ভারতের ধর্মের নগরী বারানসিতে এবারও মোদির জোয়ার

প্রকাশ | ১৯ মে ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি
ভারতে হিন্দুদের পবিত্র নগরী হিসেবে পরিচিত বারানসিতে ভোটারদের মধ্যে এবারও নরেন্দ্র মোদিরই গুণগান। সাত পর্বের লোকসভা নির্বাচনের শেষ ধাপে আজ ভোট হবে উত্তরপ্রদেশের এই তীর্থ নগরীতে। এখানে বিজেপি নেতা মোদির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কংগ্রেসের অজয় রাই এবং বহুজন সমাজ পার্টি (বসপা), সমাজবাদী পার্টি (সপা) ও রাষ্ট্রীয় লোকদলের (আরএলডি) সমন্বয়ে গঠিত জোটের প্রার্থী শালিনী যাদব। সংবাদসূত্র : এনডিটিভি ভোটের চার দিন আগে শহরের অলি-গলি ঘুরে মন্দির-উপাসনালয়ের পুরোহিত, ক্ষুদ্র দোকানদারসহ নানা পেশার লোকজনের মুখে নরেন্দ্র মোদিরই সম্ভাবনার কথাই উঠে এসেছে। তবে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ভিন্ন মনোভাবও রয়েছে, তাদের বেশির ভাগই খেটে খাওয়া মানুষ। উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল আরএসএস-এর এক সময়ের সদস্য মোদি পাঁচ বছর আগে দিলিস্নর সিংহাসনে বসার পর পাল্টে গেছে বারানসির চিত্র। শহরের রাস্তাঘাট এখন অনেক প্রশস্ত, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নও। মন্দির ও তার আশপাশের অলিগলির সরু রাস্তাগুলোও পাকা করা হয়েছে। কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের আশপাশের সরু গলিগুলোকে ৫০ থেকে ৭০ মিটার প্রশস্ত করা হয়েছে। বিমানবন্দর ও রেল স্টেশনও আধুনিকায়ন করা হয়েছে। তৈরি হয়েছে বেশ কয়েকটি বড় হোটেল-রেস্তোরাঁ। বারানসিতে বিদু্যতের আলোর ঝলকানিতে হারিয়ে গেছে রাতের অন্ধকার। এই উন্নয়নই ভোটে মোদিকে এগিয়ে রাখছে বলে মনে করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এদিকে, মোদি ভক্তরা খুব বেশি আশাবাদী হলেও বিজেপির কাছ থেকে আসনটি ভাগিয়ে নিতে চেষ্টা করছে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোও। কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টির কার্যালয়ে নেতা-কর্মীদের ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে। তাদের বাক্সেও বেশ ভোট পড়বে বলেই মনে করেন পত্রিকা বিক্রেতা অনিল নাথ। তিনি বলেন, 'এই আসনে হিন্দু যাদব সম্প্রদায় সংখ্যাগরিষ্ঠ। সমাজবাদী পার্টির একটি অংশ রয়েছে, যারা সাংগঠনিকভাবে খুব শক্তিশালী। দলিত ও যাদব সম্প্রদায়ের ঘরে ঘরে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলে দেখবেন, সেখানে মোদিবিরোধী হাওয়া আছে। তার কারণও আছে। সেটা হচ্ছে, নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির একটা বিশাল অংশ; যারা কর্মহীন হয়ে আছেন, তারা নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে।' গুজরাটের নিম্নবিত্ত এক ঘাঞ্চি পরিবারে ১৯৫০ সালে জন্ম নরেন্দ্র মোদির। গুজরাট রেল স্টেশনে চায়ের দোকান ছিল তার বাবার। ছাত্র হিসেবে সাদামাটা হলেও বিতর্কে তুখোড় ছিলেন মোদি। ১৯৭১ সালে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা আরএসএস-এর প্রচারক হিসেবে রাজনীতিতে আসেন তিনি। উগ্র সাম্প্রদায়িক ও বিভাজনের রাজনীতির কারণে বিতর্কিত হলেও ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে মোদির নেতৃত্বেই বিপুলভাবে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় ফেরে বিজেপি। ২০১৪ সালে লোকসভার নির্বাচনে গুজরাট থেকে এসে বারানসিতে ব্যাপক ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়ে ইতিহাস গড়েছিলেন নরেন্দ্র মোদি। ওই নির্বাচনে অরবিন্দ কেজরিওয়াল ছাড়া কারোরই জামানত ছিল না। হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সুজিত সেন বলেন, 'বারানসি উত্তরপ্রদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর। জাতীয় রাজনীতির বাতিস্তম্ভ বলা হয়ে থাকে এই শহরকে। হিন্দু ধর্ম বলুন, বৌদ্ধ ধর্ম বলুন, তাদের সবার কাছে এই বারানসির গুরুত্ব অন্য রকম। নরেন্দ্র মোদি হিন্দুত্ববাদের সেই দর্শনকে নিয়ে রাজনীতিতে এসেছেন।