নির্বাচনের বাকি আর ৬ দিন
আমেরিকায় আগাম ভোট পড়েছে সাড়ে ৪ কোটি
ওয়াশিংটনে আগাম ভোটের ব্যালটে আগুন, শত শত ব্যালটের ক্ষতি নির্বাচিত হলে বিদেশে যুদ্ধ না করার প্রতিশ্রম্নতি দিলেন ট্রাম্প
প্রকাশ | ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য বাকি আর মাত্র ছয় দিন। দুই প্রার্থী বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রচারণায় ব্যস্ত। উভয় প্রার্থীই ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। দেশটির ভোটাররা আগামী ৫ নভেম্বর তাদের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে ভোট দেবেন। তবে আগাম ভোটদান আগে থেকেই শুরু হয়ে গেছে এবং এখন পর্যন্ত দেশটির বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে আগাম ভোট দিয়েছেন প্রায় সাড়ে চার কোটি মানুষ। তথ্যসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স, আনাদোলু
আগামী ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের আগে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৫ মিলিয়ন বা সাড়ে চার কোটি আমেরিকান আগাম ভোট দিয়েছেন বলে একটি পর্যবেক্ষক সংস্থার তথ্যে দেখা গেছে। 'ইউনিভার্সিটি অব ফ্লোরিডা'র 'ইলেকশন ল্যাব' প্রায় চার কোটি ৪০ লাখ ৮৭ হাজার ব্যালট গণনা করেছে। ডাকের মাধ্যমে বা ব্যক্তিগতভাবে সশরীরে উপস্থিত হয়ে ভোটাররা এসব আগাম ভোট দিয়েছেন। যারা আগেভাগে ভোট কেন্দ্রে গেছেন এবং যারা তাদের ব্যালটে মেইল ??করেছেন, তাদের সংখ্যা প্রায় সমান।
নির্বাচনের দিনটি মঙ্গলবার, অর্থাৎ সপ্তাহের মাঝামাঝি সময়ে কর্মদিবস হওয়ায় অনেক ভোটার কেন্দ্রে যেতে পারবেন না, আর এই কারণে আমেরিকার প্রায় প্রতিটি অঙ্গরাজ্যে ভোটারদের আগাম ভোট দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
এখন বড় প্রশ্ন, এবার কি আমেরিকা ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নারী প্রেসিডেন্ট পাবে, নাকি দ্বিতীয় মেয়াদে জয় পেয়ে ক্ষমতায় বসবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যেহেতু নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘনিয়ে এসেছে। ভোটারদেরও এই নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ রয়েছে। হোয়াইট হাউসে যাওয়ার দৌড়ে কে এগিয়ে সেসব বিষয়ে নজর রয়েছে সবার।
শুরু থেকে প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু গত জুলাইয়ের শেষ দিকে প্রার্থী ঘোষণার পর নির্বাচনের মাঠে নামেন কমালা হ্যারিস। এসেই কমলা ছোট একটা 'লিড' নিয়েছেন ট্রাম্পের চেয়ে। সম্প্রতি 'এবিসি নিউজে'র এক জরিপে দেখা গেছে, ৪৮ শতাংশ সমর্থন নিয়ে এগিয়ে আছেন কমলা হ্যারিস, বিপরীতে মাত্র এক শতাংশ কম সমর্থন ডোনাল্ড ট্রাম্পের। অবশ্য নির্বাচনের প্রচারণার প্রথম দিকে কিছুটা হোঁচট খেয়েছিলেন কমলা। পরে আগস্টের শেষে এসে তিনি চার পয়েন্ট নিয়ে এগিয়ে যান। এরপর গত ১০ সেপ্টেম্বর এই দুই প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর মধ্যে যে বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়, তা প্রায় ৭০ মিলিয়ন (সাত কোটি) মানুষ দেখেছিল। ওই বিতর্কের পর দুইজনেরই জনপ্রিয়তা তুলনামূলক স্থিতিশীল ছিল। তবে গত কয়েকদিনে ট্রাম্প ও হ্যারিসের মধ্যে এই ব্যবধান আরও কমে আসছে। বিভিন্ন জরিপে সেসব চিত্র অনেকটাই স্পষ্ট হচ্ছে।
আগাম ভোটের ব্যালটে আগুন
এদিকে, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগাম ভোট নেওয়ার জন্য রাখা ব্যালট 'ড্রপ বক্সে' অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। দেশটির কিছু রাজ্যে অগ্রিম ভোট গ্রহণের জন্য এসব ড্রপ বক্স ব্যবহার করে থাকে। সোমবার ভ্যাঙ্কুয়েভারে এ ধরনের দুটি বাক্সে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এটি ওয়াশিংটন রাজ্যের একটি ছোট শহর। প্রতিবেশী অরেগন রাজ্যের পোর্টল্যান্ড থেকে ১০ মাইলের মধ্যে এর অবস্থান।
এ ঘটনায় শত শত ব্যালটের ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া পোর্টল্যান্ডের দক্ষিণ-পূর্ব এলাকায় একটি ড্রপ বক্সে রাখা ডিভাইস থেকে আগুনের সূত্রপাত হলে তিনটি ব্যালটের ক্ষতি হয়। কর্মকর্তারা বলছেন, তারা আশা করছেন, এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা।
নির্বাচিত হলে বিদেশে যুদ্ধ না করার প্রতিশ্রম্নতি ট্রাম্পের
আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভ করলে বিদেশে যুদ্ধ না করার প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, 'আমি নির্বাচনে জিতলে কোনো মার্কিন সেনাকেও আর যুদ্ধের জন্য বিদেশে পাঠানো হবে না।' রোববার পেনসিলভানিয়া রাজ্যে এক নির্বাচনী প্রচারণা সভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় এই প্রতিশ্রম্নতি দেন ট্রাম্প।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শাসনামলে যতগুলো আন্তর্জাতিক সংকটে জড়িয়েছে আমেরিকা, সেসবের প্রত্যেকটির সমাধান করবেন তিনি এবং এক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেবেন ইউক্রেন ও গাজা সংঘাতকে।
উপস্থিত জনতাকে উদ্দেশ করে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, 'যদি কমলা হ্যারিস নির্বাচনে জয়ী হয়ে আগামী চার বছরের জন্য ক্ষমতা গ্রহণ করেন, তাহলে মধ্যপ্রাচ্য অন্তত আগামী চার দশক পর্যন্ত জ্বলবে এবং আমাদের সন্তানদের মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন সেনাঘাঁটিতে পাঠানো হয়েছে, তারা বেঘোরে মারা পড়বে। তাই কমলাকে ক্ষমতায় পাঠানোর অর্থ হলো লাখ লাখ মার্কিন তরুণ-তরুণীর জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলা। আমাদের ছেলে-মেয়েরা এমন সব দেশে যুদ্ধ করতে গিয়ে মারা যাচ্ছে, যেসব দেশের নামই হয়তো অনেকে মার্কিন নাগরিক শোনেননি। কিন্তু আমি প্রতিশ্রম্নতি দিচ্ছি, আপনারা যদি আমাকে জয়ী করেন, আমি কখনো কোনো যুদ্ধে মার্কিন সেনাদের পাঠাব না। আপনাদের সন্তানরা আপনাদের সংস্পর্শে থাকবে। বাড়ি থেকে হাজার হাজার মাইল দূরে অন্য কোনো দেশে বেঘোরে তাদের প্রাণ হারাতে হবে না।'