সেই সিঙ্গুরেই মুখ থুবড়ে পড়েছে তৃণমূল

প্রকাশ | ২৭ মে ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
এক সময়ের বাম দুর্গ বলে পরিচিত পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের ক্ষেত্রে যে বিষয়টি সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে, তা হলো- সিঙ্গুর আন্দোলন। প্রায় সাড়ে তিন দশক ধরে চলা বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে এই রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের ক্ষমতায় আসার পেছনে বড় ভূমিকা ছিল সিঙ্গুর আন্দোলনের। কিন্তু সেখানেই এবার (লোকসভা নির্বাচন) মুখ থুবড়ে পড়েছে তৃণমূল। সংবাদসূত্র : ওয়ান ইনডিয়া ২০০৬ সালে কৃষকদের এক হাজার একর কৃষি জমি অধিগ্রহণ করে শিল্পপ্রতিষ্ঠান করার জন্য টাটা মোটর কোম্পানিকে দিয়েছিল তখনকার বামফ্রন্ট সরকার। এই জমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গে তুমুল রাজনৈতিক বিতর্ক হয়েছিল। বেসরকারি শিল্প কারখানার জন্য সরকার জমির ব্যবস্থা করে দিতে পারে না, এই যুক্তি তুলে সিঙ্গুর আন্দোলনে নেমে কার্যত নিজের রাজনৈতিক জীবনকে বাজি রেখেছিলেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এই আন্দোলনই আট বছর আগে বিরোধী নেত্রী থেকে মুখ্যমন্ত্রীর মসনদে পৌঁছে দিয়েছিল তাকে। ক্ষমতায় গিয়ে অধিগৃহীত জমি কৃষকদের ফিরিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বছর-তিনেক আগে সেই জমি কৃষকরা ফিরেও পান। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ায় কৃষকদের মাঝেমধ্যে ধৈর্যচু্যতি ঘটলেও তারা শেষ পর্যন্ত মমতার ওপর আস্থাই রেখেছিলেন। গত কয়েকটি নির্বাচনের ফল সে কথাই বলে। কারণ, দেশটির সুপ্রিম কোর্ট চাষিদের ওই জমি ফেরতের নির্দেশ দেয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা তা চাষযোগ্য করে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কাজে নেমেছিল প্রশাসনও। কিন্তু এখনো সেসব জমি চাষযোগ্য হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। লোকসভা ভোটের ফল বলছে, হুগলি লোকসভা আসনের অন্তর্গত এই বিধানসভা আসন থেকে বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায় ১০ হাজার ৪২৯ ভোটের ব্যবধানে জিতেছেন। অন্যদিকে পঞ্চায়েত নির্বাচনেও ভরাডুবি হয়েছে তৃণমূলের। বেড়াবেড়ি, কেজেডি এবং গোপালনগর- এই তিনটি মৌজা নিয়েই ছিল টাটার প্রকল্প এলাকা। এর মধ্যে গোপালনগর পঞ্চায়েতের মোট ১৮টি আসনের মধ্যে বিজেপি এবার ১১টিতেই জিতেছে। অন্য সাতটিতে জিতেছে তৃণমূল। কেজেডির ১৮টি আসনেও একই ফল (১১-৭)। বেড়াবেড়ি মৌজারও কিছু আসন গেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।