সন্তানদের প্রার্থী করায় নেতাদের কঠোর সমালোচনা রাহুলের

পদ ছাড়ার সিদ্ধান্তে এখনো অনড়

প্রকাশ | ২৭ মে ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী
ভারতের কংগ্রেস সভাপতি পদ ছাড়ার সিদ্ধান্তে এখনো অনড় রয়েছেন রাহুল গান্ধী। লোকসভা নির্বাচনে চরম ব্যর্থতা পর্যালোচনা করতে শনিবার এক বৈঠকে মিলিত হন দলের নেতারা। কংগ্রেস নেতারা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তারা রাহুলের পদত্যাগের প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তবে নির্বাচনে ভরাডুবি দলের ভেতরও সমস্যা তৈরি করেছে। চার ঘণ্টার বৈঠকে রাহুল গান্ধী কয়েকজন সিনিয়র কংগ্রেস নেতাকে উদ্দেশ্য করে কড়া ভাষায় কথা বলেন। নিজেদের সন্তানদের প্রার্থী করায় তাদের কঠোর সমালোচনা করেন তিনি। নেতারা নিজেদের ছেলেদের প্রার্থী হিসেবে দলের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন রাহুল। সংবাদসূত্র : এনডিটিভি, এবিপি নিউজ রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের ছেলে বৈভব যোধপুরে ২.৭ লাখের বেশি ভোটে হেরে যান বিজেপি প্রার্থী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াতের কাছে। যদিও মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথের ছেলে নকুল নাথ ছিনদ্বারা লোকসভা আসনে জয়ী হন কংগ্রেসের টিকিটে। পি চিদাম্বরমের ছেলে কার্তি চিদাম্বরমও তামিলনাডুর শিবগঙ্গা আসন থেকে জয়ী হয়েছেন। রাহুলের স্পষ্ট কথার পেছনে অন্যতম কারণ ছিল, তার বিশ্বাসভাজন উপদেষ্টা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার একটি মন্তব্য। দলে স্থানীয় নেতৃত্বকে আরও শক্তিশালী করার ব্যাপারে ওই মন্তব্য করেন সিন্ধিয়া। তবে রাহুল কারও নাম নেননি বলে জানা গেছে। গত ডিসেম্বরে কংগ্রেস তিনটি রাজ্যে জয়লাভ করে। রাজ্য তিনটি হলো রাজস্থান, ছত্তিশগড় ও মধ্যপ্রদেশ। ওইসব রাজ্যে ঋণের ভারে জর্জরিত কৃষদের দুর্গতি, শস্যের দাম কমে যাওয়ায় বিজেপি-বিরোধিতা বেড়ে যাওয়ায় ফল রাহুলদের পক্ষে গিয়েছিল। কিন্তু কংগ্রেসের আত্মপ্রসাদ লাভ ও অন্তর্দ্বন্দ্বের ফলে পাঁচ মাসের মধ্যে তারা সেই জয়ের থেকে সুবিধা নিতে পুরোপুরি ব্যর্থ হন। ৫২ সদস্যের কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিকে রাহুল জানান, দেড় বছর আগে মা সোনিয়া গান্ধীর পর প্রাপ্ত দলের সর্বোচ্চ পদটি তিনি ছেড়ে দিতে চান। বিপুল পরাজয়ের ধাক্কায় পর্যুদস্ত কংগ্রেসের নেতারা বারবার তাদের প্রধান নেতার কাছে আবেদন করতে থাকেন নিজের সিদ্ধান্তের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার জন্য। সূত্র বলছে, পি চিদাম্বরম রাহুলকে পদত্যাগ না করার ব্যাপারে অনুরোধ জানাতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, এর ফলে অনেক সমর্থক, বিশেষ করে দক্ষিণের; যারা কংগ্রেসকে ভোট দিয়েছে তারা কোনো 'চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত' নিতে পারে। রাহুল গান্ধী অবশ্য বারবারই বলেছেন, তিনি মোটেই অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছেন না এবং দলের হয়ে তিনি কাজ চা?লিয়ে যাবেন। প্রতিবাদী কংগ্রেস নেতারা প্রশ্ন করেন, 'যদি তুমি না হও, তবে কে?' এ প্রসঙ্গে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর নাম উঠে এলে রাহুল বলতে থাকেন, 'আমার বোনকে এর মধ্যে টানবেন না।' শুধু তা-ই নয়, রাহুল সাফ বলেছেন, তার বদলে যেন প্রিয়াঙ্কার নামও সভাপতি পদে ভাবা না হয়। গান্ধী পরিবারের বাইরের কারও হাতে এই দায়িত্ব তুলে দেয়া হোক। এ নিয়ে কোনো আপস হবে না। এরপরই রাহুল-প্রিয়ঙ্কা বৈঠক থেকে বেরিয়ে যান।