জাপানে গিয়ে উত্তর কোরিয়া নিয়ে মন্তব্য

ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষায় উদ্বিগ্ন নন ট্রাম্প

কিমের ওপর এখনো আস্থা মার্কিন প্রেসিডেন্টের হ পিয়ংইয়ংয়ের পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রকল্প নিয়ে শিনজো আবের সঙ্গে আলোচনা করবেন

প্রকাশ | ২৭ মে ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
উত্তর কোরিয়ার সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা নিয়ে উদ্বিগ্ন নন বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জাপান সফররত ট্রাম্প রোববার টুইটারে এই মন্তব্য করেছেন। ট্রাম্প বলেছেন, তিনি আত্মবিশ্বাসী যে, উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং-উন যে প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছিলেন, তা তিনি রাখবেন। সংবাদসূত্র : বিবিসি, এএফপি অনলাইন ট্রাম্প বলেছেন, 'উত্তর কোরিয়া কিছু ক্ষুদ্র অস্ত্র ছুড়েছে, যা আমার কিছু লোক ও অন্যদের বিরক্ত করেছে, তবে আমাকে নয়। আমি আত্মবিশ্বাসী যে, চেয়ারম্যান কিম আমাকে দেয়া তার প্রতিশ্রম্নতি রক্ষা করবেন।' ট্রাম্পের এই মন্তব্য কার্যত মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনের বক্তব্যের বিরুদ্ধে গেল। বোল্টন বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে পাস হওয়া প্রস্তাবের লঙ্ঘন। উলেস্নখ্য, উত্তর কোরিয়া গত ৯ মে দুটি স্বল্পপালস্নার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করে। এর আগে ৪ মে উত্তর কোরিয়ার সেনারা মহড়া চালায়। চলতি বছরের প্রথম দিকে ভিয়েতনামে উনের সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় নিরস্ত্রীকরণ ইসু্যতে বৈঠকে বসেছিলেন ট্রাম্প। তবে কোনো ধরনের চুক্তি ছাড়াই বৈঠকটি শেষ হয়। এরপর উত্তর কোরিয়া কয়েকবার ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে। একই সঙ্গে দুই দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে তপ্ত বাক্যবিনিময়ও হয়েছে। জাপান সফররত ট্রাম্প দেশটির প্রধানমন্ত্রী আবে শিনজোর সঙ্গে বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে বৈঠকের আগেই উত্তর কোরিয়াকে নিয়ে ট্রাম্পের এই মন্তব্যে বোঝা যাচ্ছে, পিয়ংইয়ংকে নিয়ে তিনি খুব বেশি ভাবছেন না। বরং ২০২০ সালে তার নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্রেট দলের জো বাইডেনকে নিয়ে উনের বিদ্রূপাত্মক মন্তব্যে তিনি যে রসবোধ করেন, সেটি জানিয়েছেন। ট্রাম্প বলেছেন, 'কিম যখন সোয়াম্পম্যান জো বাইডেনকে নিম্নবুদ্ধির মানুষ ও জঘন্য বলে ডাকেন, তখন আমি হাসি। সম্ভবত সেটি আমাকে কোনো বার্তা দিচ্ছে?' চারদিনের সফরে জাপানে ট্রাম্প এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শনিবার চারদিনের সফরে জাপান এসে পৌঁছেছেন। স্থানীয় সময় বিকাল ৫টার কিছু আগে তাকে বহনকারী 'এয়ার ফোর্স ওয়ান' বিমান জাপানের মাটি স্পর্শ করে। জাপান ও মার্কিন কর্মকর্তারা ট্রাম্প ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সম্পর্ককে নজিরবিহীন উলেস্নখ করে এর প্রশংসা করেন। উভয় নেতা এই সফরকালে তাদের সুসম্পর্ককে আরও মজবুত করার সুযোগ পাবেন বলেও তারা মন্তব্য করেন। এদিকে, ট্রাম্পের এবারের সফরকে অনেকটাই বিনোদনমূলক বলে বর্ণনা করা হয়েছে। কিছুটা আনন্দে সময় কাটাতে তিনি জাপান এসেছেন। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তেজনার কারণে ট্রাম্প সফরকালে রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক বিভিন্ন বিষয়কে এড়িয়ে যাবেন। ট্রাম্প রোববার শিনজো আবেসহ জাপানি মলস্নযুদ্ধ 'সুমো' দেখতে যান এবং তিনি বিজয়ীর হাতে কাপ তুলে দেন। সুমো দেখতে যাওয়ার আগে উভয় নেতা গল্ফ খেলবেন এবং রেস্তোরাঁয় সস্ত্রীক খেতে যাবেন। সোমবার উভয়ে শীর্ষ বৈঠকে যোগ দেবেন। সোমবার সন্ধ্যায় ট্রাম্প ও ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া জাপান সম্রাট নারুহিতো ও সম্রাজ্ঞী মাসাকোর দেয়া নৈশভোজে যোগ দেবেন। সম্রাট নারুহিতো ১ মে সিংহাসনে বসেন। তার সিংহাসনে আরোহণের পর ট্রাম্প হবেন তার সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ করা বিদেশি নেতা। আবে কিছুদিন আগেই ওয়াশিংটন সফর শেষে দেশে ফিরেছেন। আর ট্রাম্প এক মাসের মধ্যে জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিতে জাপানের ওসাকায় ফিরবেন। এ প্রসঙ্গে ট্রাম্প প্রসাশনের সিনিয়র এক কর্মকর্তা বলেন, উভয়পক্ষে এই তিনটি সফর খুব কম সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আর এটি তাদের সম্পর্ক যে কতটা নিবিড় তাই প্রমাণ করে। জাপানি কূটনীতিক বলছেন, উভয়পক্ষের এ ঘন ঘন সফর দুই দেশের নেতাদের মধ্যকার নজিরবিহীন ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককেই প্রকাশ করছে।