অভিবাসীবিরোধী অভিযান শিগগিরই

ম বছরের পর বছর ধরে যারা অবৈধভাবে এসেছে তাদের সরাতে চাই : ট্রাম্প ম অপরাধের সঙ্গে জড়িত এমন লোকদের গ্রেপ্তারেই নজর থাকবে বেশি

প্রকাশ | ০৭ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
যাযাদি ডেস্ক যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকা অবৈধ অভিবাসীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে শিগগিরই অভিযান শুরু হবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অন্যদিকে, অবৈধদের ধরতে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা এলে, তাদের জন্য 'প্রস্তুত' থাকার আশ্বাস দিয়েছে অভিবাসন নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো। অভিবাসন বিষয়ে কট্টর অবস্থানের জন্য পরিচিত ট্রাম্পের প্রেসিডেন্টকাল এবং তার ২০২০ সালের নির্বাচনী প্রচারণাতেও অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযানের বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে। সংবাদসূত্র : রয়টার্স ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকা অবৈধদের তাড়াতে গত মাসেই অভিযানের পরিকল্পনা করলেও দিনক্ষণ ফাঁস হয়ে যাওয়ায় পর তা স্থগিত করে। ৪ জুলাইয়ের পর ওই অভিযান শুরু হচ্ছে বলে সোমবার ট্রাম্প জানিয়েছিলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট শুক্রবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের বলেন, 'শিগগিরই এটা শুরু হবে, আমি একে অভিযান বলতে চাই না। বছরের পর বছর ধরে যারা অবৈধভাবে এসেছে, আমরা তাদের সরাতে চাই।' ২০১৬ সালের নির্বাচন সামনে রেখে প্রচারণার সময় অবৈধ অভিবাসন বন্ধ করাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে এজেন্ডার একটি মুখ্য অংশ বানিয়েছিলেন এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট। এরই জের ধরে অভিবাসীদের অভিযোগ আমলে না নিয়ে তাদের বরং ফেরত পাঠিয়ে দেয়াই সমীচীন মনে করছেন ট্রাম্প। টুইট বার্তায় ট্রাম্প বলেন, 'তাৎক্ষণিকভাবে তৈরি করা অভিবাসনপ্রত্যাশী আটককেন্দ্রগুলোর অবস্থা দেখে অবৈধ অভিবাসীরা যদি অসুখী হয়, সোজা বলে দিন, তাদের আসার প্রয়োজন নেই। ব্যস, সব সমস্যার সমাধান হয়ে গেল!' তিনি এমনটা বললেও গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) কয়েক মাসের মধ্যে প্রবেশ করা কাগজপত্রহীন অভিবাসীদের লক্ষ্য করে অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছিল। দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে চাওয়া মধ্য আমেরিকান দেশগুলোর বাসিন্দাদের নিরুৎসাহিত করতেই এই পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছিল তারা। এক বিবৃতিতে আইসিই জানায়, অপরাধের সঙ্গে জড়িত এমন লোকদের গ্রেপ্তারেই তাদের নজর থাকবে; তবে কোনো অভিবাসী যদি মার্কিন কোনো আইন লঙ্ঘন করে, তবে তাকেও গ্রেপ্তার করা হবে। অভিবাসীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো চলতি সপ্তাহে আইসিইর আগের অভিযানে কাদের বেশি গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সে বিষয়ক সরকারি নথি প্রকাশ করেছে। এতে দেখা গেছে, কর্মকর্তারা কাগজপত্রহীন অভিবাসীদের গ্রেপ্তারেই বেশ আগ্রহী। অবৈধ অভিবাসী ধরতে যখন-তখন অভিযানের হুমকি দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর বলে অভিযোগ করেছে অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো। অভিযানের হুমকির কারণে অনেক প্রাপ্তবয়স্কই কাজে যেতে চান না এবং শিশুদের স্কুলে অনুপস্থিতির হারও বাড়ে বলে জানিয়েছে তারা। অভিবাসীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সোমোস উন পুয়েবলোউনিদোর সংগঠন এলসা লোপেজ বলেন, 'ট্রাম্পের ঘোষণার পরপর নয়, আমাদের সবসময়ই প্রস্তুত থাকতে হবে; কেননা প্রতিদিনই গ্রেপ্তার হচ্ছে।' নিউ মেক্সিকোভিত্তিক এই সংগঠনটি অভিবাসীদের অধিকার বিষয়ে শিক্ষা দেয়ার পাশাপাশি তাদের মধ্যে ফোন যোগাযোগ তৈরিতে কাজ করে; যেন আইসিই কোনো এলাকায় এলে তাৎক্ষণিকভাবে অন্যরা সতর্ক হতে পারে। গত মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তে ১৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীর চাপ দেখার পর ট্রাম্প প্রশাসন অবৈধ অভিবাসীবিরোধী এই অভিযান চালানোর হুমকি দেয়। যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে চলমান অভিবাসন-সংকট নিরসনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনায় মুখর হয়েছেন ডেমোক্রেট ও মানবাধিকারকর্মীরা। এরই মধ্যে গত বুধবার ট্রাম্প এক টুইট বার্তায় তারা বলেছেন, আটককেন্দ্রগুলোর অবস্থা নিয়ে যে অভিবাসনপ্রত্যাশীরা অসুখী, তাদের বলে দেয়া উচিত- 'তোমরা এসো না'। শুক্রবার অভিবাসনপ্রত্যাশী আটককেন্দ্রগুলোর অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্পের অবস্থান নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সীমান্ত চৌকির পক্ষ থেকে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, রিও গ্র্যান্ড এলাকার সীমান্ত চৌকিতে ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৯ সালের মে পর্যন্ত মোট দুই লাখ ২৩ হাজার ২৬৩ জনকে আটক করা হয়েছে, যা গত সময়ের চেয়ে ১২৪ শতাংশ বেশি।