উপসাগরে উত্তেজনা

যুদ্ধ চাইলে সেটি হবে ইরানের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি :ট্রাম্প

বাগদাদের গ্রিন জোনে রকেট নিক্ষেপকে যুক্তরাষ্ট্র খুব গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে আরব উপসাগরে সর্বাধুনিক নিরাপত্তা টহল শুরু

প্রকাশ | ২১ মে ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কড়া হুশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যুদ্ধ চাইলে সেটিই হবে ইরানের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি। রোববার এক টুইটে তিনি এ হুশিয়ারি দিয়েছেন। এর আগে একইদিন সৌদি আরবও ইরানকে হুশিয়ার করেছিল। তারা জানিয়েছিল, ইরান যুদ্ধ চাইলে তারা সর্বশক্তি দিয়ে জবাব দিতে প্রস্তুত এবং যুদ্ধ এড়ানো ইরানের ওপরই নির্ভর করছে। গত সপ্তাহে সৌদি তেল স্থাপনায় ড্রোন হামলা ও রোববার বাগদাদের 'গ্রিন জোনে' রকেট নিক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় এসব হুশিয়ারি এলো। বাগদাদের 'গ্রিন জোনে' নিক্ষিপ্ত রকেটটি মার্কিন দূতাবাসের কাছে বিস্ফোরিত হয়। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স নিজের টুইটে ট্রাম্প বলেন, 'ইরান যদি যুদ্ধ চায়, তাহলে সেটিই হবে ইরানের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি। আর কখনোই যুক্তরাষ্ট্রকে হুমকি দিও না!' দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ চায় কিনা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে বৃহস্পতিবার ট্রাম্প বলেন, 'আশা করি না।' ইরানের এক আইন প্রণেতাও দুই দেশের উত্তেজনা নিরসনে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বাগদাদের 'গ্রিন জোনে' নিক্ষিপ্ত রকেট যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে আঘাত করেনি, এতে কেউ হতাহত হয়নি এবং উলেস্নখযোগ্য কোনো ক্ষয়ক্ষতিও হয়নি। কোনো পক্ষ রকেট নিক্ষেপের দায় স্বীকার না করলেও এই ঘটনাটি যুক্তরাষ্ট্র 'খুব গুরুত্বের' সঙ্গে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। ই-মেইলে পাঠানো এক বিবৃতিতে ওই কর্মকর্তা বলেছেন, 'গত দুই সপ্তাহ ধরে আমরা পরিষ্কারভাবে বলে আসছি এবং আবারও বলছি, যুক্তরাষ্ট্রের লোকজন ও স্থাপনার ওপর হামলা সহ্য করা হবে না এবং নিষ্পত্তিমূলক ভঙ্গিতে এর জবাব দেয়া হবে। ইরান সমর্থিত মিলিশিয়া বাহিনীগুলো বা এ রকম কোনো বাহিনীর কোনো অংশ এ ধরনের কোনো হামলা চালালে আমরা ইরানকে দায়ী বলে গণ্য করবো এবং সেই অনুযায়ী তাদের জবাব দেবো।' সৌদি আরবও জানিয়েছে, তারা যুদ্ধ চায় না, কিন্তু আক্রান্ত হলে সর্বশক্তি দিয়ে জবাব দেবে। উলেস্নখ্য, গত মঙ্গলবার সৌদি আরবে আরামকো তেল কোম্পানির দুটি অয়েল পাম্পিং স্টেশনে ড্রোন হামলা হয়। ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত শিয়া হুতি গোষ্ঠী ওই হামলার দায় স্বীকার করে। হুতিদের এ হামলার নির্দেশ তেহরান দিয়েছে বলে অভিযোগ রিয়াদের। এর দুই দিন আগে পারস্য উপসাগরের সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপকূলে চারটি জাহাজে আন্তর্ঘাতমূলক হামলা হয়। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজগুলোর মধ্যে দুটি সৌদির মালিকানাধীন। এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় শনিবার থেকে আরব উপসাগরে (পারস্য উপসাগর) গাল্ফ কো-অপারেশন কাউন্সিলভুক্ত (জিসিসি) দেশগুলো 'সর্বাধুনিক নিরাপত্তা টহল' শুরু করেছে বলে বাহরাইনভিত্তিক মার্কিন পঞ্চম নৌবহর রোববার জানিয়েছে। তবে ওই সব হামলার কোনোটির সঙ্গেই তারা জড়িত নয় বলে দাবি করেছে ইরান। যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে ইরানের ওপর কঠোর অর্থনেতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পর থেকে ওয়াশিংটন-তেহরানের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। মার্কিন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরও জোরদার হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেলে মধ্যপ্রাচ্যে বিমানবাহী রণতরী বহর ও পারমাণবিক বোমা বহনে সক্ষম বি-৫২ বোমারু বিমান মোতায়েন করে যুক্তরাষ্ট্র। তারপর থেকে পক্ষ দুটির মধ্যে যেকোনো সময় যুদ্ধ বেধে যেতে পারে আশঙ্কায় ওই অঞ্চলজুড়ে প্রবল উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।