মারাত্মক রাজনৈতিক ভুল করবেন না :ব্রিটিশ নেতাদের ইইউ

প্রকাশ | ১৫ জুন ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ব্রেক্সিট সম্পর্কে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীদের অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ব্রিটিশ এমপিদের সতর্ক করে দিয়েছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সাফ জানিয়ে দিয়েছে, নতুন নেতার সঙ্গে কোনো দরকষাকষির সুযোগ নেই। সংবাদসূত্র : ডয়চে ভেলে, রয়টার্স, এএফপি সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী চললে জুলাই মাসের শেষে যুক্তরাজ্যে নতুন প্রধানমন্ত্রী শাসনভার গ্রহণ করবেন। তবে ব্রেক্সিট কার্যকর করার জন্য তার হাতে মাত্র তিন মাস সময় থাকবে। কারণ ৩১ অক্টোবর যুক্তরাজ্য ইইউ ছাড়তে চলেছে। নতুন শীর্ষ নেতা এই মেয়াদ আরও বাড়ানোর আবেদন করবেন কিনা, করলে ইইউ তাতে সম্মতি জানাবে কিনা, তাও এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। টোরি দল তথা দেশটির নেতৃত্বের দৌড়ে যারা আসরে নেমেছেন, তাদের একটা বড় অংশ নির্ধারিত তারিখেই ব্রেক্সিট কার্যকর করার পক্ষে। তবে তারা কীভাবে এত কম সময়ের মধ্যে এমন দুরূহ কাজ করবেন, সে বিষয়ে সন্তোষজনক উত্তর এখন পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে না। কয়েক জন প্রার্থী এ বিষয়ে 'অবাস্তব' প্রতিশ্রম্নতি দিয়ে চলেছেন বলেও অভিযোগ উঠছে। এমন পেক্ষাপটে যুক্তরাজ্যের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি সম্পর্কে সংশয় প্রকাশ করছেন ইইউ নেতারা। প্রতিবেশী দেশ আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকার যুক্তরাজ্যের এমপিদের উদ্দেশ্যে 'মারাত্মক রাজনৈতিক ভুল পদক্ষেপ' সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছেন। তার মতে, যুক্তরাজ্যের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন যে বিচ্ছেদ চুক্তি (ব্রেক্সিট) সম্পর্কে ঐকমত্যে পৌঁছেছে, নতুন নেতা ক্ষমতায় এলে ইইউ তার তুলনায় আরও ভালো চুক্তি মেনে নেবে, এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। উলেস্নখ্য, ব্রিটিশ পার্লামেন্ট তিন-তিনবার এই চুক্তির বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে। ইউরোপীয় কমিশনের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জঁ্য ক্লদ জাঙ্কার আবার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, যুক্তরাজ্যের নতুন শীর্ষ নেতা কার্যভার গ্রহণ করলেও ব্রেক্সিট চুক্তিতে কোনো রদবদল সম্ভব নয়। তিনি বলেন, 'থেরেসা মে ও জঁ্য ক্লদ জাঙ্কার নয়, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ইউরোপীয় কমিশনের এক মুখপাত্রও একই সুরে সে কথা বলেছেন। রক্ষণশীল বা টোরি দলের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় প্রার্থী হিসেবে পরিচিত বরিস জনসন ৩১ অক্টোবর ব্রেক্সিট কার্যকর করতে বদ্ধপরিকর। যেকোনো বিলম্বকে তিনি দলের পরাজয় হিসেবে তুলে ধরতে চলেছেন। তবে এই কড়া অবস্থানকে জনসন ইইউ'র সঙ্গে নতুন আলোচনার চাল হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছেন। প্রয়োজনে চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিট কার্যকর করতে তিনি পিছপা হবেন না বলেও তিনি জানিয়েছেন। তবে ইইউ'র কাছে বকেয়া অর্থ আটকে রাখার হুমকি দিয়ে জনসন সবচেয়ে বড় বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন। টোরি দলের নেতৃত্বের দৌড়ে অন্য কয়েকজন প্রার্থী এ নিয়ে বরিস জনসনের খোলাখুলি সমালোচনা করছেন। প্রার্থীদের মধ্যে প্রকাশ্য টেলিভিশন বিতর্কে জনসনকে অংশ নিতে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন ম্যাট হ্যানকক, মার্ক হার্পারসহ অনেক প্রতিদ্বন্দ্বী। অবশ্য এমন বিতর্ক এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছেন অনেকে। তবে বেফাঁস মন্তব্য বা লাগামহীন রসিকতার জন্য পরিচিত বরিস জনসন নিজের জয়ের সম্ভাবনা ঝুঁকির মুখে ফেলতে চাইছেন না বলেও সমালোচকরা মনে করছেন।