উপসাগরে উত্তেজনা

আলোচনায় তেহরানের সাড়া মেলেনি :ট্রাম্প

ম ইরানের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছে বেইজিং ম ইরান যুদ্ধ চায় না :জানালেন জাভেদ জারিফ

প্রকাশ | ১৯ মে ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
ইরানের সঙ্গে উত্তেজনা বাড়াতে গণমাধ্যম উসকানিমূলক ও মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করছে বলে অভিযোগ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে আলোচনার জন্য ট্রাম্প প্রস্তুত থাকলেও তেহরানের পক্ষ থেকে কোনো ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এদিকে, পারস্য উপসাগরে থাকা মার্কিন যুদ্ধজাহাজে হামলার হুশিয়ারি দিয়েছে ইরান। চলমান উত্তেজনার মধ্যেই তেহরানের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছে বেইজিং। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স সম্প্রতি পারস্য উপসাগরে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ পাঠানো নিয়ে উত্তেজনা দেখা দেয় তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে। যেকোনো সময় দেশ দুটির মধ্যে যুদ্ধ লেগে যেতে পারে বলেও বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। তবে এমন খবর উড়িয়ে দিয়েছেন খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধে জড়াতে চায় না। গণমাধ্যমকে দোষারোপ করে ট্রাম্প বলেন, তেহরানের সঙ্গে উত্তেজনা বাড়াতে মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যমগুলো। ট্রাম্প বলেন, 'তারা সবসময় আমাকে নিয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করেছে। এখন তারা ইরান নিয়ে যা ইচ্ছা তাই প্রচার করছে। আর তাদের এই বানোয়াট সংবাদ ইরানকে বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলছে।' একই সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইরানের সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি তেহরানের কাছে ওয়াশিংটনের টেলিফোন নম্বর পাঠানো হলেও কোনো ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি। এদিকে, পারস্য উপসাগরে অবস্থান করা যুক্তরাষ্ট্রের রণতরীতে স্বল্পপালস্নার ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র সহজেই আঘাত হানতে পারে বলে হুশিয়ারি দিয়েছে ইরানের বিপস্নবী রক্ষীবাহিনী (রেভুলিউশনারি গার্ড)। এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ করার সামর্থ্য নেই বলেও জানানো হয়। আর দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তেহরানবাসী। এক জন বলেন, যুবসমাজ সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেক চিন্তায় আছে। কী করবে কেউ ভেবে পাচ্ছে না। তারা বাইরে চলে যেতে পারে। আরেকজন জানান, কেউ যখন আপনাকে ভয় দেখাবে তখন বুঝবেন সে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত নয়। যদি সে যুদ্ধ করতে চাইতো, তাহলে সরাসরি আঘাত করতো। যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে ভয় পায়। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই ইরানের প্রতি জোরালো সমর্থন জানিয়েছে চীন। বেইজিংয়ে ইরানে এক বৈঠকে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, একতরফা মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বিরোধী ও স্বার্থ সুরক্ষায় তেহরানকে সমর্থন জানাবে চীন। উলেস্নখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যেই চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-এর সঙ্গে বৈঠক করেছেন চীন সফররত ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ। উপসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই শুক্রবার এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইরানের প্রধান রপ্তানি তেলের অন্যতম ক্রেতা দেশ চীন। ইরান যুদ্ধ চায় না : জাভেদ জারিফ এদিকে, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ বলেছেন, তার দেশ যুদ্ধ চায় না। শনিবার বেইজিং সফররত জারিফ এ কথা বলেছেন। জারিফ বলেছেন, তেহরান যেহেতু যুদ্ধ চায় না, সে কারণে তিনি বিশ্বাস করেন না, এই অঞ্চলে যুদ্ধ বাধতে পারে। এছাড়া ইরানকে মোকাবেলা করার মতো বিভ্রান্তিতে কোনো দেশ নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি। জারিফ বলেছেন, 'কোনো যুদ্ধ হবে না। কারণ আমরা কোনো যুদ্ধ চাই না কিংবা এই অঞ্চলে ইরানকে মোকাবেলা করার মতো ধারণা বা মোহ কারও নেই।' ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি থেকে গত বছর যুক্তরাষ্ট্র বের হয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে তেহরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল শুরু করে ওয়াশিংটন। এরপর চুক্তি থেকে আংশিক সরে যাওয়ার কথা জানিয়ে দেয় তেহরান। তারপর থেকে ইরানের ওপর ক্রমবর্ধমান চাপ বৃদ্ধির অংশ হিসেবে গত সপ্তাহে উগসাগরীয় এলাকায় বিমানবাহী রণতরী ও ক্ষেপণাস্ত্রসহ যুদ্ধসরঞ্জাম মোতায়েন করে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের হুমকি মোকাবেলায় ওয়াশিংটন এই পদক্ষেপ নেয়ার কথা বললেও তেহরান যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে 'মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ' শুরুর অভিযোগ এনেছে।