উত্তর কোরিয়া সফরে শি জিনপিং

পরমাণু ও বাণিজ্যিক বিষয়ে আলোচনা হতে পারে পিয়ংইয়ং-ওয়াশিংটন সম্পর্কের উত্থান-পতন নিয়েও আলোচনা হতে পারে ত্রাণ পাঠাচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া

প্রকাশ | ২১ জুন ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
কিম জং-উন ও শি জিনপিং -ফাইল ছবি
চীনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার ছয় বছর পর শি জিনপিং উত্তর কোরিয়ায় প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর শুরু করেছেন। দুইদিনের সফরে বৃহস্পতিবার তিনি পিয়ংইয়ং পৌঁছান। উত্তরের শীর্ষ নেতা কিম জং-উনের সঙ্গে বৃহস্পতিবারই তার রুদ্ধদ্বার বৈঠকে মিলিত হওয়ার কথা। বেইজিং পিয়ংইয়ংয়ের প্রধান ব্যবসায়িক অংশীদার হলেও ১৪ বছরের মধ্যে এবারই প্রথম চীনের কোনো প্রেসিডেন্ট উত্তর কোরিয়ায় গেলেন। সংবাদসূত্র : বিবিসি সফরে জিনপিং নিষেধাজ্ঞা জর্জরিত উত্তর কোরিয়ার জন্য বেশকিছু অর্থনৈতিক সহযোগিতা প্রকল্প নিয়ে গেছেন বলেও ধারণা করা হচ্ছে। সফরে পরমাণু প্রকল্প ও বাণিজ্যিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে। জাপানে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের এক সপ্তাহ আগে চীনা প্রেসিডেন্টের এ সফরে পিয়ংইয়ং-ওয়াশিংটন সম্পর্কের উত্থান-পতন নিয়েও আলোচনা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। জি-২০ সম্মেলনে জিনপিংয়ের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতায় আসার পর চার বার চীন সফর করেছেন কিম। চলতি বছরের জানুয়ারিতে বেইজিং সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের ৭০তম বার্ষিকী উপলক্ষে চীনা প্রেসিডেন্টকে উত্তর কোরিয়া সফরের আমন্ত্রণ জানান কিম। উত্তর কোরিয়ার প্রধান বাণিজ্য সহযোগী চীন। অন্যদিকে, ২০০৫ সালে চীনের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হু জিনতাওয়ের সফরকালে উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতায় ছিলেন কিমের বাবা কিম জং-ইল। উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কার্যক্রমের কারণে দেশটির ওপর ধারাবাহিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জাতিসংঘ। গত কয়েক বছরে এই নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করা হয়েছে। বেইজিং এসব নিষেধাজ্ঞায় সমর্থন দিলেও জিনপিংয়ের এবারের সফর দুই দেশের সম্পর্কের উন্নতিতে ভূমিকা রাখবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। উত্তর কোরিয়ায় চীনা প্রেসিডেন্টের এ সফর 'বেইজিং-পিয়ংইয়ং সম্পর্কে নতুন অধ্যায় যোগ করবে' বলেও মন্তব্য করেছে চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন 'সিসিটিভি'। উত্তরে ত্রাণ পাঠাচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া উত্তর কোরিয়ায় চলমান তীব্র খাদ্য সংকটে পাশে দাঁড়িয়ে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। দেশটিতে ৫০ হাজার টন চাল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা, যা বিগত এক দশকে প্রথম। বিগত প্রায় চার দশকের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র খরার কবলে পড়ার কথা জানিয়েছে উত্তর কোরিয়া। এই বছরের প্রথম পাঁচ মাসে দেশটিতে মাত্র ৫৪ দশমিক চার মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ১৯৮২ সালের পর এটাই দেশটিতে সর্বনিম্ন বৃষ্টিপাতের রেকর্ড। জাতিসংঘের এক যৌথ মূল্যায়নে বলা হয়, এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ফলনের কারণে উত্তর কোরিয়ার প্রায় এক কোটি মানুষ মারাত্মক খাদ্য সংকটে পড়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার একত্রীকরণ মন্ত্রণালয় জানায়, যথাসম্ভব দ্রম্নত সময়ে এই ত্রাণ সরবরাহ করা হবে। এই খাবার তত্ত্বাবধানে থাকবে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য প্রকল্প। একত্রীকরণ মন্ত্রী কিম ইয়ুন চুল বলেন, সরকরা উত্তর কোরীয় জনগণের দুর্দশা উপেক্ষা করতে পারে না। এর আগে, ২০১০ সালে উত্তর কোরিয়ায় পাঁচ হাজার টন চাল সহায়তা দিয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়া। ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে ভয়ানক দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ে উত্তর কোরিয়া।