আমার চেয়ারের প্রয়োজন নেই চেয়ার আমাকে চায় :মমতা

ম পরাজয়ের শোকে তৃণমূল নেত্রী কবিতা লিখেছেন তিন ভাষায়

প্রকাশ | ২৬ মে ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
যাযাদি ডেস্ক 'আমাকে পাঁচ-ছয় মাস কাজ করতে দেয়া হয়নি। ইমার্জেন্সি পরিস্থিতি (জরুরি অবস্থা) তৈরি করে ওরা ভোট করিয়েছে। তাই মুখ্যমন্ত্রীর পদে আর কাজ করতে চাই না। আমার চেয়ারের প্রয়োজন নেই। কিন্ত চেয়ার আমাকে চায়।' লোকসভা ভোট বিপর্যয়ের পর শনিবার প্রথম সংবাদ সম্মেলনে আবেগজড়িত কণ্ঠে এসবই বলেছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল-প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংবাদসূত্র : এবিপি নিউজ, এএনআই লোকসভা ভোটে রাজ্যে ৪২টি আসনের মধ্যে ৪২টিতে জয়ের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তা তো হয়ইনি, উল্টো গেরুয়া ঝড়ে উত্তরবঙ্গ ও জঙ্গলমহল থেকে সাফ হয়ে গেছে তৃণমূল। এমনকি, দক্ষিণবঙ্গেও বেশ কয়েকটি জেতা আসন হাতছাড়া হয়ে গেছে এই রাজ্যের শাসকদলের। লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের কারণ জানতে কালীঘাটে দলের জয়ী ও পরাজিত প্রার্থীদের শনিবার জরুরি বৈঠকে ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী পদ ছাড়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন তিনি। মমতা বলেন, 'আমি দলের প্রত্যেকের কাছে পদ ছাড়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছি। কিন্তু ওরা চায় আমি থাকি। সাম্প্রদায়িক বিষ ছড়িয়ে ভোটে জিতেছে বিজেপি। নির্বাচন কমিশন প্রতিনিয়ত ওদের হয়ে কাজ করেছে। আমাদের আসন সংখ্যা কমলেও ভোটের হার চার শতাংশ বেড়েছে।' ভোটের মুখে খোদ পুলিশ কমিশনার-সহ রাজ্য পুলিশের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তকে সরিয়ে দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। সেই প্রসঙ্গ তুলে কমিশনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'ভোটে বিজেপি যা টাকা খরচ করেছে, তা যেকোনো কেলেঙ্কারিকে হার মানাবে। টাকা ঢোকার জন্যই বারবার প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের বদল করেছে, প্রশাসন কমিশন সবকিছুকে নিয়ন্ত্রণ করেছে।' স্রেফ কমিশনের ভূমিকা নিয়েই নয়, এদিন যথারীতি বিজেপির বিরুদ্ধে ইভিএমে কারচুপির অভিযোগও তোলেন তৃণমূল নেত্রী। মমতার দাবি, 'এ রাজ্যে কোনো আসনেই এক লাখের বেশি ব্যবধানে জেতেনি বিজেপি। ইভিএম প্রোগ্রামিং করা ছিল, সবই সেটিং করা ছিল।' আগামী ৩১ মে ফের দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে তিনি বৈঠকে বসবেন বলে জানিয়েছেন। পরাজয়ের শোকে তিন ভাষায় কবিতা লিখেছেন এদিকে, নির্বাচনে মোদির বিজেপির কাছে আসন খুইয়ে চুপ হয়ে গিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে চুপ থাকার মতো মানুষ নন তিনি। সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে কথা বলে কলম ধরলেন তিনি। লিখেছেন হিন্দি, ইংরেজি ও বাংলা ভাষায় কবিতা। কারও নাম উলেস্নখ না করলেও কবিতার বিষয়বস্তু দেখে ধারণা করা যায়, মমতার এসব কবিতা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার কট্টর হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপির সভাপতি অমিত শাহকে নিয়ে লেখা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশিত হয়। তাতে গোটা দেশের মতো পশ্চিমবঙ্গে গতবার দুই আসন পাওয়া বিজেপি এবার পেয়েছে ১৮টি। এসব কবিতায় মমতা লিখেছেন, 'আমি সাম্প্রদায়িকতার রঙে বিশ্বাস করি না। আমি ধর্মীয় উগ্রতাতেও আস্থা রাখি না। যে ধর্ম মানুষের মধ্য থেকে উঠে আসে, আমার আস্থা শুধু তাতেই।' মমতার কবিতায় পশ্চিমবঙ্গে সন্ত্রাসের প্রসঙ্গ স্থান পেয়েছে। সাত দফার নির্বাচনে প্রায় প্রতিদিন এই রাজ্যের একাধিক জায়গায় সংঘর্ষ-সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। সে কথাও আছে মমতার কবিতায়।