পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারে ক্ষমতাসীন বিজেপি এবং তার সমমনা দলগুলোর বিরোধী রাজনৈতিক জোট 'ইনডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টাল ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স বা 'ইনডিয়া' জোটকে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম 'নিউজ ১৮ বাংলা'কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই ইসু্যতে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং সেখানকার রাজ্য সরকারে ক্ষমতাসীন সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী। তথ্যসূত্র : এনডিটিভি
সাক্ষাৎকারে ইনডিয়া জোটের সাম্প্রতিক ঝিমিয়ে পড়া অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন করা হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। উত্তরে মমতা বলেন, 'হঁ্যা, যাদের হাতে এই জোটটি গঠিত হয়েছিল, তাদের মধ্যে আমিও রয়েছি, এখন ইনডিয়া কীভাবে চলবে- তা নির্ভর করছে জোটকে যারা সামনের সারি থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাদের ওপর। এখন, যারা সামনের সারিতে আছেন, তারা যদি তাদের কাজটি ঠিকমতো করতে না পারেন, তাহলে আমি কী করতে পারি। আমি শুধু এটুকু বলতে পারি, জোটের সব শরিককে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।'
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে কট্টর বিজেপি বিরোধী নেত্রী হিসেবে পরিচিত। দেশটির জাতীয় রাজনীতিতে এই মুহূর্তে মুষ্টিমেয় যে কয়েকজন বিজেপিবিরোধী প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ রয়েছেন, তাদের মধ্যেও তিনি অগ্রগণ্য।
সাক্ষাৎকারে তাকে প্রশ্ন করা হয়, যদি 'ইনডিয়া'কে নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব তার কাছে আসে, তাহলে তিনি তা গ্রহণ করবেন কি-না। উত্তরে তিনি বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আমাকে রাজ্য রাজনীতিতে অনেক সময় দিতে হয়। রাজ্য ছেড়ে বেশিদিন বাইরে থাকার উপায় নেই। তবে যদি আমাকে জোটের নেতৃত্বের দায়িত্ব দেওয়া হয়, আমি এই নিশ্চয়তা দিতে পারি, ইনডিয়া মসৃণ গতিতে চলবে। আমি পশ্চিমবঙ্গের বাইরে যেতে চাই না, তবে এখানে থেকেই জোটকে নেতৃত্ব দিতে পারি।'
সম্প্রতি ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্র এবং পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ঝাড়খন্ডের বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রের বিধানসভায় ভূমিধস জয় পেয়েছে বিজেপি ও শিবসেনার একাংশের নেতৃত্বাধীন 'মহাজুটি' জোট। কংগ্রেস ও ইনডিয়া জোটভুক্ত অন্য দলগুলোর রীতিমতো ভরাডুবি ঘটেছে মহারাষ্ট্রে।
ঝাড়খন্ড বিধানসভা নির্বাচনে অবশ্য ইনডিয়াভুক্ত দল ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চা বা জেএমএম জয় পেয়েছে। তবে মহারাষ্ট্রে যে ইনডিয়ার ক্ষতি হয়েছে, তার ক্ষতিপূরণ এই জয় দিয়ে সম্ভব নয়। কারণ ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ঝাড়খন্ডের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ মহারাষ্ট্র। এ রাজ্যটি ভারতের সবচেয়ে ধনী রাজ্য হিসেবেও পরিচিত।
ভোটের ফল প্রকাশের পর তৃণমূল কংগ্রেসের পার্লামেন্ট সদস্য কল্যাণ ব্যানার্জি সম্প্রতি ইনডিয়া জোটের শীর্ষ নেতৃত্বে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। বর্তমানে ইনডিয়ার নেতৃত্বে রয়েছে কংগ্রেস।
২০২৩ সালের আগস্টে কংগ্রেসসহ বিজেপিবিরোধী ২৪টি রাজনৈতিক দল গঠন করে ইনডিয়া জোট। এই জোটের লক্ষ্য ছিল ২০২৪ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনে বিজেপিকে পরাস্ত করা। সেই লক্ষ্য অবশ্য অর্জন হয়নি। তবে ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২৪ সালের নির্বাচনে আসন সংখ্যা অনেক বেড়েছে বিজেপিবিরোধী দলগুলোর।