জরিপের ফল আসতেই থমকে গেল মহাজোট গঠন!

সোনিয়ার সঙ্গে বৈঠক বাতিল করলেন মায়াবতী

প্রকাশ | ২১ মে ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
সোনিয়া গান্ধী মায়াবতী
লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন ভারতীয় জনতা পার্টিকে (বিজেপি) ঠেকাতে দেশটির প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতৃত্বে মহাজোট গঠনের তৎপরতায় ভাটা পড়েছে। উত্তরপ্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও বহুজন সমাজ পার্টির নেত্রী মায়াবতী রাজধানী দিলিস্নতে কংগ্রেসের প্রধান রাহুল গান্ধী ও ইউপিএ চেয়ারপাসন সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা ছিল সোমবার। কিন্তু রোববার ভোটগ্রহণ শেষে বুথ ফেরত জরিপের ফল আসার পর এই বৈঠক বাতিল করেছেন মায়াবতী। সংবাদসূত্র : এনডিটিভি, ওয়ান ইনডিয়া তবে তার এই বৈঠক বাতিলের খবরের ব্যাপারে পরস্পর বিপরীতমুখী তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। 'এনডিটিভি' এক প্রতিবেদনে বলছে, বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠকের জন্য সোমবার দিলিস্নতে আসছেন না মায়াবতী। দেশটির বিরোধীদলগুলোকে একই মঞ্চে নিয়ে এসে মোদিবিরোধী মহাজোট গঠনের প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হতো মায়াবতীর সঙ্গে বৈঠকের এই উদ্যোগকে। সোমবার বহুজন সমাজ পার্টির (বিএসপি) নেতা মায়াবতীর শীর্ষ সহযোগী সতীশ চন্দ্র মিশ্র দেশটির সংবাদসংস্থা 'এএনআই'কে বলেছেন, দিলিস্নতে সোমবার মায়াবতীর কোনো অনুষ্ঠান কিংবা বৈঠক নেই। তিনি এদিন লক্ষ্নৌতে ছিলেন। ১৭তম লোকসভা নির্বাচনের ভোট শেষে দেশটির বিভিন্ন সংস্থা ও গণমাধ্যমের বুথ ফেরত জরিপে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের ভূমিধস জয়ের আভাস আসার একদিন পর মায়াবতী কংগ্রেসের শীর্ষ দুই নেতার সঙ্গে তার বৈঠক বাতিল করেন। তবে সোমবার সকালের দিকে তিনি লক্ষ্নৌতে তার জোটসঙ্গী অখিলেশ যাদবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। ২৩ মে আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণার আগে রাহুল এবং সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে মায়াবতী সাক্ষাৎ করতে পারেন বলে দেশটির কিছু গণমাধ্যম খবর দিয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুর মধ্যস্থতায় মায়াবতী কংগ্রেসের সঙ্গে বৈঠকে বসতে রাজি হয়েছেন। নাইডু লক্ষ্নৌতে মায়াবতীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এর আগে অন্তত দুবার রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করেন অন্ধ্রপ্রদেশের এই মুখ্যমন্ত্রী। রোববার দিলিস্নতে রাহুল গান্ধী এবং সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করেন তেলেগু দেশম পার্টির নেতাও। সোমবার সন্ধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তার বৈঠক হয়েছে। ৫৪৩ আসনের লোকসভায় বিজেপি তিন শতাধিক আসনে জয়ী হতে যাচ্ছে বলে প্রায় সব বুথফেরত জরিপেই বলা হচ্ছে। অন্যদিকে, প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস এবং জোটসঙ্গীরা ১২২টি আসন পেতে পারে। এছাড়া প্রধান এই দুই দলের বাইরের দলগুলো পেতে পারে ১১৭ আসন। লোকসভা নির্বাচনের শেষ দফার ভোটের আগেই ক্ষমতাসীন বিজেপি-বিরোধী মহাজোট গঠনে তৎপর হয়ে ওঠে দেশটির প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। আগামী ২৩ মে ভোটের চূড়ান্ত ফল ঘোষণার আগেই এই তৎপরতা দৃশ্যমান হয়। এদিকে, বুথফেরত জরিপের ফল আসার আগেই কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জোটসঙ্গী হিসেবে তামিলনাডুর রাজনৈতিক দল ডিএমকে, ওড়িশার বিজেডি, অন্ধ্রপ্রদেশের ওয়াইএসআর কংগ্রেস এবং তেলেঙ্গানার রাষ্ট্রীয় সমিতির (টিআরএস) মতো আঞ্চলিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে মহাজোট গঠনে যোগাযোগ করে কংগ্রেস। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি-বিরোধী ঐক্যকে অটুট করে তোলার লক্ষ্যে কংগ্রেস এই প্রচেষ্টা শুরু করে। এছাড়া বিহার এবং ঝাড়খন্ডের স্থানীয় জনতা দল (সেকু্যলার), মহারাষ্ট্রের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে কংগ্রেস। এবারের নির্বাচনে মোদিকে হারানোর লক্ষ্যে এসব দলের সঙ্গে মহাঐক্য গড়ার কাজ শুরু করে দলটি।