উপসাগরে উত্তেজনা

তেলের ট্যাঙ্কারে হামলায় একটি দেশ জড়িত :আমিরাত

প্রকাশ | ০৮ জুন ২০১৯, ০০:০০ | আপডেট: ০৮ জুন ২০১৯, ১১:০২

যাযাদি ডেস্ক
গত মাসে নিজেদের উপকূলে চারটি তেলের ট্যাঙ্কারে হামলার ঘটনায় 'একটি দেশের সরকারের হাত আছে' বলে জানিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। ১২ মে'র ওই হামলা 'অত্যাধুনিক ও সমন্বিত অভিযানের' চিহ্ন বহন করছে বলে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে দেয়া প্রতিবেদনে দেশটি এমনটাই বলেছে। মাসখানেক আগের ওই হামলায় আরব আমিরাতের পাশাপাশি সৌদি আরব ও নরওয়ের নৌযানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সংবাদসূত্র : বিবিসি যুক্তরাষ্ট্র এ ঘটনার জন্য ইরানকে দায়ী করলেও জাতিসংঘে দেয়া প্রতিবেদনে আরব আমিরাত কোনো রাষ্ট্রের নাম উলেস্নখ করেনি। তেহরান শুরু থেকেই তেলের ট্যাঙ্কারে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে এ ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়ে আসছে। হরমুজ উপত্যকার বাইরে আরব আমিরাতের জলসীমায় ফুজাইরার পূর্ব অংশে ১২ মে ওই হামলার ঘটনা ঘটে। চারটি জাহাজ ওই 'অন্তর্ঘাতমূলক হামলায়' ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে পরে নিশ্চিত করে আমিরাত কর্তৃপক্ষ। এতে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। পরে সৌদি আরব জানায়, ফুজাইরা উপকূলে ওই হামলায় তাদের দুটি জাহাজের 'ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি' হয়েছে। বাকি দুই ট্যাঙ্কারের একটি নরওয়েতে নিবন্ধিত; অন্যটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের পতাকাবাহী। ট্যাঙ্কারে হামলার ঘটনায় সৌদি আরব ও নরওয়েকে সঙ্গে নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের নেতৃত্বে যৌথ তদন্ত চলছে। ওই তদন্ত সংক্রান্ত ব্রিফিংয়ের নথি নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপন করেছে আমিরাত কর্তৃপক্ষ। জাতিসংঘে উপস্থাপিত নথিতে আরব আমিরাত, সৌদি আরব ও নরওয়ে বলেছে, 'তদন্ত এখনো চলমান থাকলেও আলামত থেকে বোঝা গেছে অত্যাধুনিক ও সমন্বিত অভিযানের অংশ হিসেবে ওই চারটি জাহাজে হামলা চালানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এ হামলাকে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ও এর মিত্রদের বিরুদ্ধে ইরানের বিস্তৃত তৎপরতার অংশ হিসেবেই দেখছে। তেহরানে ক্ষমতা পরিবর্তনে দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনও ওই 'অন্তর্ঘাতমূলক হামলার' পেছনে শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটিকেই দায়ী করেছেন। তিনি বলেছেন, হামলার পেছনে যে তেহরান আছে, তা স্পষ্ট। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বোল্টনের এ অভিযোগকে 'হাস্যকর' বলে উড়িয়ে দিয়েছে। ইরানের তেল কেনা বেশ কয়েকটি বড় দেশকে নিষেধাজ্ঞা থেকে ছাড় দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। গত মাসে ওই ছাড় বাতিল করা হলে ওয়াশিংটন ও তেহরানের উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করে। তেহরানের তেল রপ্তানি শূন্যে নামিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্র এ পদক্ষেপ নেয়; অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত ইরান তাৎক্ষণিকভাবে এ পদক্ষেপের পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখানোর হুশিয়ারি দেয়। তারা সতর্ক করে বলে, প্রয়োজন পড়লে হরমুজ উপত্যকা বন্ধ করে দেয়া হবে। উত্তেজনার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি ওই এলাকায় অতিরিক্ত বিমানবাহী রণতরী ও বোমারু বিমান পাঠিয়েছে। ইরানের বিপস্নবী রক্ষীবাহিনীকে (রেভলিউশনারি গার্ড বাহিনী) সন্ত্রাসী তালিকায়ও অন্তর্ভুক্ত করেছে তারা। পাল্টা হুশিয়ারিতে তেহরান বলেছে, মার্কিন বাহিনী যে তাদের অস্ত্রের আওতার মধ্যেই রয়েছে, তা কেবল কথার কথাতেই সীমাবদ্ধ থাকবে না।