উপসাগরে উত্তেজনা

ট্যাংকারে বিস্ফোরণ :ইরানকে দোষারোপ যুক্তরাজ্যেরও

প্রকাশ | ১৬ জুন ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ওমান উপসাগরে জাপানি ট্যাংকারে অগ্নিকান্ড
ওমান উপসাগরে দুই তেলবাহী ট্যাংকারে বিস্ফোরণের ঘটনায় ইরানকে দোষারোপ করছে যুক্তরাজ্য। এর আগে এ ঘটনায় তেহরানকে দায়ী করে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন। এরপর নিজস্ব গোয়েন্দা তথ্য পর্যালোচনা করে শুক্রবার যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকেও একই রকমের বক্তব্য আসে। সংবাদসূত্র : গার্ডিয়ান, রয়টার্স, ট্রিবিউন সিএনএন ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এটি প্রায় নিশ্চিত, ১৩ জুন ইরানের সামরিক বাহিনী দুই ট্যাংকারে হামলা চালিয়েছে। এর সঙ্গে অন্য কোনো রাষ্ট্র বা পক্ষের জড়িত থাকার কোনো আশঙ্কা নেই। এদিকে, ওই বিস্ফোরণের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ইরানকে দায়ী করার কয়েক মিনিট আগে বৃহস্পতিবার ট্রাম্প ঘোষণা দেন, তার দেশ শিগগিরই ইরানের সঙ্গে পরমাণু আলোচনায় বসবে। তেলবাহী ট্যাংকারে বিস্ফোরণের ঘটনায় জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গেও কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে জাপানি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুলস্নাহ আলি খামেনি ঘোষণা দেন, তার বার্তা পাওয়ার জন্য ট্রাম্প উপযুক্ত বা যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তি নন। ওমান উপসাগরে তেলবাহী দুই ট্যাংকারে বিস্ফোরণের ঘটনায় ইরানকে দায়ী করে ভিডিও প্রমাণ উপস্থাপন করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। ভিডিওতে দেখা গেছে, ইরানি নৌবাহিনীর সদস্যরা জাপানের মালিকানাধীন 'কোকুকা কারেজিয়াস' নামক ট্যাংকার থেকে অবিস্ফোরিত মাইন সরিয়ে নিচ্ছে। বিস্ফোরণের কবলে পড়া দুই ট্যাংকারের একটি এটি। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, হামলাস্থল থেকে আলামত সরানোর চেষ্টার অংশ হিসেবেই এই কাজ করেছে ইরান। বৃহস্পতিবার সকালে ওমান উপসাগরে দুটি তেলবাহী ট্যাংকারে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়। ট্যাংকার দুটির একটি মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী 'ফ্রন্ট অ্যালটেয়ার' এবং অপরটি পানামার পতাকাবাহী 'কোকুকা কারেজিয়াস'। ফ্রন্ট অ্যালটেয়ার নরওয়ের মালিকানাধীন আর কোকুকা জাপানের মালিকানাধীন। বিস্ফোরণের পর দুই ট্যাংকার থেকে ৪৪ জন ক্রুকে উদ্ধার করে ইরানি কর্তৃপক্ষ। বিস্ফোরণের কারণ জানা না গেলেও যুক্তরাষ্ট্র এর জন্য ইরানকে দায়ী করছে। ঘটনার পর চারজন মার্কিন কর্মকর্তা দাবি করেছিলেন, তাদের কাছে ওই হামলার ছবি আছে। ওই কর্মকর্তাদের একজন জানান, ভিডিওটি মার্কিন সামরিক বিমান থেকে ধারণ করা। সেখানে দেখা যায়, একটি ছোট নৌকা জাপানি ট্যাংকারের পাশে এসে দাঁড়ায়। একজন ব্যক্তি দাঁড়িয়ে ট্যাংকার থেকে কিছু সরিয়ে নিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ওই বস্তুটি অবিস্ফোরিত মাইন। যুক্তরাষ্ট্র জানায়, মার্কিন ডেস্ট্রয়ার জাহাজ ও একটি ড্রোন থাকার পরও সেখানে নৌকাটি অবস্থান করে। মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের ধারণা, হামলার প্রমাণ মুছে ফেলতেই সেখানে গিয়েছিল সেটি। আরেকজন মার্কিন কর্মকর্তা দাবি করেন, ঘটনার সময় সেখানে বেশ কটি ইরানি ছোট নৌকা প্রবেশ করেছিল। এক বিবৃতিতে মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ড জানায়, ইউএসএস বেইনব্রিজ কিংবা এর মিশনের ওপর কোনো রকম হস্তক্ষেপ করলে তা মেনে নেয়া হবে না। জাতিসংঘে নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত জোনাথান কোহেন বলেন, এটা এই অঞ্চলে ইরানের সৃষ্ট অস্থিতিশীলতার আরেকটি উদাহরণ। তবে ইরানি মিশন এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। মিশনের মুখপাত্র আলিরেজা মিরইউসেফি বলেন, 'ইরান যুক্তরাষ্ট্রের এই দাবিকে সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করছে। এই হামলার সর্বোচ্চ নিন্দা জানাই আমরা।'