২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

একাধিক চ্যালেঞ্জ সামনে : ট্রাম্প কতদূর যেতে পারবেন?

প্রকাশ | ২৪ জুন ২০১৯, ০০:০০ | আপডেট: ২৪ জুন ২০১৯, ১৩:২০

যাযাদি ডেস্ক
ফ্লোরিডার বিশাল জনসভায় ডোনাল্ড ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রায় ১৭ মাস আগে গত ১৮ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে পুনর্র্নির্বাচনের জন্য প্রচার শুরু করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এদিন বিরোধীদের তুমুল সমালোচনা করে মার্কিন স্বার্থে নিজের নীতির পক্ষে সওয়াল করেছেন তিনি। ২০১৬ সালে মূলমন্ত্র ছিল 'মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন'। প্রথম কার্যকালে সেই লক্ষ্য পূরণে নিজেকে সফল হিসেবে তুলে ধরেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাই ২০২০ সালে পুনর্র্নির্বাচনের প্রচার অভিযানের বুলি রেখেছেন 'কিপ আমেরিকা গ্রেট'। সেদিন ফ্লোরিডার বিশাল জনসভায় আনুষ্ঠানিকভাবে সেই অভিযান শুরু করেন ট্রাম্প। অরলান্ডো শহরে প্রায় ২০ হাজার সমর্থকের সামনে তিনি প্রায় ৮০ মিনিট ধরে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন। ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তার প্রায় দেড় বছর আগে ট্রাম্প কেন তার পুনর্র্নির্বাচনের জন্য প্রচার শুরু করলেন? প্রথম কার্যকালের শুরু থেকেই তিনি ঘরে-বাইরে প্রবল চাপের মধ্যে রয়েছেন। সমালোচকদের বারবার ভুল প্রমাণ করে এখনো তিনি ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখতে পেরেছেন। নিজেকে রাজনীতি জগতের 'বাইরের লোক' হিসেবে তুলে ধরে তিনি সমর্থকদের আস্থা মোটামুটি অটুট রাখতে পেরেছেন। কিন্তু বিভিন্ন জনমত জরিপ অনুযায়ী, সার্বিকভাবে দেশের মানুষের সমর্থন তার পক্ষে নেই। অন্যদিকে, বিরোধী ডেমোক্রেটিক দলের ২০ জনের বেশি নেতা ২০২০ সালের নির্বাচনে তাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এরই মধ্যে জনপ্রিয়তার বিচারে তাকে পেছনে ফেলে এগিয়ে রয়েছেন। তাই আর সময় নষ্ট না করে আসরে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প। প্রথম নির্বাচনী জনসভায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দ্বিতীয় কার্যকালের জন্য নতুন কোনো নীতি বা প্রতিশ্রম্নতির উলেস্নখ করেননি। মানুষকে শুধু তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের সম্পর্কে সাবধান করে দিয়েছেন। ট্রাম্প দাবি করেছেন, তারা সবাই দেশে ঢালাও অভিবাসনের সমর্থক। তিনি বলেন, বেআইনি অনুপ্রবেশ যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যবিত্ত শ্রেণির অবনতির জন্য দায়ী। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চুক্তিও দেশের স্বার্থ খর্ব করছে বলে তিনি দাবি করেন। ট্রাম্প এ প্রসঙ্গে 'কিপ আমেরিকা গ্রেট' স্স্নোগান তুলে ধরেন। তার আমলেই ক্যান্সার ও এইডসের ওষুধ আবিষ্কার হবে এবং মঙ্গলগ্রহে মার্কিন মহাকাশচারী পাঠানো হবে বলে ঘোষণা করেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দুই বছরের বেশি সময় ধরে হোয়াইট হাউসে কাটানো সত্ত্বেও ট্রাম্প এখনো ওয়াশিংটনের 'ইনসাইডার' বা ভেতরের লোকজন ও কলুষিত রাজনৈতিক কাঠামোর সমালোচনা করে চলেছেন। সেই সঙ্গে 'ফেক নিউজ মিডিয়া' বা সংবাদ মাধ্যমে নিজের সমালোচকদের বিরুদ্ধে বিষাদ্গারও চালিয়ে যাচ্ছেন ট্রাম্প। ১৮ জুন জনসভায়ও তার সমর্থকরা 'সিএনএন'র বিরুদ্ধে স্স্নোগান দিয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, আগামী ১৭ মাসে একাধিক চ্যালেঞ্জ মার্কিন প্রেসিডেন্টের পুনর্র্নির্বাচনের পথে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। বিভিন্ন তদন্তের মুখে এখনো পর্যন্ত রেহাই পেয়ে এলেও বিরোধী ডেমোক্রেটিক পার্টি ট্রাম্পকে অপদস্থ করার সুযোগ খুঁজছে। দলের একাংশ প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচু্যত করার প্রক্রিয়া চালু করার পক্ষে। রিপাবলিকান দল সার্বিকভাবে তাকে সমর্থন করে এলেও প্রশাসন থেকে একের পর এক মন্ত্রী ও কর্মকর্তার বিদায় প্রেসিডেন্টের অবস্থান বেশ কিছুটা দুর্বল করে দিয়েছে। এ অবস্থায় তিনি কতদূর যেতে পারবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দেশটিতে। সংবাদসূত্র : ডিপিএ, এএফপি