এক মাস আট দিনের ভোটযাত্রা

বিজেপির জালিয়াতি ও তৃণমূলের বোমাবাজিতে ভোটযুদ্ধ শেষ

ম শেষ দফায় ৯১৮ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণে ১০ কোটির বেশি ভোটারের ভোটাধিকার প্রয়োগ ম বিজেপির মোদি, কংগ্রেসের শত্রম্নঘ্ন সিনহা ছাড়াও এই পর্বে লড়েছেন তৃণমূলের তারকাপ্রার্থী নুসরাত-মিমি ম ২৩ মে একযোগে ফল ঘোষণা

প্রকাশ | ২০ মে ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
যাযাদি ডেস্ক এক মাস আট দিন দীর্ঘ সাত পর্ব পেরিয়ে রোববার শেষ হয়েছে ভারতের সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনের ভোটযুদ্ধ। প্রথম ছয় দফার মতো শেষ ধাপেও দিলিস্ন দখলের লড়াইয়ে অংশগ্রহণ নেয়া দলগুলোর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, জালিয়াতি এবং বিশৃঙ্খলার অভিযোগ উঠেছে। এদিন পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে রাজ্যে অগ্নিসংযোগ, বোমাবাজি এবং উত্তরপ্রদেশে ক্ষমতাসীন জোট বিজেপির বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া বাকি আসনগুলোতে মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবেই ভোটগ্রহণ হয়। সংবাদসূত্র : এনডিটিভি ভোটের আগের দিন শনিবার রাতে পশ্চিমবঙ্গের ভাটপাড়ায় বোমা বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগের পর রোববার সকালেও রাজ্যের কয়েকটি স্থানে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। আটক করা হয়েছে রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের এক নেতাকে। এবারের লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছিল ১১ এপ্রিল। রোববার শেষ ধাপে সকাল থেকে আটটি রাজ্যের ৫৯টি আসনে ভোটগ্রহণের মধ্য দিয়ে মোট সাত দফার ভোটযুদ্ধ শেষ হয়। কেন্দ্রের ক্ষমতার পালাবদল প্রশ্নে এবার সবকটি প্রতিদ্বন্দ্বী দলের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে এই ধাপে অনুষ্ঠিত হওয়া পশ্চিমবঙ্গের আসনগুলো। গত বছর বিধানসভা নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি রাজ্যে পরাজয়ের পর পশ্চিমবঙ্গসহ পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে জয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করে বিজেপি। আর তিন দশকের বাম শাসন হটিয়ে ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতায় আসা তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে লোকসভা নির্বাচন হয়ে উঠেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতার মর্যাদার লড়াই। শেষ দফার ভোটে মোট ৯১৮ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণে ১০ কোটির বেশি ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এদিন উত্তরপ্রদেশের ১৩টি, পাঞ্জাবের ১৩টি, পশ্চিমবঙ্গের ৯টি, বিহারের আটটি, মধ্যপ্রদেশের আটটি, হিমাচল প্রদেশের চারটি, ঝাড়খন্ডের তিনটি এবং চন্ডিগড়ের একটি আসনে ভোটগ্রহণ হয়। রোববারের নির্বাচনে হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে ছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ ছাড়া অন্য হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনোজ সিনহা, রবিশঙ্কর প্রসাদ, এইচ কে বাদল এবং হরদীপ সিং পুরি। ভাগ্য নির্ধারণ হয়েছে কিরণ খের, সানি দেওল, রবি কিষাণের মতো বিজেপির তারকাপ্রার্থীদের। ভাগ্য নির্ধারণ হয়েছে তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌগত রায়, তারকাপ্রার্থী মিমি চক্রবর্তী ও নুসরাত জাহানেরও। কংগ্রেসের শত্রম্নঘ্ন সিনহা ও মীরা কুমারের মতো শক্তিশালী প্রার্থীদেরও ভাগ্য নির্ধারণ হয় এদিন। ভোটগ্রহণের আগের দিন রাতে পশ্চিমবঙ্গের ভাটপাড়া অঞ্চলে সহিংসতার পর রাইদীঘি এলাকার মথুরাপুরে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এই সহিংসতার জন্য গ্রামবাসী শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে দায়ী করেছে। এ ছাড়া রাজ্যটির কদমপুর নিউ টাউন এলাকায় ২০১ নম্বর কেন্দ্রের কাছে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) অফিস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার জন্যও তৃণমূলকে দায়ী করেছে দলটি। এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়ের ভাতিজা ও দলীয় প্রার্থী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, 'স্বয়ং ঈশ্বরও তাদের পরাজয় ঠেকাতে পারবে না'। ভোট দেয়ার পর অভিষেক বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গে ৪২টি আসনে জয়ের বিষয়ে আমরা আশাবাদী। বিজেপি একটি সাম্প্রদায়িক দল ও সরকার। মানুষ তাদের উৎখাতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।' অন্যদিকে, উত্তরপ্রদেশের চান্দৌলিতে বিজেপির বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ উঠেছে। ওই এলাকার জীবনপুর গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, তাদের গ্রামের তিনজন লোক জোর করে তাদের আঙুলে ভোটের কালি লাগিয়ে দেয়ার পাশাপাশি তাদের প্রত্যেকের হাতে ৫০০ রুপির নোট গুঁজে দিয়ে গেছে। তাদের ভাষ্যমতে, 'ওই তিনজনই বিজেপির লোক। ওরা আমাদের কাছে জানতে চাইল, আমরা তাদের পার্টির হয়ে ভোট দেবো কিনা? ওরা বলল, এখন তোমরা ভোট দিতে পারবে না। এ কথা কাউকে বলো না।'