খারাপ ফলের জের, দলের শীর্ষ নেতাদের তলব মমতার

এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে পরাজয়ের কারণ বুঝতে চাইবেন তিনি কোপে পড়তে পারেন পরাজিত প্রার্থীসহ অনেকে নেতাই

প্রকাশ | ২৫ মে ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে 'বিয়ালিস্নশে ৪২'! এই স্স্নোগান তুলেই সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে জোরদার প্রচার চালান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অন্য তৃণমূল নেতারা। কিন্তু ফল বের হতেই মাথা ঘুরে গেছে রাজ্যটির শাসকদলের। বিয়ালিস্নশে ৪২ তো হয়ইনি, বরং বিজেপির চোরাস্রোতে ভেসে গেছে তৃণমূলের নিজের ঘরের অর্ধেকের মতো আসন। ২০২০ সালের পৌরসভা নির্বাচন ও ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে যা অত্যন্ত বিপজ্জনক বলেই মনে করছে তৃণমূল নেতৃত্ব। সে কারণেই লোকসভা ভোটের ফল কাটাছেঁড়া করতে শনিবার কলকাতার কালীঘাটে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন মমতা। বৈঠকে হাজির থাকতে বলা হয়েছে লোকসভা নির্বাচনে দলের জয়ী এমপি ও পরাজিত প্রার্থীদের। এছাড়া ডাকা হয়েছে তৃণমূলের সব জেলা সভাপতি ও পর্যবেক্ষকদের। সংবাদসূত্র : এবিপি নিউজ তৃণমূল সূত্রের খবর, এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে জেলা সভাপতি ও পর্যবেক্ষকদের থেকে পরাজয়ের কারণ বুঝতে চাইবেন দলের প্রধান মমতা। সংগঠনের কোথায় এখনো ঘাটতি রয়ে গেছে, কোনখানে কতটা পিছিয়ে পড়েছেন তৃণমূল প্রার্থীরা, এসব তথ্য বুঝে নেবেন তিনি। আসন ধরে ধরে ফলের কাটাছেঁড়াও করবেন। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরেই অন্তর্দ্বন্দ্ব তৃণমূলের একটা বড় সমস্যা। একাধিক প্রশাসনিক বৈঠকে এবং দলীয় সভায় তৃণমূল নেত্রীকে তা নিয়ে সরব হতেও দেখা গেছে। মমতার কাছে এ বিষয়ে ধমক খেয়েছেন দলের অনেক শীর্ষ নেতা। রাজনৈতিক মহলের মতে, এই অন্তর্দ্বন্দ্ব এবং নব্য তৃণমূল ও আদি তৃণমূলের লড়াই লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে বিশেষ সাহায্য করেছে। শাসকের দলীয় কোন্দলকে কাজে লাগিয়ে ভেতরে ভেতরে ভিত শক্ত করেছে বিজেপি। দলীয় সূত্রে খবর, এদিন সেই বিষয়েও আলোচনা করবেন মমতা। সেক্ষেত্রে দলের কয়েকজনের ডানা ছাঁটা হতে পারে। বিশেষ করে যেসব নেতার ঔদ্ধত্য নিয়ে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে মমতার কাছে, তাদের দায়িত্বও কমানো হতে পারে। লোকসভা নির্বাচনের ফলে দেখা যাচ্ছে উত্তরবঙ্গ থেকে কার্যত ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গেছে তৃণমূল। রাজনৈতিক মহলের আশঙ্কা, সে কারণে দলনেত্রীর কোপের মুখে পড়তে পারেন উত্তরবঙ্গের নেতারা। একই চিত্র দেখা যেতে পারে জঙ্গলমহলের ক্ষেত্রেও। সেখানে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনেই বিজেপির অস্তিত্বের প্রমাণ মিলেছে। তারপর সেখানকার জেলা নেতৃত্বকে কখনো প্রকাশ্যে কখনো গোপনে হুশিয়ারি দিয়েছিলেন মমতা। মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়েছিলেন তাদের। কিন্তু লোকসভার ফল বের হতে দেখা গেছে, কোনো কাজই করেননি জঙ্গলমহলের তৃণমূল নেতারা। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুরের আসন হাতছাড়া হয়েছে 'ঘাসফুল' শিবিরের। এই পরাজয়ের কারণে সেই জেলার নেতৃত্বকে শাস্তি দিতে পারেন মমতা, এমনই গুঞ্জন রাজনৈতিক মহলে। উলেস্নখ্য, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে ৩৪টি আসন পেয়েছিল মমতার তৃণমূল। এবার সর্বমোট ২০টি আসন হাতছাড়া হয়েছে দলটির। অন্যদিকে, গতবারের চেয়ে এবার বিজেপির আসন বাড়ছে ১৬টি। ভোটের ফল সামনে আসতে শুরু করার পর থেকেই যেটা অনেকের কপালে ভাঁজ ফেলতে শুরু করেছিল।