মেক্সিকোকে বশে আনলেন ট্রাম্প

শরণার্থীর স্রোত ঠেকাতে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর মেক্সিকোর পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ আপাতত প্রত্যাহার

প্রকাশ | ০৯ জুন ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
অভিবাসী ইসু্যতে অবশেষে মেক্সিকোকে বশে আনতে সক্ষম হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার হুমকির মুখে শেষ পর্যন্ত নতিস্বীকার করেছে মেক্সিকো। এর আগে, মেক্সিকো থেকে আসা সয পণ্যের ওপর শুল্কারোপ করা হবে বলে ট্রাম্পের ঘোষণা দেন। এরপরই যুক্তরাষ্ট্র অভিমুখে আসা শরণার্থীর স্রোত ঠেকাতে মেক্সিকো 'অভূতপূর্ব পদক্ষেপ' নিতে রাজি হয়। অর্থাৎ, দুই দেশের মধ্যে এ-সংক্রান্ত একটি চুক্তি হয়েছে বলে শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক টুইটে জানিয়েছেন। সংবাদসূত্র : বিবিসি, সিএনএন, রয়টার্স মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক টুইটে বলেন, 'আমি আপনাদের আনন্দের সঙ্গে জানাতে চাই, যুক্তরাষ্ট্র মেক্সিকোর সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছতে সক্ষম হয়েছে।' সেই সঙ্গে 'অনির্দিষ্ট' সময়ের জন্য মেক্সিকো পণ্যের ওপর শুল্কারোপ প্রত্যাহারের ঘোষণাও দেয়া হয়েছে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা পণ্যে শুল্কের খাঁড়া থেকে নিজেদের সরিয়ে নিতে সক্ষম হলো মেক্সিকো। সম্প্রতি মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে ল্যাতিন আমেরিকার দেশগুলো থেকে অবৈধ অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে অনুপ্রবেশের হার বাড়তে শুরু করেছে। সর্বশেষ গত বুধবার মার্কিন শুল্ক ও সীমান্তরক্ষা বিভাগ থেকে জানানো হয়, গত এক দশকের মধ্যে মে মাসে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক অভিবাসী গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই মাসে এক লাখ ৩২ হাজার ৮৮৭ জন অভিবাসী মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা চালিয়েছে। এর আগের মাসের তুলনায় এই সংখ্যা ৩৩ শতাংশ বেশি। এরপরই ট্রাম্প অভিবাসীদের ঠেকাতে না পারলে মেক্সিকোর পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। ট্রাম্প তার প্রস্তাবে জানিয়েছিলেন, মেক্সিকো থেকে আসা গাড়ি, বিয়ার, মদ, ফল ও সব্জির ওপর প্রতি মাসে পাঁচ শতাংশ হারে শুল্ক বাড়ানো হবে, যা অক্টোবরের মধ্যে ২৫ শতাংশে গিয়ে ঠেকবে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের শুল্ক বাড়ানোর হুমকির মধ্যেই গত সপ্তাহে মেক্সিকোর বামপন্থি প্রেসিডেন্ট ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদর তার দেশের উত্তর সীমান্তের নিরাপত্তা জোরদারে রাজি হয়েছিলেন। টুইটারে মেক্সিকোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্সেলো এব্রার্দও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ওয়াশিংটনের ওব্রাদের সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের তিনদিনের বৈঠকের পর এই চুক্তি হলো। চুক্তির পর এক যৌথ ঘোষণায় জানানো হয়েছে, অনিয়মিত অভিবাসী ও মানব পাচার ঠেকাতে মেক্সিকো 'নজিরবিহীন' পদক্ষেপ নেবে। চুক্তির আওতায় মেক্সিকো সোমবার থেকে 'ন্যাশনাল গার্ড বাহিনী'কে যুক্তরাষ্ট্র সীমান্ত তথা সারাদেশে মোতায়েন করবে। এ ছাড়া যেসব অভিবাসীর আবেদন আইনি পর্যালোচনার মধ্যে রয়েছে তাদেরও মেক্সিকোতে ফেরত পাঠানোর কর্মসূচির ব্যাপ্তি বাড়াবে যুক্তরাষ্ট্র। অবশ্য, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কারোপের হুমকির পর গুয়াতেমালা সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অভিবাসী প্রবেশ আটকাতে সেনা, সশস্ত্র পুলিশ এবং অভিবাসন কর্মকর্তাদের মোতায়েন করে মেক্সিকো সরকার। প্রত্যক্ষদর্শী দাতব্য সংস্থার এক কর্মকর্তা বলেন, মেক্সিকোর দক্ষিণ সীমান্তে মোতায়েন করা বাহিনী বুধবার শত শত অবৈধ অভিবাসীকে সীমান্ত অতিক্রম করতে বাধা দিয়েছে। কয়েকজনকে আটকও করা হয়েছে। উলেস্নখ্য, দারিদ্র এবং যুদ্ধ থেকে প্রাণ বাঁচিয়ে উন্নত জীবনের আশায় মধ্য আমেরিকার দেশ গুয়াতেমালা, হন্ডুরাস ও এল সালভাদর থেকে হাজার হাজার মানুষ মেক্সিকো হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা করছে।