কঠোর গোপনীয়তায় মুরসি সমাহিত

ম নিজ শহরে অনুমতি মেলেনি দাফন হয়েছে কায়রোয় ম তার মৃতু্য ভয়ানক কিন্তু অনুমেয় :টুইট হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ম জালিমের কারাগারে তিনি শহীদ হয়েছেন, ইতিহাস ক্ষমা করবে না তাদের :এরদোয়ান

প্রকাশ | ১৯ জুন ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
মোহামেদ মুরসি -ফাইল ছবি
সামরিক অভু্যত্থানে ক্ষমতাচু্যত মিসরের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুরসিকে মঙ্গলবার ভোরে কঠোর গোপনীয়তায় রাজধানী কায়রোতে দাফন করা হয়েছে। এর কয়েক ঘণ্টা আগে পরিবারের পক্ষ থেকে সারকিয়া প্রদেশের নিজ শহরে তার দাফনের আবেদন জানালে তা নাকচ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। তবে কায়রোর নসর এলাকায় গোপনীয় ওই দাফনে মুরসির পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে, মুরসির মৃতু্যকে 'ভয়ানক কিন্তু অনুমেয়' হিসেবে উলেস্নখ করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাবিস্নউ)। মুরসির মৃতু্যর খবরের পরপরই এক টুইট বার্তায় এ মন্তব্য করেন সংস্থাটির মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক পরিচালক সারাহ লি উইটসন। ২০১৩ সালে ক্ষমতাচু্যত হওয়ার পর থেকে মুরসি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে ছিলেন। সংবাদসূত্র : বিবিসি, এএফপি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, কারা হাসপাতালে বাবাকে গোসল করিয়ে দেন পুত্র আহমেদ মুরসি। এরপর কারা হাসপাতালে জানাজা শেষে চিরনিদ্রায় শায়িত হন মিসরের ইতিহাসের প্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফাঁস হওয়া খবরে বলা হচ্ছে, মুরসির ভাই, স্ত্রী, পুত্র এবং দুইজন আইনজীবী তার জানাজায় অংশ নেন। গত সোমবার মিসরের একটি আদালতের এজলাসে মৃতু্যর কোলে ঢলে পড়েন মোহামেদ মুরসি। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়, 'আদালতের এজলাসে হঠাৎ পড়ে গিয়ে' তার মৃতু্য হয়েছে। গত ৭ মে তিনি আদালতে বলেছিলেন, তার জীবন হুমকির মুখে। আদালতে শুনানির সময় মুরসি দীর্ঘ সময় বক্তব্য রাখছিলেন। প্রায় ২০ মিনিট বক্তব্য রাখার পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। মিসরে বর্তমানে নিষিদ্ধ মুসলিম ব্রাদারহুডের শীর্ষ নেতা মুরসি ২০১২ সালে দেশটির প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার শাসনামলে দমনপীড়ন ও অর্থনৈতিক টালমাটাল পরিস্থিতি নিয়ে অসন্তোষ দানা বাঁধে। মুরসির শপথ গ্রহণের বছরপূর্তিতে মিসরজুড়ে তীব্র বিক্ষোভ দেখা দেয়। এরপর সেনাবাহিনী মিসরের সংবিধান স্থগিত করে মুরসিকে ক্ষমতাচু্যত করে। সাবেক সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি পরের বছর ক্ষমতায় বসেন। মুরসিকে ক্ষমতাচু্যত করার পর সেনাবাহিনীর চালানো দমনাভিযানে কয়েকশ মানুষের মৃতু্য হয়; গ্রেপ্তার করা হয় তার লাখ লাখ সমর্থক ও অন্য আন্দোলনকারীদের। ফিলিস্তিনি গেরিলা দল হামাসের সঙ্গে যোগসূত্র থাকার সন্দেহে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে সোমবার কায়রোর আদালতে মুরসির শুনানি চলছিল বলে জানিয়েছে মিসরের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন। এদিকে, মুরসির মৃতু্যতে শোক প্রকাশ করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়ে্যপ এরদোয়ান। সোমবার ইস্তাম্বুল থেকে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে তিনি বলেন, জালিমের কারাগারে শহীদ হয়েছেন মুরসি। কারাগারে নিক্ষেপ করে যারা তাকে মৃতু্যর দিকে ঠেলে দিয়েছে, সেই জালিমদের ইতিহাস কখনো ক্ষমা করবে না। এরদোয়ান বলেন, 'আমাদের চোখে মুরসি একজন শহীদ; যিনি তার বিশ্বাসের জন্য জীবন দিয়েছেন। ইতিহাস সেই একনায়ককে (জেনারেল সিসি) ক্ষমা করবে না, যিনি নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে কারাগারে নিক্ষেপ করেছেন, মৃতু্যর আগ পর্যন্ত তাকে নির্যাতন করেছে এবং মৃতু্যর দিকে ঠেলে দিয়েছে। তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যার যাবতীয় চক্রান্ত করা হয়েছিল। আদালতে নিজের ওপর জুলুমের প্রতিবাদ করেছেন তিনি।'