এবং সংক্রামিত প্রাণীদের মধ্যে সহজেই ছড়িয়ে পড়তে পারে। এটি ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের মাধ্যমে যেমন- স্পর্শ, চুম্বন বা যৌনতার পাশাপাশি চাদর, পোশাক এবং সূঁচের মতো দূষিত পদার্থের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই রোগের সংক্রমণে জ্বরের মতো লক্ষণ দেখা দেয়, চামড়ায় ক্ষত তৈরি হয় আর এটি প্রাণঘাতী হতে পারে; এই রোগে আক্রান্ত প্রতি ১০০ জনের মধ্যে অন্তত চারজনের মৃতু্য হয়। এমপক্সের দুটি ধরন আছে, ক্লেইড ১ ও ক্লেইড ২। এর আগে ২০২২ সালে ক্লেইড ২-এর তুলনামূলক মৃদু সংক্রমণ চলাকালে জনস্বাস্থ্যের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু এবার অনেক প্রাণঘাতী ক্লেইড ১-এর প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে। এই রোগের নতুন একটি ধরন দ্রম্নত ছড়িয়ে পড়তে থাকায় ও এর উচ্চমৃতু্য হারের কারণে বিজ্ঞানীরা উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছেন। এই পরিস্থিতিতে বুধবার একটি জরুরি কমিটি ডাবিস্নউএইচও'র মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসাসের সঙ্গে দেখা করে রোগটির প্রাদুর্ভাব 'আন্তর্জাতিক উদ্বেগ তৈরি করার মতো জরুরি স্বাস্থ্য অবস্থা' বা পিএইচইআইসি তৈরি করেছে কিনা তা নিয়ে আলোচনা করেন। এরপর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দুই বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো এমপক্সকে বৈশ্বিক জরুরি স্বাস্থ্য অবস্থা ঘোষণা করে। পিএইচইআইসি অবস্থা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বোচ্চ স্তরের সতর্কতা। এই সতর্কতা জারি করা হয় কোনো একটি রোগকে নিয়ন্ত্রণের জন্য গবেষণা, তহবিল ও বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্য পদক্ষেপে গতি আনার জন্য। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গেব্রেইয়েসাস বলেছেন, আফ্রিকার ভেতরে ও বাইরে রোগটির ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা 'খুব উদ্বেগজনক। এই প্রাদুর্ভাব থামানো ও জীবন রক্ষার জন্য একটি সমন্বিত আন্তর্জাতিক উদ্যোগ প্রয়োজন।' গত বছরের সেপ্টেম্বরের দিকে ক্লেইড ১ ভাইরাসটিতেও একটি পরিবর্তন ঘটেছে। মিউটেশনের মাধ্যমে পরিবর্তিত হওয়া ভাইরাসগুলোকে ক্লেইড ১বি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে আর এটি দ্রম্নত ছড়াচ্ছে। একজন বিজ্ঞানী এমপক্সের এই ধরনটিকে 'এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বিপজ্জনক' বলে আখ্যা দিয়েছেন। চলতি বছরের শুরু থেকে ডিআর কঙ্গোতে ১৩ হাজার ৭০০ জনের বেশি এমপক্স রোগী শনাক্ত হয়েছেন আর তাদের মধ্যে অন্তত ৪৫০ জনের মৃতু্য হয়েছে। তারপর থেকে ডিআর কঙ্গোর প্রতিবেশী দেশ বুরুন্ডি, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, কেনিয়া ও রুয়ান্ডাতেও রোগটি ছড়িয়েছে।