সৌদি আরবে চার হাজার বছর আগের শহরের সন্ধান

প্রকাশ | ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
সন্ধান পাওয়া সেই শহর
সৌদি আরবের মদিনা শহরের নিকটবর্তী মরুদ্যান খাইবারের কাছে সন্ধান মিলেছে সেখানকার প্রাচীন সভ্যতার হারিয়ে যাওয়া একটি শহরের। প্রত্নতাত্ত্বিকরা জানিয়েছেন, শহরটির বয়স অন্তত ৪ হাজার বছর। তারা আরও বলেছেন, হাজার হাজার বছর আগে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের যাযাবর পশুপালক জনগোষ্ঠী লোকালয় গড়ে তোলার প্রচেষ্টা শুরু করেছিলেন। সেই প্রচেষ্টারই একটি সাক্ষী এই হারিয়ে যাওয়া শহরটি। তথ্যসূত্র : এএফপি সৌদি ও ফ্রান্সের একদল প্রত্নতাত্ত্বিকের যৌথ প্রচেষ্টায় সম্প্রতি সন্ধান পাওয়া শহরটির নাম রাখা হয়েছে 'আল-নাতাহ'। প্রত্নতাত্ত্বিকের দলটির নেতৃত্ব দিয়েছেন ফ্রান্সের বিখ্যাত প্রত্নতত্ত্ববিদ গিলাম শালোঁ। আন্তর্জাতিক সাময়িকী 'পিএলওএস ওয়ানে' তাদের গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিতও হয়েছে। শালোঁ জানান, আল-নাতাহর স্থাপনা এবং সেখান থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন নিদর্শন পরীক্ষা করে তারা এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন, যিশুখ্রিষ্টের জন্মের অন্তত দুই হাজার ৪০০ বছর আগে, অর্থাৎ আজ থেকে তিন হাজার ৮০০ বছর আগে শহরটির পত্তন হয়েছিল। এ সময়টি হলো মানবসভ্যতার ব্রোঞ্জ যুগে প্রবেশের প্রারম্ভিককাল। দুই দশমিক ছয় হেক্টর আয়তনের আল-নাতাহকে ঘিরে রয়েছে ১৪ দশমিক পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি প্রাচীরের ধ্বংসাবশেষ। প্রাচীরটির বয়সও শহরটির সমান। প্রায় ৫০০ বাড়িঘর পাওয়া গেছে আল-নাতাহে। প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন বলছে, পত্তনের এক হাজার বছর পর, অর্থাৎ যিশুখ্রিষ্টের জন্মের এক হাজার ৪০০ বছর আগে জনশূন্য হয়ে পড়ে আল-নাতাহ। কিন্তু ঠিক কী কারণে হঠাৎ শহরটি জনশূন্য হয়ে গেল, তা এখনো জানতে পারেননি গবেষকরা।' শালোঁ বলেন, অন্য কোনো জাতি বা গোষ্ঠীর আক্রমণে এই শহরটি জনশূন্য হয়নি। কারণ সৌদির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আগ্নেয় শিলা বা ব্যাসল্ট দ্বারা গঠিত পর্বতমালা এই শহরটির সুরক্ষার জন্য যথেষ্ট ছিল। আল-নাতাহ যারা গড়ে তুলেছিলেন, সেই সময়ের হিসাবে স্থাপত্যবিদ্যায় বেশ অগ্রসর ছিলেন বলে জানিয়েছেন শালোঁ। কারণ যেসব বাড়ির ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে, সে সবের অনেকগুলোর গাঁথুনি এখনো মজবুত। এমনকি শহরটিতে কয়েকটি দ্বিতল বাড়িও ছিল। এ ছাড়া শহরটিতে একটি মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ, ব্রোঞ্জের তৈরি কুঠার ও ছোরা, তৈজসপত্র, চীনামাটির তৈরি পাত্র এবং মূল্যবান রত্নপাথর পাওয়া গেছে। প্রত্নতত্ত্ববিদ শালোঁ বলেন, 'ভূমধ্যসাগরের তীরে বর্তমান সিরিয়া, জর্ডান ও ইরাকে যখন মেসোপটেমিয়া সভ্যতা গড়ে উঠছিল, সে সময় পত্তন হয়েছিল আল-নাতাহর। তবে মেসোপটেমিয়ার বিভিন্ন শহরের মতো এখানে রাজা-প্রজা ও ধনী-দরিদ্রের বিভাজন এত বেশি ছিল না; বরং তুলনামূলকভাবে অনেক সমতাপূর্ণ সমাজ ছিল আল-নাতাহে।'