বিজেপিকে আবারও উজাড় করে দিল উত্তরপ্রদেশ

প্রকাশ | ২৪ মে ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
লোকসভায় ভারতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি এমপি পাঠায় উত্তরপ্রদেশ। ভারতের রাজনীতিতে তাই বরাবরের চালু কথা- উত্তরপ্রদেশ যার, দেশ তার। এমনও বলা হয়, উত্তরপ্রদেশের দখল নিতে পারলেই মসৃণ হয় প্রধানমন্ত্রিত্বের পথ। ভারতীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্রধানমন্ত্রী উপহার দিয়েছে এই রাজ্যই। নেহরু থেকে চন্দ্রশেখর, ইন্দিরা থেকে রাজিব- সংখ্যাটা নেহাত কম নয়। ২০১৪ লোকসভাতেও উত্তরপ্রদেশ দু'হাত ভরে আশীর্বাদ করেছিল মোদি-শাহ জুটিকে। উত্তরপ্রদেশের দায়িত্ব হাতে নিয়ে এই রাজ্যে গেরুয়া ঝড় তুলেছিলেন অমিত শাহ। আর তাতেই সহজ হয়ে গিয়েছিল মোদির প্রধানমন্ত্রী হওয়ার লড়াই। ৮০টি আসনের লড়াইয়ে রাজ্যকে কার্যত বিরোধীশূন্য করে ৭৩টি আসন তুলে নিয়েছিল তারা। ২০১৯ সালেও তাই বিশেষ নজর ছিল উত্তরপ্রদেশের দিকে। শাসক এনডিএ হোক বা কংগ্রেস বা মায়া-মুলায়ম, উত্তরপ্রদেশের দখল নিতে তৎপরতা দেখিয়েছিল সব পক্ষই। কেন্দ্রে ও রাজ্যে ক্ষমতায় থাকার পরও রামমন্দির তৈরি করতে না পারা, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, গোরক্ষকদের তান্ডব, লাভ জিহাদ, কোনো ইসু্যই হাতছাড়া করতে চায়নি বিরোধীরা। অন্যদিকে, নজর ছিল জাতপাতের সমীকরণ দিয়ে ভোটের বাক্সের হিসাব উল্টে দেয়া। সেই লক্ষ্যেই কাজ করছিলেন সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব। উত্তরপ্রদেশের দুই সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতী আর মুলায়মের চির শত্রম্নতার প্রাচীর ভেঙে সমাজবাদী পার্টি আর বহুজন সমাজ পার্টিকে এক জায়গায় এনেছিলেন তিনি। নিজের বাবা মুলায়মকে কৌশলে সরিয়ে দলের মধ্যে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার পাশাপাশি হাত মিলিয়েছিলেন মায়াবতীর সঙ্গে। তৈরি হয়েছিল 'ফুপু-ভাতিজা' মহাজোট, যাকে বলা হচ্ছিল 'বুয়া-বাবুয়া গাটবন্ধন', যেখানে সামিল হয়েছিল অজিত সিংহের রাষ্ট্রীয় লোক দলও। মহাজোটের লক্ষ্যই ছিল যাদব-দলিত-মুসলমান-জাঠ ভোটব্যাংককে এককাট্টা করা। অন্যদিকে থেমে ছিল না কংগ্রেসও। মহাজোটে না নেয়ায় 'একলা চলো' নীতিতেই উত্তরপ্রদেশের রাস্তায় নেমেছিল তারা। যদিও কোথাও প্রার্থী না দিয়ে, কোথাও শেষ মুহূর্তে প্রার্থী প্রত্যাহার করে মহাজোটের সুবিধা করে দিতে চেয়েছিল তারা। প্রচার পর্বের বিভিন্ন সময়ে রাহুল নিজেও সে কথা বলেছেন। একই সঙ্গে শেষ মুহূর্তে তারা চমক দিয়েছিল প্রিয়ঙ্কাকে সরাসরি রাজনীতির মাঠে নামিয়ে। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক করার পাশাপাশি তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল পূর্ব উত্তরপ্রদেশের, যাকে 'গেরুয়া দুর্গ' বললেও কম বলা হয়। এই পূর্ব উত্তরপ্রদেশের মধ্যেই পড়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের গোরক্ষপুর বা খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বারানসি। পরিস্থিতি যে খুব সহজ ছিল, তা নয়। এই রকম একটা জায়গা থেকেই আগাগোড়া হিন্দুত্বের লাইনে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল গেরুয়া ব্রিগেড।