উত্তর কোরিয়ায় মৃতু্যদন্ড কার্যকরে তিন শতাধিক স্থান চিহ্নিত

পিরানহা-ভর্তি জলাশয়ে ফেলে হত্যা সেনা কর্মকর্তাকে!

প্রকাশ | ১২ জুন ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং-উন
উত্তর কোরিয়ায় প্রকাশ্যে মৃতু্যদন্ড দেয়ার ৩১৮টি স্থান চিহ্নিত করা গেছে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি বেসরকারি সংস্থা। এই স্থানগুলিতে বিভিন্ন অপরাধে আটককৃতদের মৃতু্যদন্ড কার্যকর করে সরকার। সংবাদসূত্র : বিবিসি, এবিপি নিউজ গত চার বছরে উত্তর কোরিয়া থেকে পালিয়ে আসা ৬১০ ব্যক্তির সাক্ষাৎকার নিয়েছে 'দ্য ট্রানজিশনাল জাস্টিস ওয়ার্কিং গ্রম্নপ' নামের একটি সংস্থা। ওই সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গরু চুরি থেকে শুরু করে দক্ষিণ কোরিয়ার টেলিভিশন চ্যানেল দেখার অপরাধে লোকদের আটক করা হয় এবং তাদের মৃতু্যদন্ড দেয়া হয়। নদীর কাছে, মাঠে, বাজারে, স্কুলে এবং খেলার জায়গায় মৃতু্যদন্ড কার্যকর করা হয়। 'ম্যাপিং দ্য ফেইথ অব দ্য ডেড' শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বেসরকারি এই সংস্থাটি জানিয়েছে, মৃতু্যদন্ড কার্যকরের সময় এটি দেখার জন্য এক হাজার বা তার চেয়ে বেশি মানুষকে জড়ো করা হয়। যাকে মৃতু্যদন্ড দেয়া হয়, তার পরিবারের শিশুসহ সব সদস্যকে কখনো কখনো সেখানে থাকতে বাধ্য করা হয়। মৃতু্যদন্ডের পর ওই সব মৃতদেহ কিংবা তাদের সৎকারের স্থানের খবর স্বজনদের খুব কমই দেয়া হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রকাশ্যে মৃতু্যদন্ড কার্যকর করতে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে কনিষ্ঠ যাকে দেখতে বাধ্য করা হয়েছে, তার বয়স ছিল সাত। আটককেন্দ্র কিংবা শ্রমশিবিরে কিছু মৃতু্যদন্ড কার্যকর করা হয়। রাজনৈতিক অপরাধে এসব স্থানে বন্দিদের রাখা হয় এবং তাদের খনি ও গাছ কাটতে বাধ্য করা হয়। পালিয়ে আসা এক ব্যক্তি জানান, ২০০০ সালের প্রথমদিকে পালিয়ে চীন যাওয়ার চেষ্টার অপরাধে তিন নারীর মৃতু্যদন্ড কার্যকর করতে দেখতে বাধ্য করা হয়েছিল ৮০ জন বন্দিকে। জননিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা ওই সময় বন্দিদের বলেছিলেন, 'এটা তোমাদের বেলায়ও ঘটতে পারে।' পিরানহা-ভর্তি জলাশয়ে ফেলে হত্যা! কিম জং-উনের উত্তর কোরিয়ায় মৃতু্যদন্ড কায়েম করার নানা ধরনের নৃশংস পদ্ধতির কথা বারবারই উঠে এসেছে সংবাদমাধ্যমে। এবার সেই তালিকায় যোগ হয়েছে রাক্ষুসে মাছ পিরানহার ব্যবহার। তার রাজত্বে বিরোধিতার শাস্তি যে ভয়ঙ্কর, সেই বার্তা দেশবাসীকে বারবারই পৌঁছে দিয়েছেন কিম। সূত্রের খবর, এবার নাকি এক সেনা-কর্তাকে পিরানহা মাছে ভর্তি জলাশয়ে ফেলে দেয়া হয়েছে। অভিযোগ, কিমের বিরুদ্ধে সামরিক অভু্যত্থানের ষড়যন্ত্র করছিলেন ওই সেনা কর্মকর্তা। আর সেই খবর কানে আসতেই শাস্তি। এর আগে ২০১৫ সালে তৎকালীন সেনাপ্রধান হিয়ং ইয়ং চোলকে কামানের গোলার সামনে দাঁড় করিয়ে খুন করা হয়। পরের সেনাপ্রধান রি ইয়ং গিলকেও মৃতু্যদন্ড দেয়া হয়। ফলে কিমের এমন কার্যকলাপে অবাক নন ব্রিটিশ গোয়েন্দারা। তাদের মতে, বিদ্রোহীদের মধ্যে আতঙ্ক ও ভয়ের বার্তা দিতেই তার এই সিদ্ধান্ত। সূত্রের খবর, পিয়ংইয়ংয়ে কিমের প্রাসাদের ভেতরে একটি বিশাল জলাশয়ে ব্রাজিল থেকে আমদানি করা হয়েছে কয়েকশ পিরানহা মাছ। অভিযোগ, প্রথমে ওই সেনাকর্তার হাত-পা ধারালো অস্ত্র দিয়ে চিরে দেয়া হয়। তারপর তাকে ফেলে দেয়া হয় ওই জলাশয়ে। তবে শেষ পর্যন্ত পিরানহার কামড়ে, নাকি ডুবে মৃতু্য হয়েছে তার, নিশ্চিত জানা যায়নি।