সৌদি তেল স্থাপনায় হামলা ঘিরে উত্তেজনা

প্রকাশ | ১৬ মে ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি পাম্প স্টেশন
সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে সৌদি তেলবাহী ট্যাঙ্কারে অন্তর্ঘাত হামলা চালানোর দুই দিন পর এবার দুটি তেল স্থাপনায় হামলা ঘিরে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। গণমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার রাজধানী রিয়াদ থেকে ৩২০ কিলোমিটার দূরে দুটি পাম্পিং স্টেশনে ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটে। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স ইয়েমেনে সৌদি আরবের 'ধারাবাহিক আগ্রাসন ও অবরোধের' জবাবে 'গুরুত্বপূর্ণ' দুটি সৌদি স্থাপনায় হুতিরা ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলে এর আগে জানিয়েছিল হুতিদের পরিচালিত মাসিরাহ টিভি। ইয়েমেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারকে ফের ক্ষমতায় বসাতে চার বছর ধরে হুতিদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন একটি জোট বাহিনী। ইয়েমেনের এই যুদ্ধকে সৌদি আরব ও ইরানের 'ছায়া' যুদ্ধ হিসেবে দেখা হয়। এর আগেও হুতিরা সৌদি শহরগুলোতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে; কিন্তু দুটি সৌদি সূত্র জানিয়েছে, এই প্রথমবারের মতো রাষ্ট্র পরিচালিত আরামকো কোম্পানির একটি স্থাপনায় ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। আরামকো জানিয়েছে, হামলার পর তারা পেট্রোলাইন নামে পরিচিত ইস্ট-ওয়েস্ট পাইপলাইনটির অবস্থা খতিয়ে দেখার জন্য তা সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে। এই পাইপলাইনটি দিয়ে প্রধানত সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলীয় তেলক্ষেত্রগুলো থেকে পশ্চিমাঞ্চলীয় মদিনা শহরের নিকটবর্তী ইয়ানবু বন্দরে অপরিশোধিত তেল পাঠানো হয়। বিশ্বের বৃহত্তম তেল রপ্তানিকারক দেশ সৌদি আরবের জ্বালানিমন্ত্রী জানিয়েছেন, হামলার পর পাম্প স্টেশন দুটিতে আগুন ধরে যায়, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হলেও একটি স্টেশনের কিছুটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে এতে অপরিশোধিত তেল ও পেট্রোলিয়াম দ্রব্যের সরবরাহ ও রপ্তানি বিঘ্নিত হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি। সৌদি আরবের পাম্পিং স্টেশনে হামলা হয়েছে, এমন খবর ছড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই বিশ্ববাজারে তেলের মূল্য প্রায় এক থেকে দেড় শতাংশ বেড়ে যায়। এর আগে রোববার পারস্য উপসাগরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) উপকূলের কাছে দুটি সৌদি তেলবাহী ট্যাঙ্কারসহ চারটি জাহাজে হামলা হয়। একে 'সন্ত্রাসী হামলা' বলে অভিহিত করেছে সৌদি মন্ত্রিপরিষদ। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত অন্য দুটি জাহাজের একটি নরওয়ের পতাকাবাহী ও অপরটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের পতাকাবাহী তেল ট্যাঙ্কার। গত রোববার ফুজাইরা বন্দরের কাছে ওই হামলায় সৌদি নৌযান দুটির 'উলেস্নখযোগ্য পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি' হয়েছে। ওই ঘটনায় বিভিন্ন দেশের চারটি জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কেউ হতাহত হয়নি বলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এ 'অন্তর্ঘাতমূলক হামলা' বৈশ্বিক তেল সরবরাহের নিরাপত্তাকে ঝুঁকিতে ফেলবে বলে আশঙ্কা সৌদি আরবের। এ ঘটনার পর ওই এলাকায় ভ্রমণের বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে মার্কিন নৌ চলাচল কর্তৃপক্ষ। এক বিবৃতিতে সেসময় সৌদি জ্বালানিমন্ত্রী খালিদ আল-ফালিহ বলেন, আরব (পারস্য) উপসাগর অতিক্রম করার সময় সৌদি আরবের দুটি তেলের ট্যাংকার ফুজাইরা উপকূলের কাছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে অন্তর্ঘাতমূলক হামলার শিকার হয়েছে। নৌযান দুটির একটি রাস তানুরা বন্দর থেকে সৌদি (আরবের) অপরিশোধিত তেল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি আরামকোর ক্রেতাদের কাছে যাচ্ছিল।'