বিতর্কিত প্রত্যর্পণ বিল

ক্ষমা চাইলেন হংকং নেতা ল্যাম

সমালোচনাকে সৎসাহস ও বিনয়ী মনোভাব নিয়ে গ্রহণ করে নেয়ার প্রতিশ্রম্নতিও দিয়েছেন

প্রকাশ | ১৭ জুন ২০১৯, ০০:০০ | আপডেট: ১৭ জুন ২০১৯, ২১:১৫

যাযাদি ডেস্ক
প্রধান নির্বাহী ক্যারি ল্যাম
হংকংয়ে লাখো মানুষের উত্তাল বিক্ষোভের মুখে ক্ষমা চেয়েছেন প্রধান নির্বাহী ক্যারি ল্যাম। এর আগে ল্যাম বিতর্কিত প্রত্যর্পণ বিল স্থগিতের ঘোষণা দিলেও বিক্ষোভকারীরা তা পুরোপুরি বাতিল করা এবং তার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখে। রোববার লাখ লাখ বিক্ষোভকারী কালো পোশাক পরে রাস্তায় নেমে নেতা ক্যারি লামের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করে এবং বিতর্কিত বিলও পুরোপুরি বাতিলের দাবি জানায়। এ পরিস্থিতিতেই এক বিবৃতিতে হংকংয়ের জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন ক্যারি ল্যাম। সরকারের এক মুখপাত্র বলেছেন, বিলটি নিয়ে সরকারের কার্যক্রম সমাজে বিতর্ক এবং বিরোধ সৃষ্টি করেছে। এতে জনমনে হতাশা এবং ক্ষোভ জন্ম নিয়েছে। সংবাদসূত্র : রয়টার্স বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'ল্যাম হংকংয়ের জনগণের কাছে এর জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। সমাজে সমালোচনাকে সৎসাহস ও বিনয়ী মনোভাব নিয়ে গ্রহণ করে নেয়া এবং আরও ভালোভাবে জনগণের সেবা করার প্রতিশ্রম্নতিও দিয়েছেন।' বিচারের জন্য বাসিন্দাদের চীনের মূল ভূখন্ডে পাঠানোর সুযোগ রেখে হংকং সরকারের প্রত্যর্পণ বিল পাসের পরিকল্পনা নিয়ে গত সপ্তাহ থেকে হংকংয়ে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ ও সহিংসতা দেখা দিয়েছে। গণ-আন্দোলনের মুখে হংকং সরকার ওই পরিকল্পনা স্থগিতের ঘোষণা দিলেও প্রতিবাদকারীরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তারা হংকংয়ের ওপর বেইজিংয়ের ক্রমবর্ধমান প্রভাব বিস্তারের চেষ্টায় উদ্বেগ জানিয়েছে। যুক্তরাজ্য ১৯৯৭ সালে চীনের কাছে হংকংকে হস্তান্তর করলেও বেশ কিছু ক্ষেত্রে শহরটির স্বায়ত্তশাসনের প্রতিশ্রম্নতি আদায় করে নেয়। সাবেক এ ব্রিটিশ কলোনির কারণেই চীনকে 'এক দেশ, দুই ব্যবস্থাপনার' নীতিতে চলতে হচ্ছে। অপরাধী প্রত্যর্পণ নিয়ে প্রস্তাবিত যে বিলটির কারণে হংকং রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে, তাতে আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত হংকংয়ের যেকোনো বাসিন্দাকে তাইওয়ান, ম্যাকাউ কিংবা চীনের মূল ভূখন্ডে পাঠানোর সুযোগ রাখা হয়েছে। বেইজিংপন্থি হংকং সরকারের যুক্তি, প্রত্যর্পণের সুযোগ না থাকায় হংকং চীনের অন্যান্য অংশের অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘন রুখতে 'রক্ষাকবচ' হিসেবে হংকংয়ের আদালতকেই মামলা ধরে ধরে প্রত্যর্পণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেয়ার এখতিয়ারও বিলে দেয়া হয়েছে বলে ভাষ্য তাদের। অন্যদিকে, একে ব্যবহার করে চীন হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থি রাজনীতিকদের ওপর দমনপীড়ন চালাতে পারে বলে আশঙ্কা সমালোচকদের। বিরোধীদের আশঙ্কা, বিলটি কার্যকর হলে হংকংয়ের বেইজিংবিরোধী হিসেবে পরিচিতরা কমিউনিস্ট পার্টি নিয়ন্ত্রণাধীন চীনের বিচার ব্যবস্থার জালে আটকা পড়বে। বিলটি নিয়ে আপত্তি জানিয়ে গত সপ্তাহে শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, ধর্মীয় সংগঠনের সদস্য, শিক্ষকসহ লাখো বাসিন্দা হংকংজুড়ে বিক্ষোভ শুরু করে। দুই দিনের মাথায় গত মঙ্গলবার আইন পরিষদের বাইরে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষও হয়। যে কারণে পরদিন বুধবার বিলটি নিয়ে আইন পরিষদে দ্বিতীয় দফা বিতর্কের কথা থাকলেও সরকার তা স্থগিত করতে বাধ্য হয়।